রায়দিঘি, 1 ফেব্রুয়ারি: সাত সকালে স্থানীয় পুকুর থেকে এক নাবালকের দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ৷ চারদিন ধরে নিখোঁজ ছিল ওই 10 বছরের বালক ৷ মৃতের নাম ধনঞ্জয় দত্ত ৷ ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ 24 পরগনার রায়দিঘির 23-এর লাটের দত্তপাড়ায় ৷
পরিবার সূত্রে খবর, 28 জানুয়ারি পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে রাস্তার দিকে খেলতে গিয়েছিল ধনঞ্জয় । এরপর বাড়ি ফেরেনি সে । চারিদিকে খোঁজাখুঁজির পরও তার হদিশ মেলেনি ৷ তারপর নাবালকের খোঁজে পোস্টার লাগানো হয় সারা এলাকায় । পরে রায়দিঘি থানাতে অভিযোগও জানানো হয় পরিবারের তরফে ।
এ বিষয়ে রায়দিঘি থানার ওসি মানস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বেশ কয়েকদিন আগে ধনঞ্জয় দত্ত নামে বছর দশেকের ওই নাবালক নিখোঁজ হয়ে যায় । পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল । পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ । আজ সকালে স্থানীয় একটি পুকুরে ওই নাবালকের দেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা । স্থানীয়রা খবর দেয় রায়দিঘি থানাতে ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে রায়দিঘি থানার পুলিশ পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ডায়মন্ড হারবার পুলিশকে পাঠানো হয়েছে । কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সম্পূর্ণ বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত শুরু করেছি আমরা ।"
খেলতে গিয়ে নাবালক পুকুরে পড়ে যেতে পারে, এইরকম ধারণা নিয়ে স্থানীয় সব পুকুরে জাল ফেলে দেখা হয়েছিল । কিন্তু সেদিন কোথাও সন্ধান মেলেনি ছোট্ট ধনঞ্জয়ের । এরপর শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ স্থানীয় একটি পুকুরে হালকা হালকা মানুষের মত কিছু ভাসতে দেখা যায় । শনিবার সকাল হতেই পরিষ্কার হয় সেটি নিখোঁজ নাবালকের দেহ ৷ তৎক্ষণাৎ সাড়া পড়ে যায় এলাকায় । খবর যায় রায়দিঘি থানায় । রায়দিঘি থানার পুলিশ এসে ধনঞ্জয়কে পুকুর থেকে তুলে ময়নাতদন্তে পাঠায় ।
পরিবারের অভিযোগ, কেউ বা কারা তাকে মেরে পুকুরে ফেলে দিতে পারে । ময়নাতদন্তের পরই উঠে আসবে প্রকৃত মৃত্যুর কারণ । যদিও শিশুটিকে খুন করা হয়, তাহলে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছে পরিবারের পক্ষ থেকে । ঘটনায় সারা এলাকায় শোকের ছায়া । কান্নায় ভেঙে পড়েছে শিশুটির মা ও পরিবারের লোকজন ।
এ বিষয়ে মৃত নাবালকের বউদি শ্যামলী দত্ত বলেন, "গত চার পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ ছিল ৷ এরপর আজ সকালে স্থানীয় একটি পুকুর থেকে দেহ ভাসতে দেখা যায় । রায়দিঘি থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে । আমাদের মনে হচ্ছে ওকে খুন করা হয়েছে । আমরা চাই, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক ।"
এ বিষয়ে মৃত নাবালকের কাকা রবি দত্ত বলেন, "বেশ কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ ছিল ভাইপো । পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল । এলাকার মানুষ তো খোঁজাখুঁজি করেছিল ৷ কিন্তু খুঁজে পায়নি ৷ আজ সকালে স্থানীয় একটি পুকুর থেকে ভাইপোর দেহ উদ্ধার হয়। দেহ দেখে মনে হচ্ছে ওকে খুন করা হয়েছে । আমরা চাই, এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিক পুলিশ প্রশাসন ।"