ব্যারাকপুর, 12 জুলাই: আড়িয়াদহকাণ্ডে বিস্ফোরক কামারহাটির প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর। দলের সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উলটো পথে হেঁটে ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত জয়ন্ত সিংয়ের বাড়বাড়ন্তের জন্য এবার সরাসরি দলীয় নেতৃত্বের একাংশকে দায়ী করলেন তৃণমূল নেতা দেবাশিস মহাপাত্র । তিনি বলেন, "এদের সঙ্গে লড়াই আমাদের চলছে । দলের একটা অংশ লড়াই করছে। আরেকটা অংশ এদের সমর্থন করছে। এটা খোলাখুলি বলছি। তবে সবাই জয়ন্ত এন্ড কোম্পানির সঙ্গে আছেন এমন নয়! এদের সঙ্গে আমাদের লড়াই অতীতেও ছিল। আজও আছে ৷"
অতীতে জয়ন্তর 'দাদাগিরি' প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন কামারহাটি পুরসভার 15 নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন এই তৃণমূল কাউন্সিলর। তাঁর কথায়, "অতীতে একদিন হঠাৎই দেখলাম পার্টির মিটিং চলাকালীন দলবল নিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েছেল জয়ন্ত সিং। তখন আমি এর প্রতিবাদ করেছিলাম। তখন মদন মিত্রকে জিজ্ঞাসা করি, এরা কারা ? পার্টিতে এদের অবদান কী ? সেদিন ওদের আমি পার্টির মিটিং থেকে বের করে দিয়েছিলাম ৷ এরকম ঘটনা বহু আছে । জয়ন্ত সিং ও তাঁর দলবলের কার্যকলাপের প্রতিবাদ সবসময় করে এসেছি । যখনই জয়ন্ত'র দাদাগিরি চোখে পড়েছে, তখনই তার কৈফিয়ৎ চেয়েছি ।" জয়ন্ত সিংয়ের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন বলে আজ তাঁকে ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন শাসকদলের এই প্রাক্তন কাউন্সিলর।
জয়ন্ত সিংয়ের এই অন্যায় অত্যাচার দলের কাউকে জানাননি ? এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতার সাফ জবাব, "খুব যন্ত্রণা হয়৷ কিন্তু কাকে বলব এসব কথা ? তেমন কোনও লোক পায়নি, যে তাঁকে বলা যাবে ।" সেইসঙ্গে নাম না-করে তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক মদন মিত্রকে কটাক্ষ করে দেবাশিস বলেন, "আমার নেতা যদি বলে, ও (জয়ন্ত সিং) মালার লকেট ! তাহলে আমরা কারা ? আমরা তো শীতেঘুমে চলে গেলাম । প্রশাসনের কেউ না-দিলে একজনের বাড়বাড়ন্ত হতে পারে না । প্রশাসন অথবা দল ছাড়া কারও প্রশয় থাকতে পারে না । আমার সঙ্গেও ওর (জয়ন্ত সিং) অনেকবার অশান্তি হয়েছে । এটাও একটা কারণ আমাকে কোনঠাসা করার ।"
অভিযোগ, কামারহাটির আরেক প্রাক্তন কাউন্সিলর সুবীর বোস ওরফে লাল্টুর বাড়িতে হামলা করেছিলেন জয়ন্ত ও তাঁর বাহিনী ৷ সেই ঘটনাতেও দলের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দেবাশিস । তাঁর কথায়, "দল যদি তখন ব্যবস্থা নিত, তাহলে আজকে আর এই দিন দেখতে হত না। এটা আমার থেকে লাল্টুই ভালো জানে।"