কলকাতা, 13 এপ্রিল: 'এসো হে বৈশাখ...' রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বৈশাখকে সাদর আবেদন জানিয়ে ছিলেন তাঁর গানের মাধ্যমে ৷ এখন পয়লা বৈশাখ এলেই চারিদিকে বেজে ওঠে এই গান ৷ এই বছর বেশ কিছু উৎসব দু’দিন ধরে হচ্ছে ৷ অনেকের মনেই সন্দেহ দেখা দিয়েছে এই বছর পয়লা বৈশাখ কবে ? 14 নাকি 15 এপ্রিল ৷
এই বছর পয়লা বৈশাখ 14 এপ্রিল ৷ বাংলার 1431 সাল শুরু হবে রবিবার থেকে ৷ ছুটির দিন দিয়েই শুরু হচ্ছে বাংলা নববর্ষ ৷
হালখাতা ও লক্ষ্মী-গণেশ পুজোর শুভ সময়:
সারা বছর ব্যবসার হিসেব রাখার জন্য যে খাতার ব্যবহার করা হয় সেটি হালখাতা ৷ লালরঙের বিশেষ ধরনের দেখতে এই খাতায় হিসেব রাখা হয় ৷ সেটি এদিন মন্দিরে পুজো করানো হয় ৷ খাতার উপর পুরোহিত একটি স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে দেন ৷ এই চিহ্ন অত্য়ন্ত শুভ হিসাবে মনে করা হয় ৷ পঞ্জিকা অনুসারে এদিন সারাদিনই শুভ ৷ তবে অন্যান্য দিনের মতো এদিন নির্দিষ্ট একটি শুভ ক্ষণ আছে ৷ সেই ক্ষণ অনুযায়ী গঙ্গাস্নান ও পুজোর একটি নির্দিষ্ট শুভক্ষণ আছে ৷
গঙ্গাস্নান: সকাল 5টা 57 মিনিট থেকে দুপুর 1টা 47 মিনিট ৷
লক্ষ্মী-গণেশ পুজো: সকাল 5.57 মিনিট থেকে দুপুর 12টা 49 মিনিট পর্যন্ত পুজের শুভ সময় ৷
হালখাতা পুজো: সকাল 5টা 49 মিনিট থেকে সকাল 9টা থেকে 30 মিনিট পর্যন্ত এবং দুপুর 12টা 49 মিনিটের পর থেকে 1টা 44 মিনিট, বিকাল 4টে থেকে 4টে 45 মিনিটের মধ্যে হালখাতার পুজো শেষ করতে হবে ৷ তবে যেকোনও ক্ষেত্রেই মনে করা হয়, সমস্ত শুভ কাজ দুপুর 12টার মধ্যে শেষ করা ভালো ৷
হালখাতার ইতিহাস:
কথিত আছে, ভারতে মুঘলদের শাসনকালে ইসলামি হিজরি ক্যালেন্ডার থাকত ৷ সেই ক্যালেন্ডার অনুসারে কর আদায় করা হত ৷ বাঙালিদের সেই ক্যালেন্ডারের সঙ্গে কিছুই মিলত না ৷ এরপরই চালু হয় বঙ্গাব্দ ৷ সেই অনুযায়ী বাংলা ক্যালেন্ডার চালু হয় ৷ বাঙালিদের কাছে পয়লা বৈশাখ হল বছর শুরুর দিন ৷ গৃহপ্রবেশ থেকে যে কোনও ধরণের শুভ কাজের জন্য এই দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে ৷ এদিন হালখাতা করা হয় ৷ দোকানে দোকানে ব্যবসায়ীরা হালখাতা ও লক্ষ্মী-গণেশ পুজো করে ব্যবসার শুভ সূচনা করেন ৷ আর বাঙালির উৎসব মানে মিষ্টিমুখ ৷ হালখাতা উৎসব মিষ্টিমুখ ছাড়া সম্পন্ন হয় না ৷
হালখাতা হল রাজস্ব আদায়ের আরেক নাম ৷ প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী চৈত্র মাসের শেষের রাজস্ব পরিশোধ করার রীতি ছিল ৷ তারপর নববর্ষের দিন থেকে নতুন করে হিসেব-নিকেশ চালু করা হত ৷ সেই রীতি মেনে পুরনো বছরের হিসেব মিটিয়ে নতুন বছরের হিসাব লেখা শুরু হয় ৷ এই রীতি এখনও বাংলার প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও দোকানে পালিত হয় ৷ লাল রঙের কভারের খাতার পুজো করে, প্রথম পাতায় স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে শুরু হয় নতুন বছরের হালখাতা লেখা।
আরও পড়ুন: