কলকাতা, 11 অগস্ট: সম্পত্তি কর জমা দেওয়ার নিয়মে বড় বদল এল। বকেয়া করের উপর সুদ এবং জরিমানায় আর মোটা ছাড় মিলবে না নতুন নিয়মে। এই নিয়মের মূল দিক হল যত দিন বেশি কর বকেয়া থাকবে তত কম ছাড় মিলবে সুদ ও জরিমানায়। তাছাড়া নাগরিকরা যত দ্রুত বকেয়া কর জমা দেবেন তত বেশি ছাড় মিলবে সুদ ও জরিমানায়। কলকাতায় বর্তমানে সম্পত্তি কর দেন কমবেশি 9.5 লাখ নাগরিক। এর মধ্যে 3.5 লাখ থেকে 4 লাখ করদাতাই নির্দিষ্ট সময় সম্পত্তি কর জমা করেন না। নতুন নিয়ম তাঁদের অভ্যাসে বদল আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই প্রবণতা বেশি দেখা যায় বাণিজ্যিক ভবনগুলির করদাতাদের মধ্যে। এখন বকেয়া করের পরিমাণ প্রায় সাড়ে 3 হাজার থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যেই বেশ বড় অঙ্কের টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছে পুরনিগম। সেই টাকা সহজে আদায়ের বিশেষ আশা নেই। এতদিন কলকাতা কর্পোরেশনের নিয়ম অনুসারে একসঙ্গে দীর্ঘদিনের বকেয়া সম্পত্তি কর মেটালে সুদের উপর 50 শতাংশ ছাড় মিলত। তার সঙ্গেই জরিমানার 99 শতাংশ টাকাও মুকুব হয়ে যেত। এবার আর তা হবে না।
কেমন এই নতুন নিয়ম?
কর্পোরেশনের এক আধিকারিক বলেন, "নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। ফলে এখন কোনও করদাতা কর ফেলে রাখলে তাঁকে সুদ ও জরিমানা দুটোই বেশি পরিমাণে দিতে হবে। তাই দীর্ঘদিন ধরে কর না মেটানোর প্রবণতা কমবে বলেই আশা রাখছি।" এই নতুন নিয়মে সম্পত্তি কর বাবদ আয় বেশ খানিকটা বৃদ্ধি পেতে পারে বলেই আশাবাদী পুরনিগম।
কোনও করদাতার কর বকেয়ার সময়কাল যদি দু'বছর পর্যন্ত হয় সেক্ষেত্রে সুদে 50 শতাংশ ও জরিমানার উপর 99 শতাংশ ছাড় মিলবে। কর বকেয়া দু'বছরের বেশি ও পাঁচ বছরের কম সময়কালের জন্য হলে সুদে 45 শতাংশ ও জরিমানায় 75 শতাংশ পর্যন্ত ছাড় মিলবে। সম্পত্তি কর 5 বছরের বেশি ও 10 বছরের কম সময় যদি বকেয়া থাকে তাহলে সেই কর মেটালে সুদে 35 শতাংশ ও জরিমানায় 50 শতাংশ ছাড় মিলবে। 10 বছরের বেশি সময় ধরে বকেয়া থাকা কর মেটানোর ক্ষেত্রে সুদে 30 শতাংশ ও জরিমানায় 25 শতাংশ ছাড় মিলবে।
নতুন নিয়ম ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে নাগরিকদের মধ্যে । নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক টালিগঞ্জের বাসিন্দা এক করদাতা জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় বা অসচ্ছলতার কারণে সম্পত্তির কর বকেয়া পরে যায় । সেখানে সুদ ও জরিমানায় আগের মতো ছাড় থাকলে উৎসাহ পাওয়া যেত বকেয়া মেটাতে। বর্তমান নিয়মে হয়তো একাধিক করদাতা উৎসাহ হারাবেন। তবে বাণিজ্যিক করদাতারা কর দিতে বাধ্য হবেন। তার ইতিবাচক প্রভাব কর্পোরেশন পেলেও পেতে পারে । সাধারণ করদাতাদের কাছে এই নিয়ম খুব সুখকর নয়।