ETV Bharat / state

শর্তের কড়াকড়ি নয়, আবাস ও কৃষির ক্ষতিপূরণে প্রশাসনের মানবিক মুখই চান মমতা

শর্তের কড়াকড়ি নয়, আবাস যোজনা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কৃষির ক্ষতিপূরণে প্রশাসনের মানবিক মুখই চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

ETV BHARAT
আবাস ও কৃষির ক্ষতিপূরণে প্রশাসনের মানবিক মুখই চান মমতা (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 29, 2024, 8:03 PM IST

কলকাতা, 29 অক্টোবর: আবাস এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে শর্তের কড়াকড়ি চাইছেন না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এই নিয়ে আজ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করে একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ৷

প্রসঙ্গত, আগামী ডিসেম্বর মাস থেকেই বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি দেওয়ার প্রক্রিয়ার শুরু করবে রাজ্য সরকার । এদিন তা নিয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী । একইসঙ্গে এদিন ঘূর্ণিঝড় দানায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ নিয়েও রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি । সেখানেও গরিব কৃষকরা যাতে বঞ্চিত না হন, সেই বিষয়েটিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী । কয়েকটি জায়গা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ রয়েছে বিমার লোক ঠিকমতো যাচ্ছেন না ৷ তাও সঠিকভাবে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ।

ETV BHARAT
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (নিজস্ব চিত্র)

জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী দুই মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, শর্তের কড়াকড়ির থেকেও বিষয়গুলিকে মানবিকতা দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে । ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বা ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে থাকাই নবান্নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার । একইভাবে আবাসের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, "হয়তো কারও ক্ষেত্রে দুই চাকার গাড়ি রয়েছে অথবা বাড়িতে একটি ইটের দেওয়াল রয়েছে । কিন্তু কোনও পাকা বাড়ি নেই । বাড়ির ইনকামও সরকারি যে সীমা তার মধ্যেই । এক্ষেত্রে গোটা বিষয়টিকে মানবিকভাবেই দেখতে হবে ।" আজ নবান্নের এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক থেকে এমনই সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী ।

প্রসঙ্গত, এই দিনের এই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, ছিলেন পঞ্চায়েত এবং কৃষি দফতরের প্রধান সচিবেরাও । এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, সমস্ত ক্ষতিগ্রস্তই ক্ষতিপূরণ পাবেন । একজন কৃষকও যেন বঞ্চিত না হয় । একইসঙ্গে, আবাসের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, গৃহহীন মানুষকে বাড়ি দেওয়াই এই সরকারের অগ্রাধিকার ।

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠক নিয়ে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আজ মুখ্যমন্ত্রী আমাদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন ৷ এই যে ডিভিসি-র জল ছাড়ার সময় বন্যা হয়েছে, তারপরে দানার জেরে হওয়া বৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতি খতিয়ে দেখতে ইন্সুরেন্স কোম্পানি দায়িত্ব পেয়েছে ৷ তবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট আছে, বিমার যথেষ্ট লোক কাজ করছেন না । আমরা একটা স্টেটাস দিয়েছি, এতগুলো লোক কাজ করছেন । কিন্তু কিছু জায়গায় কম লোক থাকতে পারেন, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলির ইনচার্জকে আমরা বলে দিয়েছি, কোনও জায়গায় যেন লোক কম থাকার জন্য কৃষকরা বঞ্চিত না হন ।"

এদিন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, "একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের মতো করে আমরা কোনও প্রকল্প করি না । আমাদের স্কিমের অভিমুখ হচ্ছে মানবিক । সেখানে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা বিচার করে নিয়ে মানুষ যাতে ক্ষতিপূরণ পায় সেটা দেখতে হবে । যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে যেন পয়সাটা পায় সেটা দেখতে হবে ।"

প্রসঙ্গত, ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে এবং পরবর্তীতে দানার কারণে কৃষিক্ষেত্রে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাতে গতকাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মোট 9 লক্ষ 3 হাজার 843 জন কৃষক । এর মধ্যে ঝাড়গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা 34,934, হুগলিতে 75 হাজার 245, বাঁকুড়ায় 2 লক্ষ 10 হাজার 559, পূর্ব মেদিনীপুরে 1 লক্ষ 23 হাজার, হাওড়ায় 1 হাজার 795, পূর্ব বর্ধমানে 1 লক্ষ 44 হাজার 450, দক্ষিণ 24 পরগনায় 85 হাজার 625, উত্তর 24 পরগনায় 15 হাজার 960, বীরভূমে 26 হাজার 975।

কলকাতা, 29 অক্টোবর: আবাস এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে শর্তের কড়াকড়ি চাইছেন না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এই নিয়ে আজ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করে একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ৷

প্রসঙ্গত, আগামী ডিসেম্বর মাস থেকেই বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি দেওয়ার প্রক্রিয়ার শুরু করবে রাজ্য সরকার । এদিন তা নিয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী । একইসঙ্গে এদিন ঘূর্ণিঝড় দানায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ নিয়েও রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি । সেখানেও গরিব কৃষকরা যাতে বঞ্চিত না হন, সেই বিষয়েটিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী । কয়েকটি জায়গা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ রয়েছে বিমার লোক ঠিকমতো যাচ্ছেন না ৷ তাও সঠিকভাবে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ।

ETV BHARAT
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (নিজস্ব চিত্র)

জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী দুই মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, শর্তের কড়াকড়ির থেকেও বিষয়গুলিকে মানবিকতা দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে । ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বা ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে থাকাই নবান্নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার । একইভাবে আবাসের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, "হয়তো কারও ক্ষেত্রে দুই চাকার গাড়ি রয়েছে অথবা বাড়িতে একটি ইটের দেওয়াল রয়েছে । কিন্তু কোনও পাকা বাড়ি নেই । বাড়ির ইনকামও সরকারি যে সীমা তার মধ্যেই । এক্ষেত্রে গোটা বিষয়টিকে মানবিকভাবেই দেখতে হবে ।" আজ নবান্নের এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক থেকে এমনই সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী ।

প্রসঙ্গত, এই দিনের এই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, ছিলেন পঞ্চায়েত এবং কৃষি দফতরের প্রধান সচিবেরাও । এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, সমস্ত ক্ষতিগ্রস্তই ক্ষতিপূরণ পাবেন । একজন কৃষকও যেন বঞ্চিত না হয় । একইসঙ্গে, আবাসের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, গৃহহীন মানুষকে বাড়ি দেওয়াই এই সরকারের অগ্রাধিকার ।

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠক নিয়ে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আজ মুখ্যমন্ত্রী আমাদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন ৷ এই যে ডিভিসি-র জল ছাড়ার সময় বন্যা হয়েছে, তারপরে দানার জেরে হওয়া বৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতি খতিয়ে দেখতে ইন্সুরেন্স কোম্পানি দায়িত্ব পেয়েছে ৷ তবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট আছে, বিমার যথেষ্ট লোক কাজ করছেন না । আমরা একটা স্টেটাস দিয়েছি, এতগুলো লোক কাজ করছেন । কিন্তু কিছু জায়গায় কম লোক থাকতে পারেন, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলির ইনচার্জকে আমরা বলে দিয়েছি, কোনও জায়গায় যেন লোক কম থাকার জন্য কৃষকরা বঞ্চিত না হন ।"

এদিন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, "একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের মতো করে আমরা কোনও প্রকল্প করি না । আমাদের স্কিমের অভিমুখ হচ্ছে মানবিক । সেখানে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা বিচার করে নিয়ে মানুষ যাতে ক্ষতিপূরণ পায় সেটা দেখতে হবে । যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে যেন পয়সাটা পায় সেটা দেখতে হবে ।"

প্রসঙ্গত, ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে এবং পরবর্তীতে দানার কারণে কৃষিক্ষেত্রে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাতে গতকাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মোট 9 লক্ষ 3 হাজার 843 জন কৃষক । এর মধ্যে ঝাড়গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা 34,934, হুগলিতে 75 হাজার 245, বাঁকুড়ায় 2 লক্ষ 10 হাজার 559, পূর্ব মেদিনীপুরে 1 লক্ষ 23 হাজার, হাওড়ায় 1 হাজার 795, পূর্ব বর্ধমানে 1 লক্ষ 44 হাজার 450, দক্ষিণ 24 পরগনায় 85 হাজার 625, উত্তর 24 পরগনায় 15 হাজার 960, বীরভূমে 26 হাজার 975।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.