জয়নগর, 6 অক্টোবর: আরজি করের চিকিৎসক-পড়ুয়া ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এখনও উত্তপ্ত রাজ্য ৷ এর মধ্যে এক চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াকে খুনের ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে দক্ষিণ 24 পরগনার জয়নগর থানা এলাকা ৷ অভিযোগ, তাকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে ৷ এই ঘটনায় বিচারের দাবিতে রবিবার সকালে মিছিল করলেন স্থানীয়রা ৷
সকালে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে এই প্রতিবাদ মিছিল চলে ৷ কৃপাখালি থেকে এই মিছিল শুরু হয়ে মহিষমারি বাজার হয়ে মিছিল পৌঁছয় জয়নগর থানা পর্যন্ত ৷ বহু ছাত্র-ছাত্রী এই মিছিলে পা মিলিয়েছে । স্থানীয় এক বাসিন্দা রতন হালদার বলেন, "আমরা কৃপাখালি গ্রাম থেকে বেরিয়েছি ৷ এখান থেকে যাব মহিষমারি বাজার ৷ সেখানে আইসি ক্যাম্প থেকে হয়ে জয়নগর থানায় পৌঁছব ৷ পথে আমাদের আরও ভাইয়েরা যোগ দেবেন ৷ লক্ষ লক্ষ মানুষ হাঁটবে ৷"
শনিবার সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় কাটাপুকুর মর্গে নির্যাতিতা নাবালিকার ময়নাতদন্ত হয়নি ৷ রবিবার ময়নাতদন্ত করা হবে বলে খবর ৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে কুলতলি থানা ঘেরাও করার কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি ৷ বিকেলে বামেদের কর্মসূচিও রয়েছে ৷ এমনকী সিনিয়র চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দলও যাবে জয়নগরে ৷
বাম ও বিজেপির কর্মসূচি নিয়ে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে প্রশাসন ৷ জয়নগরের একাধিক জায়গায় বসেছে পুলিশ পিকেট ৷ মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী ৷ 9 বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে শুক্রবার রাত থেকেই উত্তপ্ত জয়নগর ৷ দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা ৷
পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে উত্তেজিত জনতা ৷ যদিও পুলিশ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ৷ শনিবার সকালে মহিষমারি থানার ভিতরে ও বাইরে ভাঙচুর চলে ৷ জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের সাইকেল, বাইক ৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে ৷ এলাকায় নামে ব়্যাফ ৷
এরপর রবিবার থমথমে জয়নগরের মহিষমারি এলাকা ৷ বেশিরভাগ দোকান বন্ধ ৷ এদিন সেখানে একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের যাওয়ার কথা ৷ এলাকায় যাতে নতুন করে কোনও অশান্তি তৈরি না হয়, সেই দিকে কড়া নজর রেখেছে পুলিশ ৷
শুক্রবার দুপুর আড়াইটের সময় প্রাইভেট টিউশন পড়তে গিয়েছিল চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রী ৷ ফেরার পথে সে তার বাবার দোকানে দেখা করে ৷ এরপর সে বাড়ি না ফেরায় দুশ্চিন্তায় পড়ে বাড়ির লোকজন ৷ শুরু হয় খোঁজ ৷ মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে গেলে পুলিশ এফআইআর করতে চায়নি বলে অভিযোগ ৷ এমনকী বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়নি ৷
সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনিবার ভোররাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ সে দোষ স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের ৷ এরপর ভোররাতে বাড়ির কাছে জলাজমি থেকে নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয় ৷ পরিবারের অভিযোগ, প্রথমেই পুলিশ তৎপর হলে মেয়েকে বাঁচানো যেত ৷