কলকাতা, 11 ডিসেম্বর: তাঁর নাম সন্দীপ ঘোষ। চার মাস আগে আরজি কর হাসপাতালে হওয়া নির্যাতনের ঘটনার পর থেকে তাঁকে চেনেন না এমন মানুষের সন্ধান পাওয়া কার্যত অসম্ভব। তাঁর নানা 'অপকীর্তির' কথাও সকলেই জানে। এখন অভিযোগ উঠেছে, সন্দীপ ঘোষের বেলেঘাটার বাড়ি নিয়ে।
শুধু তাই নয়, অভিযোগকারীর দাবি, সন্দীপের বাড়ির বেআইনি অংশ বাঁচানোর চেষ্টা করছে পুরনিগম। যদিও সেই অভিযোগ খারিজ করে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দাবি, তিনি সন্দীপ ঘোষকে চেনেন না। অতএব তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন দাবি ভিত্তিহীন। কোনও পদ্ধতিগত ত্রুটির জন্য দেরি হয়ে থাকতে পারে!
পুরনিগমের নিয়ম অনুযায়ী, বাড়ির উচ্চতা 12.5 মিটার হতে পারে । অভিযোগ, সেই নিয়ম ভেঙেছেন সন্দীপ। তাছাড়া কারও অনুমতি না নিয়ে ছাদেও বেশ কিছু নির্মাণ করেছেন। আইন ও পরিকাঠামোর তোয়াক্কা না করেই বাড়ির পাশে ক্যারেজ ওয়ে করা হয়েছে। এমনকী গ্যারেজকে ঘর হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে ।
সন্দীপ ঘোষের বাড়ির বেআইনি অংশ নিয়ে অংশুমান সরকার নামে এক ব্যক্তি কলকাতা কর্পোরেশনে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকমাস আগে। তিনি আবার পুরনিগমের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার। বেআইনি অংশ ভাঙার জন্য আবেদন জানান তিনি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কর্পোরেশন যাতে কিছু না করে তার জন্য সন্দীপ ঘোষ আদালতে গিয়ে স্টে অর্ডার নেন। 6 মাসের মধ্যে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না বলে জানায় কলকাতা হাইকোর্ট ।
পাশাপাশি আরও একটি নির্দেশ দেয় আদালত। পুরনিগমের বিল্ডিং বিভাগকে বলা হয়, তারা যেন দু'পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালতে জমা দেয়। সেই ভিত্তিতেই পরবর্তী শুনানি করবে আদালত। আগামী বছরের শুরুতেই সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা। সেই মতো বুধবার দু'পক্ষকে ডেকে শুনানি করা হয়। এখানেই অংশুমানের দাবি, তিনি যে অভিযোগ করেছেন তা নিয়ে পুরনিগম একেবারেই তৎপর নয়। তাঁরা সন্দীপ ঘোষের বেআইনি নির্মাণকে রক্ষা করতে চাইছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে বলে শুধু নিয়ম রক্ষার জন্য পুরনিগম শুনানি করছে। কিন্তু আসলে শুনানির নামে প্রহসন হচ্ছে ।
অংশুমান সরকারের আরও অভিযোগ, এমন ঘটনার ক্ষেত্রে সমস্ত কাগজ হিয়ারিং টেবিলে থাকার কথা। এমনকী কালার ম্যাপ এবং কালার গ্রিড করে দেখানোর কথা কোন অংশটি বৈধ এবং কোনটি অবৈধ। তার কোনও কিছুই হচ্ছে না। কার্যত বিচারের নামে এখানে প্রহসন হচ্ছে। কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে বেরিয়ে সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী সুমিতাভ চক্রবর্তীর দাবি, বাড়ি নিয়ে ঠিক কী কী অভিযোগ আছে তা তাঁরা জানতেন না। অভিযোগ পত্রও তাদের হাতে দেওয়া হয়নি।