কলকাতা, 6 মার্চ: লোকসভা ভোটের আগে উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি ৷ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচারপতি পদে ইস্তফা-সহ তৃণমূলের অন্দরের কলহ প্রকাশ্যে আসা- একের পর এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেই চলেছে ৷ এই আগুনে খানিকটা যেন ঘি ঢাললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মঙ্গলবার রাতে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট করে লেখেন, "6 মার্চ বিশেষ ঘোষণা ৷ চোখ রাখুন সকাল 10 টায় বাংলার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পেজে ৷" ফলত রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ত কর্মসূচির মধ্যেও বুধের সকালে জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে মুখ্যমন্ত্রী কী পোস্ট করেন, তা ঘিরে কৌতূহল সবমহলে ৷
জানুয়ারি মাস থেকে শেখ শাহাজাহানকে নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই 29 ফেব্রুয়ারি তৃণমূলের তৎকালীন মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সোশাল মিডিয়ায় কারও নাম উল্লেখ না-করে একটি পোস্ট করেন ৷ সেই পোস্ট ঘিরে জল্পনা শুরু হয় ৷ তিনি পরে একাধিক সংবাদমাধ্য়মে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় স্পষ্ট জানান দলের লোকসভা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেই পোস্ট করেছেন ৷ এরপর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণে মাঠে নামেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা বিধায়ক তাপস রায় ৷ সোমবার তাপস রায় বিধানসভায় গিয়ে তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে আসেন ৷ আজ ফের তাঁকে বিধানসভায় তলব করা হয়েছে ৷
এদিকে সন্দেশখালি ইস্যুতে শাসকদল তৃণমূল চাপের মুখে রয়েছে ৷ 5 জানুয়ারি উত্তর 24 পরগনার সন্দেশখালিতে ইডির উপর আক্রমণের মামলায় সোমবারই ইডি আদালতে জানায়, তাদের আধিকারিকদের উপর হামলার তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হোক ৷ কারণ রাজ্য পুলিশ এই মামলার দায়ভার নিজেদের হাতে নিতে চাইলেও পুলিশ তদন্তে নামলে তথ্যপ্রমাণ লোপাট হয়ে যেতে পারে ৷ তাই এই তদন্তের ভার দেওয়া হোক সিবিআইকে ৷ ইডির আইনজীবীর আবেদন ছিল, সিবিআই কিংবা কোনও 'নিরপেক্ষ সংস্থা' দিয়ে তদন্ত হোক ৷ আর মঙ্গলবার তাতেই সিলমোহর দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ ইডির আধিকারিকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় তদন্তভারের নির্দেশ দেওয়া হয় সিবিআইকে ৷
পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের হেফাজতে থাকা শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ৷ যদিও এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তড়িঘড়ি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার ৷ মামলাটি জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন জানালে বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ তা খারিজ করে দেন ৷ এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন মঙ্গলবার বিকেল 4.30 মিনিটের মধ্যে রাজ্যকে এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে ৷ কিন্তু দিনের শেষে শাহজাহানকে হেফাজতে না নিয়ে শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে ৷ এত সবকিছুর মধ্যে বুধের সকালে সাধারণের জ্ঞাতার্থে মুখ্যমন্ত্রী কী ঘোষণা করবেন, সে দিকেই এখন তাকিয়ে সকলে ৷
আরও পড়ুন: