কালনা, 20 অক্টোবর: বিচারপতিরা বিজেপির লোক ! এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন কালনার তৃণমূলের বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ ৷ এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে বিচারপতিরা ষড়যন্ত্র করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি ৷ আরজি কর ইস্যুতে আদালতে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ সেই কারণেই তৃণমূল বিধায়ক সরাসরি বিচারবিভাগকে নিশানা করলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷
শনিবার কালনা-2 ব্লকের সিঙ্গেরকোনে বিজয়া সম্মিলনী থেকে আরজি কর ইস্যু নিয়ে বিরোধী বিজেপি ও বামেদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ ৷ তাঁর মতে, বিচারবিভাগ প্রতি ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে সব রায় দিচ্ছে ৷ যা স্পষ্টত ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন তিনি ৷ এ প্রসঙ্গে 14 অগস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতালে হামলার ঘটনা এবং নবান্ন অভিযান নিয়ে পুলিশি ভূমিকায় আদালতের পর্যবেক্ষণকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কালনা বিধায়ক ৷
তিনি বলেন, "বিচারপতিরা শুরু থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ও তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে সব রায় দিচ্ছেন ৷ দেখুন, 14 অগস্ট রাত দখলের নামে আরজি করে হামলা হল ৷ সেই ঘটনায় আদালত রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল ৷ বিচারপতিরা বললেন, 'এত বড় হামলার ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ আগে কিছুই জানতে পারল না ?' আবার নবান্ন অভিযানে পুলিশ যখন আগে থেকে ব্যবস্থা নিল, তখন বিচারপতিরা প্রশ্ন তুলছেন, 'পুলিশ আগে থেকে কীভাবে জানল নবান্ন অভিযানে বিশৃঙ্খলা হতে পারে ?' কী আশ্চর্যের বিষয় ৷"
এরপরেই বিচারপতিদের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ তোলেন দেবপ্রসাদ বাগ ৷ তিনি বলেন, "আসলে সবটাই একটা ষড়যন্ত্র ৷ বিচারপতিরা সব বিজেপির লোক ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে ৷ হয়তো প্রশ্ন উঠবে, আমি কেন বিচারপতিদের আক্রমণ করছি ! বিচারপতিরা যে বিজেপির লোক, তা প্রমাণিত ৷ অবসরের পর কেউ লোকসভার প্রার্থী হচ্ছেন, তো আবার কেউ কোনও রাজ্যে গভর্নর হয়ে যাচ্ছেন ৷"
স্বভাবতই কালনার বিধায়করে মন্তব্যে বিতর্ক চরমে উঠেছে ৷ এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও সংস্কৃতি নেই ৷ এটাই ওদের সংস্কৃতি ৷ ওরা চায়, সমস্ত কিছুই ওদের পক্ষে যাক ৷ একের পর এক দুর্নীতি করে যাবে, আর তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের মতো বিচারপতিরা সব চোখ বুজে দেখে যাবেন, এটা তো হতে পারে না ৷ তাঁরা সঠিক বিচার করে রায় দিচ্ছেন ৷ ফলে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা-মন্ত্রীরা জেলে যাচ্ছেন ৷ সেটা তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না ৷ আসলে তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে ৷ তাই ওদের নেতা-মন্ত্রীদের নীতিজ্ঞান লোপ পেয়েছে ৷ সেটাই প্রমাণ করে দিলেন তৃণমূল বিধায়ক ৷"