ETV Bharat / state

গ্রেফতারির পর কংগ্রেস নেতাকে 'নগ্ন' করে থানায় ঘোরাল পুলিশ! - Malda Police - MALDA POLICE

Manichak police station: প্রথমে গ্রেফতার। তারপর কড়া শাস্তি ৷ কংগ্রেস নেতাকে সম্পূর্ণ নগ্ন করে বেশ কয়েক ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয় ওই অবস্থায় তাঁকে থানা চত্বরে ঘোরানো হয়েছে বলেও অভিযোগ।

Manichak police station
কংগ্রেস নেতাকে নগ্ন করে রাখার অভিযোগ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 27, 2024, 4:37 PM IST

Updated : May 27, 2024, 7:19 PM IST

মালদা, 27 মে: এক কংগ্রেস নেতাকে থানায় কয়েক ঘণ্টা সম্পূর্ণ নগ্ন করে রাখল পুলিশ ! শুধু তাই নয়, এই অবস্থায় তাঁকে থানা চত্বরে ঘোরানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠল মানিকচক থানার পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নেতার স্ত্রী ৷ অভিযোগ গ্রহণ করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার ৷

গ্রেফতারির পর কংগ্রেস নেতাকে 'নগ্ন' করে থানায় ঘোরানোর অভিযোগ (ইটিভি ভারত)

প্রসঙ্গত নির্যাতিত কংগ্রেস নেতার স্ত্রী ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ৷ ঘটনাটি ঘটেছে 23 মে, বৃহস্পতিবার ৷ পুরনো একটি মামলার ভিত্তিতে সেদিন রাতে বন্ধুদের আসর থেকে শাহজাহান শেখ নামে ওই কংগ্রেস নেতাকে গ্রেফতার করা হয় ৷ গ্রেফতার করা হয় আরও এক কংগ্রেস নেতা ফিটু শেখকেও ৷ অভিযোগ, ওই রাতেই পুলিশ সাজাহান শেখকে কয়েক ঘণ্টা বিবস্ত্র করে থানায় ঘোরায় ৷ ব্যাপক মারধর করা হয় ফিটু শেখকেও ৷ পরদিন তাঁদের জেলা আদালতের তোলা হয় এবং ছয় দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয় ৷

শাহজাহান শেখের স্ত্রী কাদবানু বিবির অভিযোগ, রাজনৈতিক চক্রান্ত করে তাঁর স্বামীকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে ৷ 23 তারিখ রাতে এনায়েতপুর থেকে তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করেন মানিকচক থানার আইসি পার্থসারথি হালদার ৷ ঘটনাস্থল থেকেই মারতে মারতে তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে তাঁকে দু’ঘণ্টা সম্পূর্ণ নগ্ন করে রাখা হয় ৷ শুধু নগ্ন করে রাখাই নয়, সেই অবস্থায় তাঁকে বেধড়ক মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ ৷ ঘোরানো হয় থানাতেও। সেই দৃশ্য থানার কনস্টেবল ও সিভিক ভলেন্টিয়াররা ভিডিওগ্রাফি করেন ৷ এখন তাঁর স্বামীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, সেই ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে ৷ তিনি সম্পূর্ণ ঘটনার পুলিশি তদন্তের দাবি করছেন ৷ ঘটনায় মানিকচক থানার আইসি-সহ অন্যান্য পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজ্য ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ দায়ের করতে চলেছেন কাদবানু বিবি ৷

আরও পড়ুন: ভোটের জন্য বাড়ল গ্রীষ্মের ছুটির মেয়াদ, বাড়তি পাওনা স্কুল পড়ুয়াদের

এদিকে এই বিষয়ে ইটিভি ভারতের ক্যামেরায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মানিকচকের প্রাক্তন বিধায়ক তথা জেলা কংগ্রেসের নেতা মোত্তাকিন আলম ৷ তিনি বলেন, "বিষয়টি আমরা পুলিশ সুপারের নজরে এনেছি ৷ তাঁকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে ৷ আমরা মানবাধিকার কমিশনেও এনিয়ে অভিযোগ জানাতে চলেছি ৷ পুলিশের উদ্দেশ্য, কংগ্রেসের দখলে থাকা ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত যেকোনও প্রকারে ভেঙে দেওয়া ৷ সেই চক্রান্তই করেছেন আইসি ৷ শাহজাহামের বিরুদ্ধে পুরনো কিছু মামলা থাকার কথা আমরা জানি ৷ কিন্তু ফিটুর শেখের নামে কোনও মামলা নেই ৷ তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হল? কেন বোমাবাজির মিথ্যে মামলা দেওয়া হল? জানি না ৷ এই নিয়ে আমরা কলকাতা হাইকোর্টেও যাবো ৷ পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদে ভোটের ফল প্রকাশের পর আমরা থানা ঘেরাও কর্মসূচিও নিয়েছি ৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে শাহজাহান এখনও পর্যন্ত অনশন করে রয়েছেন ৷ তাঁর কিছু হলে সমস্ত দায় বর্তাবে মানিকচক থানার আইসির উপর ৷"

আরও পড়ুন: রেমালের জেরে নাগাড়ে বৃষ্টিতে নাকাল জনজীবন; ভোগান্তির শেষ কবে? জানাল হাওয়া অফিস

পুলিশের এই বর্বরতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন সিপিএম-র জেলা কমিটির সদস্য তথা সিটুর মালদা জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি সিনহাও ৷ তিনি বলেন, "গোপালপুর আর ধরমপুরকে তৃণমূল অশান্ত করে রেখেছে ৷ গোপালপুরের তৃণমূল নেতা নাসির সেখানে বোমের গুদাম তৈরি করে রেখেছেন ৷ তাঁরা ওই এলাকায় বাম-কংগ্রেসকে কোনও জায়গা ছাড়ে না ৷ পুলিশও তাঁদের মদত দিচ্ছেন ৷ এনিয়ে আমরা পুলিশ সুপারের কাছে ডেপুটেশনও দিয়েছি ৷ তৃণমূলের নির্দেশে ক’দিন আগে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে ৷ অভিযোগ থাকলে পুলিশ যে কাউকে গ্রেফতার করতে পারে ৷ কিন্তু এক অভিযুক্তকে পুলিশ সম্পূর্ণ নগ্ন করে থানায় ঘুরিয়েছে ৷ এটা মারাত্মক অভিযোগ ৷ এই ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ৷ পুলিশ এটা করতে পারে না ৷ এই নিয়ে আমরা স্তম্ভিত ৷ বিষয়টি নিয়ে পুলিশি তদন্তের দাবি করেছি ৷"

আরও পড়ুন: রেমালেও অপরিবর্তিত প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি, মঙ্গলে কলকাতার মোদির রোড শো

পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর ধরমপুর সংলগ্ন গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বোমাবাজির ঘটনায় সাজাহান, ফিটু-সহ একাধিক কংগ্রেস নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে মানিকচক থানার পুলিশ ৷ ওই এলাকায় জমি দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল পরিচালিত গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী নাসিরুদ্দিন শেখের সঙ্গে সাজাহানের বিবাদ ৷ তার জেরে ধরমপুর ও গোপালপুর এলাকায় মাঝে মধ্যেই বোমাবাজির ঘটনা ঘটে ৷ মানিকচক ব্লকের মধ্যে একমাত্র ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতই কংগ্রেস পরিচালিত ৷ অনেকের অভিযোগ, শাসকদলের নির্দেশে ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ভেঙে দিতে তৎপর মানিকচক থানার পুলিশ ৷

মালদা, 27 মে: এক কংগ্রেস নেতাকে থানায় কয়েক ঘণ্টা সম্পূর্ণ নগ্ন করে রাখল পুলিশ ! শুধু তাই নয়, এই অবস্থায় তাঁকে থানা চত্বরে ঘোরানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠল মানিকচক থানার পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নেতার স্ত্রী ৷ অভিযোগ গ্রহণ করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার ৷

গ্রেফতারির পর কংগ্রেস নেতাকে 'নগ্ন' করে থানায় ঘোরানোর অভিযোগ (ইটিভি ভারত)

প্রসঙ্গত নির্যাতিত কংগ্রেস নেতার স্ত্রী ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ৷ ঘটনাটি ঘটেছে 23 মে, বৃহস্পতিবার ৷ পুরনো একটি মামলার ভিত্তিতে সেদিন রাতে বন্ধুদের আসর থেকে শাহজাহান শেখ নামে ওই কংগ্রেস নেতাকে গ্রেফতার করা হয় ৷ গ্রেফতার করা হয় আরও এক কংগ্রেস নেতা ফিটু শেখকেও ৷ অভিযোগ, ওই রাতেই পুলিশ সাজাহান শেখকে কয়েক ঘণ্টা বিবস্ত্র করে থানায় ঘোরায় ৷ ব্যাপক মারধর করা হয় ফিটু শেখকেও ৷ পরদিন তাঁদের জেলা আদালতের তোলা হয় এবং ছয় দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয় ৷

শাহজাহান শেখের স্ত্রী কাদবানু বিবির অভিযোগ, রাজনৈতিক চক্রান্ত করে তাঁর স্বামীকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে ৷ 23 তারিখ রাতে এনায়েতপুর থেকে তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করেন মানিকচক থানার আইসি পার্থসারথি হালদার ৷ ঘটনাস্থল থেকেই মারতে মারতে তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে তাঁকে দু’ঘণ্টা সম্পূর্ণ নগ্ন করে রাখা হয় ৷ শুধু নগ্ন করে রাখাই নয়, সেই অবস্থায় তাঁকে বেধড়ক মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ ৷ ঘোরানো হয় থানাতেও। সেই দৃশ্য থানার কনস্টেবল ও সিভিক ভলেন্টিয়াররা ভিডিওগ্রাফি করেন ৷ এখন তাঁর স্বামীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, সেই ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে ৷ তিনি সম্পূর্ণ ঘটনার পুলিশি তদন্তের দাবি করছেন ৷ ঘটনায় মানিকচক থানার আইসি-সহ অন্যান্য পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজ্য ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ দায়ের করতে চলেছেন কাদবানু বিবি ৷

আরও পড়ুন: ভোটের জন্য বাড়ল গ্রীষ্মের ছুটির মেয়াদ, বাড়তি পাওনা স্কুল পড়ুয়াদের

এদিকে এই বিষয়ে ইটিভি ভারতের ক্যামেরায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মানিকচকের প্রাক্তন বিধায়ক তথা জেলা কংগ্রেসের নেতা মোত্তাকিন আলম ৷ তিনি বলেন, "বিষয়টি আমরা পুলিশ সুপারের নজরে এনেছি ৷ তাঁকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে ৷ আমরা মানবাধিকার কমিশনেও এনিয়ে অভিযোগ জানাতে চলেছি ৷ পুলিশের উদ্দেশ্য, কংগ্রেসের দখলে থাকা ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত যেকোনও প্রকারে ভেঙে দেওয়া ৷ সেই চক্রান্তই করেছেন আইসি ৷ শাহজাহামের বিরুদ্ধে পুরনো কিছু মামলা থাকার কথা আমরা জানি ৷ কিন্তু ফিটুর শেখের নামে কোনও মামলা নেই ৷ তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হল? কেন বোমাবাজির মিথ্যে মামলা দেওয়া হল? জানি না ৷ এই নিয়ে আমরা কলকাতা হাইকোর্টেও যাবো ৷ পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদে ভোটের ফল প্রকাশের পর আমরা থানা ঘেরাও কর্মসূচিও নিয়েছি ৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে শাহজাহান এখনও পর্যন্ত অনশন করে রয়েছেন ৷ তাঁর কিছু হলে সমস্ত দায় বর্তাবে মানিকচক থানার আইসির উপর ৷"

আরও পড়ুন: রেমালের জেরে নাগাড়ে বৃষ্টিতে নাকাল জনজীবন; ভোগান্তির শেষ কবে? জানাল হাওয়া অফিস

পুলিশের এই বর্বরতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন সিপিএম-র জেলা কমিটির সদস্য তথা সিটুর মালদা জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি সিনহাও ৷ তিনি বলেন, "গোপালপুর আর ধরমপুরকে তৃণমূল অশান্ত করে রেখেছে ৷ গোপালপুরের তৃণমূল নেতা নাসির সেখানে বোমের গুদাম তৈরি করে রেখেছেন ৷ তাঁরা ওই এলাকায় বাম-কংগ্রেসকে কোনও জায়গা ছাড়ে না ৷ পুলিশও তাঁদের মদত দিচ্ছেন ৷ এনিয়ে আমরা পুলিশ সুপারের কাছে ডেপুটেশনও দিয়েছি ৷ তৃণমূলের নির্দেশে ক’দিন আগে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে ৷ অভিযোগ থাকলে পুলিশ যে কাউকে গ্রেফতার করতে পারে ৷ কিন্তু এক অভিযুক্তকে পুলিশ সম্পূর্ণ নগ্ন করে থানায় ঘুরিয়েছে ৷ এটা মারাত্মক অভিযোগ ৷ এই ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ৷ পুলিশ এটা করতে পারে না ৷ এই নিয়ে আমরা স্তম্ভিত ৷ বিষয়টি নিয়ে পুলিশি তদন্তের দাবি করেছি ৷"

আরও পড়ুন: রেমালেও অপরিবর্তিত প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি, মঙ্গলে কলকাতার মোদির রোড শো

পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর ধরমপুর সংলগ্ন গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বোমাবাজির ঘটনায় সাজাহান, ফিটু-সহ একাধিক কংগ্রেস নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে মানিকচক থানার পুলিশ ৷ ওই এলাকায় জমি দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল পরিচালিত গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী নাসিরুদ্দিন শেখের সঙ্গে সাজাহানের বিবাদ ৷ তার জেরে ধরমপুর ও গোপালপুর এলাকায় মাঝে মধ্যেই বোমাবাজির ঘটনা ঘটে ৷ মানিকচক ব্লকের মধ্যে একমাত্র ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতই কংগ্রেস পরিচালিত ৷ অনেকের অভিযোগ, শাসকদলের নির্দেশে ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ভেঙে দিতে তৎপর মানিকচক থানার পুলিশ ৷

Last Updated : May 27, 2024, 7:19 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.