কলকাতা, 2 জুলাই: একের পর এক গণপিটুনির ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বিগত কয়েকদিনে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা নিয়ে বিরোধী দল বিজেপি রাজ্যের পুলিশ এবং পুলিশমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন। এবার এই প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
সূত্রের খবর,গণপিটুনির ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বিগ্ন। মঙ্গলবার নবান্নে পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে তিনি এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন তিনি । সেখানে মুখ্যমন্ত্রী গণপিটুনির এই ঘটনাক্রম নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। পুলিশকর্তাদের উদ্দেশে তাঁর সাফ কথা, কোনওভাবেই এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা যায় না । তিনি বলেন, "পুলিশকে আরও সতর্ক থাকতে হবে । পুলিশের চোখ খুলে রাখতে হবে। পুলিশের টহলদারি বাড়াতে হবে।"
সূত্রের আরও দাবি, এদিন ওই বৈঠকে গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এডিজি আইনশৃঙ্খলা-সহ পুলিশের উচ্চপর্যয়ের আধিকারিকরাও বৈঠকে ছিলেন। তাঁদের মমতা বলেন, পুলিশ প্রশাসনের এই বিষয়ে নিয়ে আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত ছিল। এ ধরনের ঘটনা কোনভাবে মেনে নেওয়া হবে না। পুলিশের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। তাঁর প্রশ্ন, কেন অভিযোগ পাওয়ার পরেও পুলিশ বসে থাকবে ? কেন বারবার পুলিশ নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্ন উঠবে !
এর আগে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে বলেছেন, "রাজ্যে একের পর এক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। এখন কী করছেন রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী! রাজ্য কোন দিকে যাচ্ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী নিজের চোখে কাপড় বেঁধে গান্ধারীর ভূমিকা পালন করছেন। সবমিলিয়ে গণপিটুনির ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন প্রশ্নের মুখে ঠিক তখনই তৎপর হলেন মমতা ৷
রাজ্যপালের এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ বা বিরোধীদের আক্রমণের জন্য নয়, যতদূর জানা যাচ্ছে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীকে মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেভাবে একের পর এক ঘটনা ঘটছে তা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি। যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে কোন আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রকাশ্যে রাখেননি। বরং মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এডিজি আয়ন-শৃঙ্খলা এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে আক্রান্ত পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। পাশাপাশি আলাপন এদিন আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজনকে হোম গার্ডের চাকরির কথা ঘোষণা করেন।