কলকাতা, 19 মার্চ: গার্ডেনরিচ থানা এলাকার পাহাড়পুর রোড ৷ ফতেপুরে মাথা তুলে সারি সারি দাঁড়িয়ে রয়েছে একাধিক বহুতল ৷ দু’টি আবাসন কার্যত একে অন্যের গায়ে হেলে পড়েছে । দু’টি বাড়ির মাঝে ব্যবধান এক আঙুলের চেয়েও কম, যা কার্যত নজিরবিহীন । গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনার তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা । ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের নজরে এসেছে ওখানকার বাড়িগুলির অবস্থার ছবি ৷ সংশ্লিষ্ট দু’টি আবাসন নিয়ে মুখ খুলেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও । পাশাপাশি কীভাবে এই দু’টি বিল্ডিংয়ের প্ল্যান স্যাংশন বা পাশ হল তা জানার জন্য এবার পৌর আধিকারিক এবং বেশ কয়েকজন প্রোমোটারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ ।
লালবাজার সূত্রে খবর, বহুতল বিপর্যয়ের ঘটনায় ধৃত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিম ওরফে ওয়াসিকে রাতভর জেরা করেছে গোয়েন্দারা ৷ এই জেরায় আরও পাঁচ থেকে ছ'জন প্রমোটারের নাম পরিচয় জানতে পেরেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । পাহাড়পুর রোডের সামনেই দু’টি বিল্ডিংয়ের মধ্যে এক আঙুলেরও কম ছাড় রয়েছে । যা সচরাচর দেখা যায় না ৷ পাশাপাশি লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগের নজরে রয়েছে কলকাতা পৌরনিগমের বেশ কয়েকজন আধিকারিক ৷ যারা মূলত শহর কলকাতার বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করানোর দায়িত্বে থাকেন ।
জানা গিয়েছে, জেরায় উঠে আসা ওই সকল প্রোমোটার এবং ধীরে ধীরে কলকাতা পৌরসভার বেশ কয়েকজন আধিকারিককে লালবাজারে ডেকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান গোয়েন্দারা । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ধৃত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমকে আলিপুর পুলিশ আদালতে পেশ করা হয়েছে ।
সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের আওতাধীন চারটি থানায় প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিম ওরফে ওয়াসির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, এই প্রোমোটারের স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল ৷ আর তিনি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকতেন ৷ এই প্রোমোটার ওই এলাকাতেই আরও চারটি বিল্ডিং নির্মাণের কাজ করছেন বলে জানা গিয়েছে ৷ বাম আমলে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো অনেক অভিযোগ রয়েছে ওই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে ৷ এছাড়া মধ্য কলকাতার বড়বাজার থানা এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় টানা ন'বছর জেলে ছিলেন ওয়াসিম ৷ তারপরও তৃণমূল পরিচালিত সরকারের আমলে তাঁর এত প্রভাব নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে ৷
আরও পড়ুন: