বোলপুর, 1 জানুয়ারি: অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে রাজমুকুট পরলেন কাজল শেখ ! নানুরে মিলন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রায় 5 কেজি ওজনের রুপোর মুকুট পরানো হল বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে ৷ যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে ৷
উল্লেখ্য, আগে অনুব্রত মণ্ডলকে রুপোর মুকুট, তরোয়াল উপহার দেওয়ার নজির ছিল এই জেলায় ৷ তবে, এ-বছর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে মিলন মেলায় অনুপস্থিত অনুব্রত ৷ তাঁর বদলে মেলার সূচনা করলেন কাজল শেখ ৷
প্রতি বছর এই দিনে নানুরের বাসাপাড়ায় একটি মেলার আয়োজন করা হয় ৷ সেই মতো এদিন থেকে শুরু হল মিলন মেলা ৷ 7 জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে মেলা ৷ তবে, এর আগে প্রতি বছর মেলার আয়োজন করে এসেছেন বীরভূম জেলা পরিষদের প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আবদুল করিম খান ৷ যিনি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ৷
প্রসঙ্গত, নানুরের বাসাপাড়ায় এই মিলন মেলার মাঠ নিয়েও বিতর্ক রয়েছে ৷ একাধিক মানুষের জমি জবরদখল করে এই মেলার মাঠ গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ ৷ তাঁদের থেকে বলপূর্বক লিখিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে ৷ এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয় ৷ বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে তদন্ত চলছে ৷ আর সেই অভিযোগের জেরেই আবদুল করিম খানকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট দেয়নি তৃণমূল ৷
এই মাঠে এ দিন নানুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে শুরু হল মিলন মেলা ৷ যার আয়োজনের পিছনে রয়েছেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি ফয়জুল হক ওরফে কাজল শেখ ৷ উল্লেখ্য, মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন দলের বীরভূম জেলার কোর কমিটির সদস্য অনুব্রত মণ্ডল ৷ কিন্তু, তিনি অনুপস্থিত ছিলেন ৷ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রায় পাঁচ কেজি রুপোর মুকুট পরানো হল অনুব্রতর প্রতিপক্ষ হিসাবে পরিচিত কাজল শেখকে ৷
ফলে জেলার রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, তবে কি ধীরে-ধীরে বীরভূমের নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হচ্ছে অনুব্রতর ৷ আর এতদিন যে মুকুট 'কেষ্ট'র মাথায় উঠতো, তা এবার কাজল শেখের মাথায় উঠল ৷ এসব কি বীরভূমে তৃণমূলের সংগঠনে বদলের ইঙ্গিত ৷ এমন নানান প্রশ্ন উঠে আসছে ৷
যদিও, অনুব্রত মণ্ডলের বদলে তাঁকে রুপোর মুকুট পরানোর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন কাজল শেখ ৷ তবে, অনুব্রতর অনুপস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, "শুধু অনুব্রত মণ্ডল নন ৷ বীরভূম জেলার তৃণমূলের কোর কমিটির সকল সদস্যকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ৷ সবাই নিজের নিজের এলাকায় কাজে ব্যস্ত আছেন ৷ আশা করছি সন্ধেয় বা আগামিকাল থেকে সবাই আসবেন ৷"