কলকাতা, 18 মে: একের পর এক মেট্রো সম্প্রসারণ নিঃসন্দেহে শহুরে জীবনকে আরও গতিময় এবং সুবিধাজনক করে তুলছে। তবে এই গতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে একটা বিরাট অবদান রয়েছে মেট্রো কর্মচারীদের। আর তাতেই পড়ছে টান। তাই এক একজন কর্মচারীর ঘাড়ে চাপছে কাজের বোঝা। যার জেরে প্রায় দিনই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তাঁরা। তাই মেট্রোয় আরও কর্মী নিয়োগ-সহ 12 দফা দাবির পাশাপাশি মেট্রোর বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মদন মিত্রের নেতৃত্বে মেট্রো রেল ভবন অভিযান চালায় তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন মেট্রো রেলওয়ে প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।
শহরের বুকে মাকড়শার জলের মতো বিস্তার হচ্ছে মেট্রো নেটওয়ার্ক। সম্প্রতি চালু হয়েছে তিনটি নয়া রুট। এই বছরের শেষে আরও বেশ কয়েকটি রুট চালু হওয়ার কথা রয়েছে। অথচ মেট্রোয় কর্মীর অভাব রয়েছে বিস্তর। এই বছরের শেষে একাধিক চালক এবং কর্মী অবসর নেবেন। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বেশ কিছু বছর ধরে চালক ও কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে উদাসীন কর্তৃপক্ষ। তাই এক জনের ওপরে বাড়তি চাপ দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্টেশন সুপারভাইজারের সংখ্যাও কমেছে। আগে যেখানে প্রতিটি স্টেশনে একজন করে স্টেশন সুপারভাইজার থাকতেন, এখন বেশ কয়েকটি স্টেশনকে একসঙ্গে করে একজন সুপারভাইজারকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ৷ এর ফলে স্বাভাবিকভাবে কাজের চাপ দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতিক হুগলি নদীর নীচ দিয়ে মেট্রোর যে অংশটি সম্প্রসারণ হয়েছে সে ক্ষেত্রেও প্রাথমিকভাবে মেট্রো কর্মীর অভাব দেখা দিয়েছিল ৷ তবে পরে বাইরের এজেন্সি থেকে কর্মী নিয়ে এসে মেট্রোর পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন সংগঠনের সদস্য সমীর বেরা। তিনি জানান, টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মোটরম্যান তৈরি করা হচ্ছে। কাটছাঁট করার জন্য এই ধরনের একাধিক ব্যবস্থা করছে কর্তৃপক্ষ ৷ এর ফলে শুধু যে কর্মীরাই সমস্যায় পড়ছে তাই নয়, যাত্রী সুরক্ষার ক্ষেত্রেও অনেকটা আপোষ করা হচ্ছে।
এমন একাধিক দাবি-দাওয়া নিয়ে সংগঠনের তরফে মেট্রো ভবন অভিযান করে মেট্রো রেলওয়ে প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন ৷ মেট্রো রেলওয়ে বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছে সংগঠন। এছাড়া তাদের অন্যান্য দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে, রেল বোর্ডের নির্দেশ উপেক্ষা করে বেআইনিভাবে মিনিস্টেরিয়াল ক্যাডারের ক্ষেত্রে সংযুক্তি করা যাবে না, চলতি বছরের শেষে যারা অবসর নেবেন, সেইসব পদ এবং অন্যান্য শূন্য পদে অবিলম্বে নিয়োগ করতে হবে, অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট পোস্টিং এবং প্রমোশন নীতি চালু করতে হবে, সমস্ত চালু রুটের জন্য রেভিনিউ পোস্ট তৈরি করতে হবে, মেট্রোরেলে ট্রাফিক কর্মীদের জন্য অন্য রেলের মতো সমান ভাতা ও সুযোগ সুবিধা দিতে হবে, ট্রাকম্যানদের লাগাতার নাইট ডিউটি বন্ধ করতে হবে, পুরনো পেনশন নীতি অবিলম্বে চালু করতে হবে, অবিলম্বে বকেয়া এমএসসিপি প্রদান করতে হবে, কাউকে অতিরিক্ত কাজ করানো যাবে না, অবিলম্বে মেট্রোরেলে সুস্থ কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ করতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
আরও পড়ুন
কাজ প্রায় শেষ, চালু হচ্ছে নোয়াপাড়া-দমদম ক্যান্টনমেন্ট মেট্রো পরিষেবা !
পোশাকের জন্য কৃষককে মেট্রোতে চড়তে বাধা ! রিপোর্ট তলব জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের