কুলটি, 27 এপ্রিল: ফের ভারতরত্ন বিতর্ক উস্কে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার ভারতরত্ন পাওয়া উচিত ছিল বলে শনিবার তিনি দাবি করেছেন ৷ একই সঙ্গে উল্লেখ করেছেন অমিতাভ বচ্চনের নামও ৷ ভারতীয় সিনে দুনিয়ার কিংবদন্তি এই অভিনেতাকেও ভারতরত্ন দেওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন ৷
এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের কুলটিতে নির্বাচনী জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ সেখানে তিনি বলেন, ‘‘এখানকার প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা ৷ যিনি সারা দেশে একটা নাম ৷ যাঁকে সবাই সম্মান করে ৷ যাঁর ভারতরত্ন পাওয়া উচিত ছিল ৷ ওঁর এবং অমিতাভ বচ্চনের ৷’’ এই নিয়ে তিনি তোপ দাগেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ৷ মমতা বলেন, ‘‘আমি এখনও জোর গলায় বলি ৷ তাঁদের কোনোদিন এই সরকার সম্মান দেয়নি ৷ কিন্তু আমি সম্মান দিয়ে বাংলায় নিয়ে এসেছিলাম ৷’’
উল্লেখ্য, শত্রুঘ্ন সিনহা রাজনীতির ময়দানে প্রবেশ করেন বিজেপির হয়ে ৷ তিনি 1996 থেকে 2008 সাল পর্যন্ত রাজ্যসভায় সাংসদ ছিলেন ৷ সেই সময় তিনি অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকারে মন্ত্রীও ছিলেন ৷ 2009 সালে তিনি প্রথম লোকসভার ভোটে লড়েন ৷ বিহারের পটনা সাহিব থেকে জিতে সাংসদ হন ৷ 2014 সালেও তিনি জয়ী হন ৷ তবে 2019 সালে তাঁকে প্রার্থী করেনি বিজেপি ৷
এর পর থেকে ক্রমশ বিজেপির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয় ৷ পরে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন ৷ পরে আসানসোল লোকসভা আসনে উপ-নির্বাচনে জিতে সাংসদ হন ৷ এবারও তাঁকেই প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ সেই প্রসঙ্গ টেনেই শত্রুঘ্নকে সম্মান দেওয়ার কথা বলেছেন মমতা ৷
অন্যদিকে অমিতাভ বচ্চনকে ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি আগেও তুলেছেন মমতা ৷ 2022 সালে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে এই প্রসঙ্গ তুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ৷ বলেছিলেন, "আমি দাবি তুলছি, অমিতাভজিকে ভারতরত্ন দেওয়া উচিত । যদিও অফিসিয়ালি নয়, তবু আমরা বাংলা থেকে আওয়াজ তুলব, ভারতরত্ন অমিতাভজি । আমি মনে করি, তাঁকে ভারতরত্ন দেওয়া উচিত । গোটা দেশে এমন আইকন আর পাওয়া যাবে না । দীর্ঘদিন ধরে ফিল্মে কাজ করছেন । তিনি মানুষ হিসেবেও খুব বড় । তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, তিনি এসেছেন । এতটা সময় তিনি আমাদের দিয়েছেন ।"
তার পর পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় দেড় বছর ৷ চলতি বছরের গোড়ায় পাঁচজনকে ভারতরত্ন দেওয়ার ঘোষণা করে কেন্দ্রের মোদি সরকার ৷ কর্পূরি ঠাকুর, দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরি চরণ সিং ও নরসিমা রাও এবং এস স্বামীনাথনকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়া হয়েছে ৷ প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবাণীকেও দেওয়া হয়েছে ভারতরত্ন ৷ কিন্তু অমিতাভ বচ্চনকে ভারতরত্ন দেওয়ার বিষয়টি এবার বিবেচনা করেনি কেন্দ্র ৷
এছাড়া কেন্দ্রের তরফে যখন পাঁচজনকে দেশের এই সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়, তখনই অভিযোগ ওঠে যে ভারতরত্ন নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি সরকার ৷ এ দিন কার্যত সেই অভিযোগই আরও একবার তুলে ধরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
আরও পড়ুন: