কলকাতা, 26 মে: ফের ভোট প্রচারে বাধা সায়রা শাহ হালিমকে ৷ রবিবার সকালে কলকাতা দক্ষিণের কংগ্রেস সমর্থিত সিপিআই(এম)কে প্রার্থীকে ভোট প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ আগামী 1 জুন কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ ৷ তার আগে শেষ রবিবার সকালে ভোট প্রচারে বেরিয়ে ছিলেন প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম ৷ তাঁর সমর্থনে এসেছিলেন বাম যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, আরেক প্রার্থী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়-সহ 5 জন ৷ বাম যুব নেত্রী মীনাক্ষী পুলিশ অবজারভার সন্তোষ কুমারকে ফোন করেন ৷ তারপরেও তাঁদের প্রচার করতে দেওয়া হয়নি বলেই জানা গিয়েছে ৷ এরপর প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম-সহ বাকিরা বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন ৷ তাঁরা যগুবাবুর বাজার পর্যন্ত রোড-শো করছেন ৷ সেখানেই সভা হওয়ার কথা ৷
কালীঘাট এলাকার হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে 144 ধারা জারি থাকায় বাড়ি বাড়ি দোকানে লিফলেট বিলির সিদ্ধান্ত নেন বাম কর্মী-সমর্থকরা ৷ কিন্তু, সেই সংক্ষিপ্ত প্রচারেও পুলিশি বাধার অভিযোগ উঠল ৷ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এলাকায় ভোট প্রচার করতে দেওয়া যাবে না বলেই জানায় পুলিশ ৷ গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয় রাস্তা ৷ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কেউ উপস্থিত না-থাকায় প্রচারে বাধা দেওয়া হয় পুলিশের তরফে ৷
সূত্রের খবর, সায়রা-মীনাক্ষীরা বারবার পুলিশকে অনুরোধ করলেও কোনও সুরাহা হয়নি ৷ পুলিশের উদ্দেশ্যে মীনাক্ষীকে বলতে শোনা যায়, "এখানে মমতার জন্যই মানুষ ভোট দেবেন ৷ আপনাদের এত চাপ কীসের ৷ কোন ম্যাডাম আসবেন ? তাঁর কি আদৌ ঘুম ভেঙেছে ৷ যদি না ভাঙে তাহলে সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকতে হবে ৷ আমরা সরছি না ৷"
আরও পড়ুন: ভোটের পর মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন না মমতা, হাড়োয়ায় প্রচারে বিস্ফোরক সেলিম
আইনজীবী তথা হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এইভাবে চলতি-ফিরতি সাধারণ মানুষকে পুলিশ বাধা দিতে পারে না ৷ লিফলেট বিলিতে বাধা দিতে পারে না ৷ একজন প্রার্থীকে তাঁরই এলাকায় প্রচারে বাধা দিতে পারে না পুলিশ ৷" তিনি প্রশ্ন করেন, "কীসের ভিত্তিতে পুলিশ বাধা দিচ্ছে ? কোন আইনে বাধা দিচ্ছে ?"
এই পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই নির্বাচন কমিশনের পুলিশ অবজারভার সন্তোষ কুমারকে ফোন করেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ৷ পুলিশি কার্যকালাপের বিস্তারিত তথ্য তাঁকে জানান সিপিআই(এম) যুব নেত্রী ৷ স্থানীয় পুলিশ অবজারভার সন্তোষ কুমার মীনাক্ষীকে জানান মাত্র 2 জন ওই এলাকায় যেতে পারবেন ৷ তাতেই রাজি হন মীনাক্ষীরা ৷ ওই ফোন কল দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশকে ধরতে বলা হলে তিনি ফোন ধরতে অস্বীকার করেন ৷ তখন বাধ্য হয়ে পুলিশ অবজারভার সন্তোষ কুমার বলেন, "আমি লোকাল পুলিশকে ফোন করছি ৷ পরে পুলিশের সঙ্গে তাঁর কথা হয় ৷"
এই ঘটনা প্রসঙ্গে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন, "এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আমাদের হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে আটকে রাখা হল ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলে বেড়ান ৷ অথচ, নিজের পাড়াতে তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে দিচ্ছেন না ৷ পুলিশের জামাকাপড় পরে লেঠেল বাহিনীর কাজ করছে ৷ ভালো জামাকাপড় পরলেই ভদ্র হওয়া যায় না ৷" হাওড়া সিপিএম প্রার্থী তথা আইনজীবী সব্যসাচী বলেন, "এখানে গণতন্ত্র চলছে না ৷ রাজতন্ত্র চলছে ৷ যে কারণে আমাদের প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে ৷" প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম বলেন, "ভয় পেয়েছে ৷ একারণেই আমাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে ৷"
আরও পড়ুন: