গঙ্গাসাগর, 6 জানুয়ারি: বাংলাদেশে আটক থাকাকালীন ভারতের কয়েকজন মৎস্যজীবীকে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয়েছিল । সোমবার বাংলাদেশ থেকে দেশে ফেরা 95 জন মৎস্যজীবীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর এমনই অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সোমবার সাগরদ্বীপে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী । বন্দিদশা কাটিয়ে ঘরে ফেরার সময় তাঁদের নতুন জামাকাপড় দেয় রাজ্য । দেওয়া হয় 10 হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য ।
রবিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় করা হয়েছে । রবিবার দুপুর 12টা নাগাদ বঙ্গোপসাগরের উপর আন্তর্জাতিক জলসীমায় দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় হয় । ভারত-বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয় বন্দি মৎস্যজীবীদের । সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগরে গিয়ে মুক্তি পাওয়া ভারতীয় মৎস্যজীবীদের স্বাগত জানান । তাঁদের সঙ্গে কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বাংলাদেশের জেলে বেশ কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে ।" প্রথমে মৎস্যজীবীরা বিষয়টি বলতে চাননি । পরে খুঁড়িয়ে হাঁটছেন দেখে তাঁদের প্রশ্ন করেন মমতা । তাতেই মৎস্যজীবীরা তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁদের কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছিল । এর বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশের বন্দি মৎস্যজীবীদের এ রাজ্যে কিন্তু কোনওভাবে কোনও অত্যাচার করা হয়নি । কিন্তু দুই দেশের সম্পর্ক ভালো থাকা সত্ত্বেও আমাদের মৎস্যজীবীদের মারধর করা হল । এটা ঠিক নয় ।" মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "95 জন মৎস্যজীবী বাংলাদেশের জেলে ছিলেন । অনেক চেষ্টা করে তাঁদের ফেরত নিয়ে এসেছি । আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতাম । মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি খুব করেছেন ।" এজন্য স্থানীয় বিধায়ক থেকে জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকেও ধন্যবাদ জানান তিনি ।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে 95 জন মৎস্যজীবী তাঁদের 6টি ট্রলার নিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন । জলসীমা অতিক্রম করার অভিযোগে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও নৌসেনা তাঁদের গ্রেফতার করে । সেই থেকে বাংলাদেশের জেলে বন্দি ছিলেন দক্ষিণ 24 পরগনার কাকদ্বীপ ও নামখানার ওই 95 জন মৎস্যজীবী । গতকালই জানানো হয়েছিল, আজই মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের আটক মৎস্যজীবীদের হেলিপ্যাড থেকে হস্তান্তর করবেন । সেই মতোই এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া আজ সম্পন্ন হল ।