ব্যারাকপুর, 11 মে: "আমি সিপিএম বলতে বুঝি জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। এরা সিপিএম করেছেন। কিন্তু এ কোন সিপিএম।" রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা অটুট রেখেই নির্বাচনী প্রচারে সিপিএম'কে বেনজির আক্রমণ মদন মিত্রের ৷ অসুস্থতা কাটিয়ে শুক্রের সন্ধেয় বেলঘরিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে চেনা মেজাজে মদন মিত্র ৷ বিধানসভা এলাকা থেকে সিপিএম'কে 'ফঁড়ে' বলে আক্রমণ শানান কামারহাটির বিধায়ক ৷
হুঁশিয়ারির সুরে মদন বলেন, "এখন সিপিএমে সব ধান্দাবাজ ৷ কতগুলো ফঁড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখানে ঢুকতে দেবেন না ৷ দয়া করে আবার এর জন্য ওদের তাড়া করে ভাগিয়ে দেবেন না। তাড়া দেবেন কাকে? যাদের নেই কিছু! ওদের এমনিতেই মানুষ তাড়া দিতে দিতে গঙ্গার ধারে নিয়ে যাচ্ছে ৷ এরপর সলিলসমাধি হয়ে যাবে।" যদিও রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে শ্রদ্ধা ঝরে পড়েছে মদনের গলায় ৷
সিপিএম'কে নিশানা করে মদন বলেন, "কোথায় সিপিএম ? এ এক উদ্ভূত পার্টি ৷ খায় না মাথায় দেয় ? আমি সিপিএম বলতে বুঝি জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-কে। এরা সিপিএম করেছেন। এ কোন সিপিএম।" কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক বলেন, "কোনওদিন পশ্চিমবঙ্গ থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়নি। বিধান রায়ের ক্ষেত্রেও সেই সুযোগ আসেনি কখনও। দেশে 30 বছর একটা দল থেকেই প্রধানমন্ত্রী হয়ে এসেছে।তার নাম জাতীয় কংগ্রেস। একবারই সুযোগ এসেছিল সিপিএম নেতা জ্যোতি বসুর সময়ে। সমস্ত রাজনৈতিক দল তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিলেও তিনি কিন্তু তাঁর পার্টির সিদ্ধান্তের উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সিপিএম পার্টি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেও জ্যোতি বসু অন্য পার্টিতে নাম লিখিয়ে কংগ্রেসের থেকে প্রধানমন্ত্রী হননি।"
পাশাপাশি দমদম ও মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের দুই সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী এবং মহম্মদ সেলিমকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ৷ তিনি জানান, সুজন চক্রবর্তী এবং মহম্মদ সেলিমকে মানুষ পত্রপাঠ প্রত্যাখ্যান করবে ৷ সেইসঙ্গে ভোটের দিন দলীয় কর্মীদের কী করতে হবে তার দাওয়াই-ও দিয়ে রাখছেন তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলেন, "তৃণমূল কর্মীদের বলব তাজা হয়ে তৈরি থাকুন। ভোটের দিন ভোর 6টা'র সময় নির্দেশ পেয়ে যাবেন, কী করতে হবে। কীভাবে মানুষকে সাহায্য করতে হবে ভোট দেওয়ার জন্য।আমরা দাঁড়িয়ে থেকে পাহারা দেব। একটা ফলস ভোটও যেন না পড়ে। মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে পৃথিবীর কারও ক্ষমতা নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডানা ছেঁটে দেয়।"
মদনের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আহমেদ আলি খান বলেন, "মদন মিত্রকে বলব, ওর নিজের দল নিয়ে আগে চিন্তা করুক। পরে সিপিএম পার্টিকে নিয়ে ভাববেন। ও নিজেই দলের মধ্যে কোণঠাসা। তাই নেত্রীর কাছে পয়েন্ট বাড়ানোর জন্য এই সমস্ত আজগুবি মন্তব্য করছে। উনি সুস্থ থাকুন সেই কামনাই করি।"
আরও পড়ুন: