ETV Bharat / state

অসময়ে গাছে কাঁঠাল ! সাধারণ মহিলার বেশে গৃহকর্ত্রীকে পুজোর নির্দেশ দেন দেবী - Durga Puja 2024 - DURGA PUJA 2024

Jaynagar Bonedi Bari Durga Puja: পুজো চলে প্রায় 17 দিন ধরে ৷ জয়নগরের মিত্রবাড়ির মা নিজে এসে পুজো শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন জমিদার-গিন্নিকে ৷ তখন থেকেই শুরু এই বাড়ির পুজো ৷ এই পুজোর সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে অসময়ের 'কাঁঠাল-কাহিনি' ৷

Jaynagar Bonedi Bari Durga Puja
জয়নগরের মিত্রবাড়ির দুর্গাপুজো (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 26, 2024, 6:00 PM IST

জয়নগর, 26 সেপ্টেম্বর: খোদ মা দুগ্গা এসে বলেছিলেন তাঁর পুজো শুরু করতে ৷ সেই থেকেই জয়নগরের মিত্র জমিদার বাড়িতে সাড়ম্বরে শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজো । শোনা যায়, স্বয়ং মা দুর্গা সাধারণ মহিলার বেশে এসে জমিদার বাড়ির গৃহকর্তা অন্নদাপ্রসাদ মিত্রের স্ত্রী ভুবনমোহিনী মিত্রকে পুজো শুরু করার কথা বলেন ৷ সেই কয়েক শতাব্দী ধরে দক্ষিণ 24 পরগনার জয়নগরের মিত্র জমিদার বাড়িতে শুরু হয় পুজো ৷ প্রায় 350 বছরেরও বেশি পুরনো মিত্রবাড়ির দুর্গাপুজো ৷ জমিদারি প্রথা না থাকলেও অতীতের নিয়ম মেনে প্রতি বছর পুজো হয় এখানে ।

এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটি অদ্ভুত, কাকতালীয় ঘটনা ৷ বাড়ির একটি কাঁঠাল গাছে দুর্গাপুজোর সময় কাঁঠাল ফলবেই ৷ সেই কাঁঠাল সন্ধি পুজোয় নৈবেদ্য হিসাবে মা দুর্গাকে নিবেদন করা হয় । জমিদার বাড়ির বিশাল ঠাকুর দালানে জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজোর দু'দিন পর থেকেই মূর্তি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায় ৷ তৎকালীন সময়ে জমিদারির সুবাদে সুন্দরবনের কাকদ্বীপ, জয়নগর, কুলতলি, গোসাবা, নামখানা, রায়দিঘি, মথুরাপুর ইত্যাদি এলাকাজুড়ে জমিদারি প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার করেছিল মিত্ররা । অতীতে জমিদার বাড়িতে প্রজারাই পুজোর যাবতীয় জিনিসপত্র পাঠাতেন । পুজোর ক'দিন ভিড়ে গমগম করত মিত্রবাড়ি ৷

জয়নগরের দুর্গাপুজোর ইতিহাস জানুন (ইটিভি ভারত)

কিন্তু, জমিদারির অবসান ঘটার পর অতীতের জৌলুস হারিয়েছে মিত্রবাড়ির পুজো । এখনও প্রাচীন নিয়ম মেনে জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজো ও মহালয়ায় দেবীর চক্ষুদান করা হয় । পূর্বে সাতটি করে পাঁঠাবলির ব্যবস্থা থাকলেও, বর্তমানে দুটি করে পাঁঠা বলি দেওয়া হয় । বাড়ির সামনেই সুবিশাল জলাশয়ে কলা-বৌ স্নান থেকে শুরু করে প্রতিমা বিসর্জন সবটাই হয়ে থাকে । কর্মসূত্রে পরিবারের সদস্যরা ভিন রাজ্যে ও ভিনদেশে থাকলেও পুজোর চারদিন সকলে বাড়ি ফেরেন ৷ বংশ পরম্পরায় মৃৎশিল্পীরা মিত্রবাড়িতে প্রতিমা গড়েন ৷ প্রতিবছর বহু মানুষ ভিড় জমান জমিদার বাড়ির এই পুজো দেখতে ।

এই বিষয়ে পরিবারের সদস্য শুভেন্দু মিত্র জানান, বাংলার অন্যতম প্রাচীন জনপদ জয়নগর । আর এই জয়নগর ও আশপাশের এলাকায় জমিদারির পত্তন করেছিলেন অন্নদাপ্রসাদ মিত্র । আর্থিক অসচ্ছলতার কারণেও পুজোর জৌলুসে কিছুটা খামতি হয়েছে । তবে জৌলুস কমলেও এখনও প্রাচীন রীতি মেনে চলছে দুর্গাপুজা । এক সময় পুজোয় প্রতিদিনই মোষ বলি হত । পরে মোট ন'টা পাঁঠা বলি হতো । তবে এখন মাত্র দুটো বা তিনটে পাঁঠা বলি দেওয়া হয় । এই বাড়ির পুজোতে কোনও অন্নভোগ হয় না । পরিবর্তে লুচি বা শুধুমাত্র ফল, মিষ্টির ভোগ হয় ।

পরিবারের মহিলা সদস্য চন্দা মিত্রের বক্তব্য, এখানে জিতাষ্টমীর পরের নবমীতে বোধন শুরু হয় ৷ তখন থেকেই ব্যস্ততার শুরু ৷ সেই নবমী থেকে বিজয়া দশমীর আগের নবমী পর্যন্ত প্রতিদিন 40টা করে বেলপাতা দিয়ে দেবীর পুজো হয় ৷ বলতে গেলে, এখানে পুজো চলে প্রায় 17 দিন ধরে ৷

জয়নগর, 26 সেপ্টেম্বর: খোদ মা দুগ্গা এসে বলেছিলেন তাঁর পুজো শুরু করতে ৷ সেই থেকেই জয়নগরের মিত্র জমিদার বাড়িতে সাড়ম্বরে শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজো । শোনা যায়, স্বয়ং মা দুর্গা সাধারণ মহিলার বেশে এসে জমিদার বাড়ির গৃহকর্তা অন্নদাপ্রসাদ মিত্রের স্ত্রী ভুবনমোহিনী মিত্রকে পুজো শুরু করার কথা বলেন ৷ সেই কয়েক শতাব্দী ধরে দক্ষিণ 24 পরগনার জয়নগরের মিত্র জমিদার বাড়িতে শুরু হয় পুজো ৷ প্রায় 350 বছরেরও বেশি পুরনো মিত্রবাড়ির দুর্গাপুজো ৷ জমিদারি প্রথা না থাকলেও অতীতের নিয়ম মেনে প্রতি বছর পুজো হয় এখানে ।

এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটি অদ্ভুত, কাকতালীয় ঘটনা ৷ বাড়ির একটি কাঁঠাল গাছে দুর্গাপুজোর সময় কাঁঠাল ফলবেই ৷ সেই কাঁঠাল সন্ধি পুজোয় নৈবেদ্য হিসাবে মা দুর্গাকে নিবেদন করা হয় । জমিদার বাড়ির বিশাল ঠাকুর দালানে জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজোর দু'দিন পর থেকেই মূর্তি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায় ৷ তৎকালীন সময়ে জমিদারির সুবাদে সুন্দরবনের কাকদ্বীপ, জয়নগর, কুলতলি, গোসাবা, নামখানা, রায়দিঘি, মথুরাপুর ইত্যাদি এলাকাজুড়ে জমিদারি প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার করেছিল মিত্ররা । অতীতে জমিদার বাড়িতে প্রজারাই পুজোর যাবতীয় জিনিসপত্র পাঠাতেন । পুজোর ক'দিন ভিড়ে গমগম করত মিত্রবাড়ি ৷

জয়নগরের দুর্গাপুজোর ইতিহাস জানুন (ইটিভি ভারত)

কিন্তু, জমিদারির অবসান ঘটার পর অতীতের জৌলুস হারিয়েছে মিত্রবাড়ির পুজো । এখনও প্রাচীন নিয়ম মেনে জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজো ও মহালয়ায় দেবীর চক্ষুদান করা হয় । পূর্বে সাতটি করে পাঁঠাবলির ব্যবস্থা থাকলেও, বর্তমানে দুটি করে পাঁঠা বলি দেওয়া হয় । বাড়ির সামনেই সুবিশাল জলাশয়ে কলা-বৌ স্নান থেকে শুরু করে প্রতিমা বিসর্জন সবটাই হয়ে থাকে । কর্মসূত্রে পরিবারের সদস্যরা ভিন রাজ্যে ও ভিনদেশে থাকলেও পুজোর চারদিন সকলে বাড়ি ফেরেন ৷ বংশ পরম্পরায় মৃৎশিল্পীরা মিত্রবাড়িতে প্রতিমা গড়েন ৷ প্রতিবছর বহু মানুষ ভিড় জমান জমিদার বাড়ির এই পুজো দেখতে ।

এই বিষয়ে পরিবারের সদস্য শুভেন্দু মিত্র জানান, বাংলার অন্যতম প্রাচীন জনপদ জয়নগর । আর এই জয়নগর ও আশপাশের এলাকায় জমিদারির পত্তন করেছিলেন অন্নদাপ্রসাদ মিত্র । আর্থিক অসচ্ছলতার কারণেও পুজোর জৌলুসে কিছুটা খামতি হয়েছে । তবে জৌলুস কমলেও এখনও প্রাচীন রীতি মেনে চলছে দুর্গাপুজা । এক সময় পুজোয় প্রতিদিনই মোষ বলি হত । পরে মোট ন'টা পাঁঠা বলি হতো । তবে এখন মাত্র দুটো বা তিনটে পাঁঠা বলি দেওয়া হয় । এই বাড়ির পুজোতে কোনও অন্নভোগ হয় না । পরিবর্তে লুচি বা শুধুমাত্র ফল, মিষ্টির ভোগ হয় ।

পরিবারের মহিলা সদস্য চন্দা মিত্রের বক্তব্য, এখানে জিতাষ্টমীর পরের নবমীতে বোধন শুরু হয় ৷ তখন থেকেই ব্যস্ততার শুরু ৷ সেই নবমী থেকে বিজয়া দশমীর আগের নবমী পর্যন্ত প্রতিদিন 40টা করে বেলপাতা দিয়ে দেবীর পুজো হয় ৷ বলতে গেলে, এখানে পুজো চলে প্রায় 17 দিন ধরে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.