সন্দেশখালি, 1 জুন: ভোটের আগের রাতেও সন্ত্রস্ত সন্দেশখালি। পুলিশের ছদ্মবেশে গ্রামে ঢুকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। উঠেছে সন্ত্রাসের অভিযোগও। যার জেরে বাঁশ, লাঠি হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন গ্রামের মহিলারা। এমনকী, তৃণমূলের সন্ত্রাস ঠেকাতে রাত জেগে পাহারাও দেন গ্রামবাসীরা।
ঘটনাটি বেড়মজুরের কাঠপোল এলাকার। যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ। উলটে পুলিশের দাবি, রাতে এলাকায় টহল দেওয়ার সময় বিজেপি সমর্থিত কয়েকজন গ্রামবাসী দুই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে মারধর করে পালিয়ে যায়। সেই খবর পেয়ে পুলিশের বিশাল বাহিনী যখন অভিযুক্তদের ধরতে গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করে তখন তাঁদের বাঁধা দিতে এগিয়ে দেওয়া হয় মহিলাদের। ফলে, বাঁধা পেয়ে পিছু হটতে হয় পুলিশকে। এরপরই 'পুলিশের ছদ্মবেশে' তৃণমূলের লোকজনের গ্রামে ঢোকার অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপি সমর্থিত মহিলারা। এই ঘটনাকে ঘিরে ফের চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে সন্দেশখালি।
ভোটের আবহেও সন্দেশখালিতে যেন প্রতিবাদের আগুন নিভছে না। একের পর এক ভাইরাল ভিডিয়ো এবং অডিয়ো জনসমক্ষে আসার পর থেকেই নতুন করে তপ্ত হতে শুরু করেছে হটস্পট সন্দেশখালিতে। এর আগে পুলিশের বিরুদ্ধেও উঠেছিল সেই একই অভিযোগ। তখন গ্রামে পুলিশের অভিযান ঠেকাতে বিজেপি সমর্থিত মহিলারা শুরু করেছিলেন পালা করে রাতে পাহারা দেওয়া। সেই ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছিল। যেখানে আন্দোলনকারী মহিলারা শপথ নিয়ে বলছেন, "গ্রামে তাঁরা কোনওভাবেই পুলিশ ও তৃণমূল নেতাদের ঢুকতে দেবেন না।" সেই ঘটনার পর বেশ কিছুদিন শান্তই ছিল সন্দেশখালি। কিন্তু, ভোটের আগের রাতে ফের চর্চায় উঠে এল এই জনপদ। নেপথ্যে সেই শাসকদলের সন্ত্রাসের অভিযোগ ! তৃণমূলের অত্যাচার রুখতে বাঁশ, লাঠি হাতে নিয়ে গ্রামের মহিলারা রাত-পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি এদিন উলুধ্বনি-শঙ্খধ্বনি দিতে থাকেন।
এদিকে, বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে আবার পালটা অভিযোগও উঠে আসছে। তৃণমূল সমর্থকদের ভয় দেখানোর চেষ্টা চলছে, এমন অভিযোগও এসেছে। ওই অঞ্চলের তৃণমূল নেতা হলধর আড়ির বাড়িতে ইট ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ শাসক শিবিরের। তৃণমূলের দাবি, বুথ দখলের লক্ষ্যেই হামলা ও ভয় দেখানোর চেষ্টা চলছে। রাতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে তপ্ত হয়েছে সন্দেশখালির বেড়মজুর।
প্রসঙ্গত, এবারের ভোটে অন্যতম চর্চিত আসন বসিরহাট। শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারি পরবর্তী সময়ে সন্দেশখালির উপর দিয়ে বহু জল বয়ে গিয়েছে। এখান থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছে সন্দেশখালির অন্যতম প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্রকে। যদিও বসিরহাট থেকে এবারও সাফল্যের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল শিবির। সন্দেশখালি থেকেও ব্যাপক লিড মিলবে, সেই আত্মপ্রত্যয়ও ফুটে উঠেছে শাসক নেতাদের গলায়। এমত অবস্থায় ভোটের আগের রাতে সন্দেশখালির বেড়মজুরে লাঠি হাতে মহিলাদের প্রতিবাদে কি কোনও প্রভাব ফেলবে নির্বাচনের ফলাফলে? সেই প্রশ্নও ইতি-উতি উঁকি মারতে শুরু করেছে।