কলকাতা, 5 ফেব্রুয়ারি: স্লিপারসেলের সদস্যরা শিক্ষিত ৷ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা মাওবাদী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ৷ মাওবাদী নেতা সব্যসাচী গোস্বামী ওরফে কিশোরকে জেরায় লালবাজারের হাতে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷
সম্প্রতি ঝাড়খণ্ড-পুরুলিয়া সীমান্ত থেকে মাওবাদী নেতা সব্যসাচীকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ ৷ এরপর তাদের কাছ থেকে মাওবাদী নেতাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছেন কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারা । আর নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার পরেই তাঁকে লাগাতার জেরা চলছে । আর সেই জেরায় সামনে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য ৷ এই বিষয়ে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশ স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের এক আধিকারিক বলেন, "বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ ফলে সব তথ্য এখনই সামনে আনা উচিত হবে না ।"
জানা গিয়েছে, মাওবাদী নেতা সব্যসাচীকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, রাজ্য এবং কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাদের স্লিপারসেলের সদস্যরা । জেরায় এও জানা গিয়েছে, আগে নব্য এবং আদি স্লিপারসেলের মধ্যে মতানৈক্য এবং দ্বন্দ্ব ছিল ৷ তবে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর অনেকাংশে এই দ্বন্দ্ব মেটানো সম্ভব হয়েছে । এছাড়াও স্লিপারসেলের সদস্যরা উচ্চ পর্যায়ের মাওবাদী বৈঠকে সামিল হয় ৷ মূলত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি মারফত তারা এই বৈঠকে অংশ নেয় বলে সূত্রের খবর ।
তবে কোন কোন প্রযুক্তির মাধ্যমে মাওবাদী ও স্লিপারসেলের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন হয়, সেই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত স্পষ্টভাবে কিছু জানাতে চাইনি কলকাতা পুলিশ । স্পেশাল টাস্ক ফোর্স সূত্রে খবর, লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে সব্যসাচীকে । তাঁর থেকে গোপন এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়ে রাজ্যে ও শহরতলিতে মাওবাদী কার্যকলাপকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে পুলিশ ।
এসটিএফের তরফে জানা গিয়েছে, জঙ্গলমহলে নতুন করে মাওবাদীদের অ্যাকশন স্কোয়াড গড়ে তোলার কাজ করছিলেন সব্যসাচী গোস্বামী । পুরুলিয়ার জঙ্গলমহল ছাড়িয়ে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও বীরভূমেও ছিল তাঁর অবাধ গতিবিধি । রাজ্যে নতুন করে মাওবাদীদের সক্রিয় করতে কাজ করছিলেন তিনি । সেজন্য বাহিনীতে নতুন যুবক-যুবতীদের অন্তর্ভুক্ত করছিলেন 'কিশোরদা' । তাছাড়াও তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন স্লিপারসেলের নতুন সদস্য সদস্যদের সঙ্গে । পুলিশ সূত্রে খবর, 2022 সালে অসমে কয়েকটি নাশকতার ঘটনায় সব্যসাচী গোস্বামীর যোগ পাওয়া গিয়েছে । এরপর তাঁর মাথার দাম 10 লক্ষ টাকা ঘোষণা করে পুলিশ ।
আরও পড়ুন: