কলকাতা, 23 এপ্রিল: তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ষড়যন্ত্রের মামলায় আরও তথ্য জানতে অভিযুক্ত রাজারামকে রেগকে নিজেদের হেফাজতে পেল লালবাজার ৷ মঙ্গলবার তাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয় ৷ বিচারক রাজারামকে 29 এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন ৷
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মসহায়কের সঙ্গে রাজারাম রেগের কীভাবে যোগাযোগ হল ? তাঁরা কি কোথাও দেখা করেছিলেন, নাকি শুধুমাত্র ফোনে কথা হয়েছিল তাঁদের? কীভাবে অভিষেকের আত্মসহায়কের ফোন নম্বর রাজারামের হাতে এল এবং তাদের মধ্যে কী কথা হয়েছিল? পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভবানীপুরের বাড়ি ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতেও কি গিয়েছিল রাজারাম? এরকম হাজারো প্রশ্নের উত্তর এখনও পাওয়া বাকি লালবাজারের ৷ এই দিকগুলি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখার প্রয়োজন । এমনটাই এ দিন দাবি করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকদের তরফে আদালতে রাজারামকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হয় ৷ সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে আদালত রাজারামকে কলকাতা পুলিশের হেফাজতে পাঠিয়েছে ।
এরপরেই ব্যাঙ্কশাল আদালত থেকে রাজারামকে বের করে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারের সেন্ট্রাল লক আপে । অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফে । তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি মোবাইল ফোন এবং সেই মোবাইল ফোনের কল লিস্ট খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা । রাজারামকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইছে লালবাজার ৷
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, এই মামলার তদন্তে নেমে আজ সকালে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের একটি ইউনিট শেক্সপিয়ার সরণি থানা এলাকার সেই হোটেলে যান যেখানে রাজারাম দু'রাত কাটিয়েছিলেন ৷ ওখানে গিয়ে তদন্তকারীরা হোটেলের যাবতীয় রেজিস্ট্রেশন খাতা এবং নথিপত্র-সহ সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করেন । ইতিমধ্যেই শেক্সপিয়ার সরণি থানায় 120 বি, 506, 66 এবং 43 আইটি অ্যাক্ট, সেকশন 9 ওয়েস্ট বেঙ্গল মেইনটেন্যান্স অফ পাবলিক অডার অ্যাক্ট এই ধারায় (ষড়যন্ত্র- হুমকি) মামলা রুজু করা হয় ।
সরকারি আইনজীবী সোমা বিশ্বাস এ দিন আদালতে জানান, 12টা 15 মিনিটে গ্রেফতার করা হয় রাজারাম রেগেকে । আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার এবং 26/11 মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার মূল চক্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে যুক্ত এই ব্যক্তি । 14 দিনের (অর্থাৎ 5 তারিখ পর্যন্ত) পুলিশি হেফাজত দেওয়া হোক তাকে । যে মামলার যে আইনে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তার শাস্তির মেয়াদ 10 বছর । যে হোটেলে অভিযুক্ত ছিল, তার সিসিটিভি ফুটেজ এবং বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । এর সঙ্গে এখনও পর্যন্ত 1টা মোবাইল ফোন এবং তার সঙ্গে আরও অনেক কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । রাজারাম কলকাতার যে হোটেলে ছিল, সেই হোটেলের কর্মীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন তদন্তকারীরা ।
আরও পড়ুন: