ব্যারাকপুর, 14 এপ্রিল: নির্বাচনের দিন যত এগোচ্ছে ততই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। হিংসা-হানাহানি তো ছিলই, এবার তাতে যুক্ত হল বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের প্রচার দেওয়ালে কালি লেপে দেওয়ার মতো ঘটনাও। এই ঘটনাকে ঘিরে ভোটের মুখে বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ব্যারাকপুরের রাজনীতি। ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার অর্জুন-পুত্র তথা বিজেপি বিধায়ক পবন সিংয়ের নেতৃত্বে জগদ্দল থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা। পরে,পুলিশের হস্তক্ষেপে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে ৷ তবে,এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে আগামিদিনে বিজেপি বসে থাকবে না বলেও পুলিশ-প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভাটপাড়ার বিধায়ক।
হাই ভোল্টেজ ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে এবার লড়াই হতে চলেছে যুযুধান দুই নেতা পার্থ ভৌমিক এবং অর্জুন সিংয়ের মধ্যে। অর্জুন বিজেপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পর থেকেই রাজনৈতিক পারদ চড়তে শুরু করেছে ব্যারাকপুরে। দুর্নীতি ইস্যুতে প্রতিপক্ষ পার্থকে নিশানা করার পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে সন্দেশখালির শাহজাহানের জমি যোগের অভিযোগ তুলে লাগাতার নৈহাটির বিধায়ককের বিরুদ্ধে সুরও চড়িয়েছেন এই পদ্ম প্রার্থী। পালটা অর্জুন সিংকেও আক্রমণ করতে ছাড়ছেন না তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে জগদ্দলের শ্যামনগর পাওয়ার হাউসের পাশের রাস্তার ধারে পদ্ম প্রার্থীর হয়ে দেওয়াল লিখন করছিলেন এক শিল্পী। তখনই তাঁর কাজে বাধা দেয় তৃণমূল সমর্থকরা। এমনকী ওই শিল্পীকে মারধর এবং গালিগালাজ দিয়ে সেখান থেকে তাঁকে তাড়িয়েও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তারই ফাঁকে অর্জুনের প্রচার দেওয়ালে কালি লেপে দিয়ে চম্পট দেয় ওই তৃণমূল সমর্থকরা। এর জেরে ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।
এদিকে, এই ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা। ঘটনার প্রতিবাদে এদিন দুপুরে মিছিল করে শাসকদলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে জগদ্দল থানার সামনে পৌঁছান তাঁরা। শুরু হয় বিক্ষোভ। পরে,তাতে নেতৃত্ব দেন অর্জুন পুত্র,ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক পবন সিং। এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পবন বলেন,"এই ধরণের ঘটনা লাগাতার ঘটে চলেছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। কখনও বিজেপি কর্মীদের মারধর, আবার কখনও প্রচারে বাঁধা দেওয়া-বারবার অভিযোগ করার পরও পুলিশ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থায় নিচ্ছে না। যখনই তৃণমূলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে তখনই 'দেখছি-দেখব' বলে এড়িয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনে এই ধরণের মনোভাব চলতে পারে না। এরপর বড় কোনও ঘটনা ঘটলে কিংবা অশান্তি বাধলে আমাদের যেন দোষ না দেওয়া হয়। পুলিশ-প্রশাসনকে বলে দিচ্ছি, আমরা চাই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হোক। মানুষ তার গনতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করুক।" অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে ব্যারাকপুরে তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে পালটা গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধেই অশান্তি পাকানোর দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন: