কলকাতা, 20 জুন: কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেতু হল শিয়ালদহ স্টেশন লাগোয়া বিদ্যাপতি সেতু । বয়সের ভারে তা ক্রমশ জীর্ণ হচ্ছে । স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টেও খারাপ অবস্থার বিষয়টি ধরা পড়েছে । দরকার জরুরি ভিত্তিতে আমূল সংস্কারের । তবু কাজ শুরু করা যাচ্ছে না সেতুর, নিচে থাকা বিরাট বাজার হল সংস্কারে কাঁটা । বাজার সরবে কোথায় ? সেই দ্বন্দ্বে আটকে কাজ । আগামী মঙ্গলবার জট কাটাতে যৌথ ভাবে পরিদর্শন করবে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) এবং কলকাতা কর্পোরেশন ও বাজার সংগঠন ।
বছর কয়েক আগে মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয় রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছিল রাজ্য প্রশাসনকে । তারপরেই রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উড়ালপুল, সেতু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা শুরু হয় । ইতিমধ্যে টালা সেতু সম্পূর্ণ ভেঙে নতুন করা হয়েছে । চিৎপুর ও কালীঘাট সেতু ভাঙার পরিকল্পনা আছে । নতুন করে হবে । তবে কলকাতার বুকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেতুগুলোর মধ্যে বিদ্যাপতি সেতুর নাম তালিকার উপরে । যার স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে এবার তোড়জোড় শুরু করেছে কেএমডিএ । এর আগে ভার পরীক্ষা হয়েছিল । এবার ঢেলে হবে সংস্থার । সেই কাজের জন্য প্রায় 15 কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে ।
জীর্ণ সেতুর সংস্কার অনেক আগেই করানো উচিত ছিল বলে মানছেন কেএমডিএ কর্তারা । নিচের বিরাট মার্কেটের স্থানান্তরের কারণের সমস্যার কারণে তা কিছুতেই হয়ে উঠছে না । প্রায় হাজারখানেক দোকান । সংস্কারের কাজ হলে সরাতে হবে সেইসব দোকান । কিন্তু এত দোকান সংস্কার কাজ চলা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকলে রুটি-রুজির আঘাত আসবে এই হাজার খানেক দোকান মালিক ও তাঁদের দোকানের কর্মীদের পরিবারে । ফলে সেই কারণেই এতদিন কাজ করা যায়নি । তবে সেতুর পরিস্থিতি বর্তমানে যা, তাতে সংস্কার কাজ শুরু করেতেই হবে যেকোনও অবস্থায় । না হলে অচিরেই মাঝেরহাটের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলেই আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের ।
এদিকে দোকানদারদের কথায়, তাদের নিরাপত্তার কারণে সেই কাজ করতে দিতে আপত্তি নেই ৷ তাঁরা সরে যাবেন । কিন্তু কোথায় যাবেন ? এটাই এখন বহু মূল্যের প্রশ্ন । কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের ধারকাছ কোনও বড় জমি নেই । ফলে পুরো বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পৌরনিগমকে উদ্যোগ নিতে হবে ।
কেএমডিএ সূত্রে খবর, সমস্যা কাটিয়ে কাজ এগোতে ঠিক হয়েছে আসছে মঙ্গলবার যৌথ পরিদর্শন হবে । কাউন্সিলর, বাজার সংগঠন, কেএমডিএ, কর্পোরেশনের প্রতিনিধিরা থাকবে । ধাপে ধাপে দোকান সরিয়ে কাজ করা যায় কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে । 9 কোটি টাকার কাছে খরচ হবে সংস্কার কাজে । সেতুতে প্রতিটা পিলারের গায়ে লোহার খাঁচা দিয়ে কংক্রিট ওয়াল কভার করা হবে । এতে পিলারগুলো আরও শক্তপোক্ত হবে । বেশ কিছু অংশ ভেঙে ঠিক করতে হবে । সেতুর চারটি পথের রিলিং নতুন করে করা হবে । প্রায় 5 কোটি টাকা খরচ পিচের আস্তরণ তুলে নতুন রাস্তা করা হবে ।