কলকাতা, 24 জুন: ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সঙ্গেই ডিজিটাল হচ্ছে পুরো দুনিয়া। সেই তালিকায় পিছিয়ে থাকতে নারাজ লালবাজার। ইতিমধ্যেই একাধিক থানার একাধিক বিষয়বস্তু ডিজিটাল হয়েছে। সে থানার জেনারেল ডায়েরি থেকে শুরু করে থানার মালখালা, সবই এখন ডিজিটালের আওতায়। এবার তার সঙ্গে তালমিলিয়ে থানায় আনা হচ্ছে ডিজিটাল অভিযোগের ফাইল।
এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করতে গেলে তাকে হাতে লিখে সেই কাগজ থানায় জমা দিতে হত। পরে সেরেস্তার কনস্টেবল কিংবা কোনও সাব ইনস্পেকটর পদমর্যাদার পুলিশ সেই অভিযোগ নিজেদের কেস ডাইরির খাতায় নিপুনতার সঙ্গে লিখে রাখতেন। লালবাজার সূত্রে খবর, আর কিছুদিন পর থেকে এই খাতায় লেখা ব্যবস্থা উঠে যাবে। তার পরিবর্তে আনা হচ্ছে একটি অনলাইন পোর্টাল। লালবাজার সূত্রে খবর, এই অনলাইন পোর্টাল ব্যবহার করার ক্ষমতা মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি থানাকেই এখন দেওয়া হয়েছে। তারা ব্যবহার করে যদি সফল হয়, সেক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশের বাকি সব থানাতেই চালু করা হবে অনলাইন পোর্টাল ব্যবস্থা।
কিন্তু এই অনলাইন পোর্টাল কীভাবে চালু হবে ? লালবাজার সূত্রে খবর, তারা একটি সংস্থাকে এর দায়িত্ব দেবেন। এখন শুধুমাত্র সে বিষয়ে কথাবার্তা চলছে। এই পদ্ধতিতে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে কাজ করা হবে। সংশ্লিষ্ট পোর্টাল-এর একটি করে পাসওয়ার্ড থাকবে। এক একটি থানার পাসওয়ার্ড আলাদা আলাদা হবে। পাসওয়ার্ড থাকবে থানার ওসি এবং ডিভিশনাল ডিসিদের কাছে। জানা গিয়েছে, মূলত পোর্টালে পুলিশ কর্মীরা এতদিন হাতে লিখে কাগজের যে কেস ডায়েরিগুলি সাজাতেন কিংবা হাতে লিখে কাগজে অভিযোগ তুলে রাখতেন, এবার সেই সবই মোবাইলে অনলাইনে করা হবে। এক ক্লিকেই সেই সমস্থ তথ্য চলে আসবে ডিভিশনাল ডিসি এবং ওসিদের কাছে। তারা চাইলে দিনের যখন খুশি যেখানে সেখানেই অনলাইনের মাধ্যমে দেখতে পারবেন যে এদিন থানায় কতগুলি অভিযোগ জমা পড়েছে। এছাড়াও অনায়াশে ডিভিশনাল ডিসিরাও দেখতে পারবেন কোন কেসের তদন্ত কোন পথে চলছে। পাশাপাশি তদন্তকারী আধিকারিক কে আছেন তাও দেখা যাবে।
এই বিষয়ে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছু কলকাতা পুলিশের আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "এটি গোপনীয়তার সঙ্গে করা হচ্ছে। আজকাল সাইবার দস্যুদের দাপট বেড়েছে। ফলে এই ব্যবস্থাটিকে সাইবার সুরক্ষাও দিতে হবে। পাশাপাশি এই ব্যবস্থা প্রতিটি থানায় চালু হলে অনেক সুবিধা হবে। তার মধ্যে অন্যতম হল, অনেক সময়ই সাধারণ মানুষের পুলিশের প্রতি অভিযোগ থাকে যে তারা থানায় গেলে পুলিশ তাদের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন। তবে অনলাইন মাধ্যমে এই ব্যবস্থা চালু হয়ে গেলে থানার পুলিশ কর্মীকে সেই অভিযোগ নিতেই হবে (যদি অভিযোগটি যথাযথ হয়)। এতে সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে।"