কলকাতা, 21 সেপ্টেম্বর: শনিবার থেকে কাজে যোগ দিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ সেই মতো আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররাও জরুরি পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছেন ৷ তবে, 14 অগস্টে ভাঙচুরের ঘটনার পর এখনও আগের অবস্থায় ফেরেনি আরজি করের জরুরি বিভাগ ৷ ফলে ট্রমা কেয়ারে জরুরি পরিষেবা দিচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ অন্যদিকে, আরজি কর মেডিক্যালের ধরনা মঞ্চ খোলা নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয় ৷ ডেকরেটরের লোকজন এসে ধরনা মঞ্চ খুলতে শুরু করেন ৷ যা নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বচসায় জড়ান ডেকরেটরের মালিক ৷
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ট্রমা কেয়ার বিভাগেই জরুরি পরিষেবা দিচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ সেখানেই সব রোগী পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে ৷ তবে, জরুরি বিভাগের যেসব সুবিধা ছিল, তা রোগীদের পুরোপুরি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না ৷ উল্লেখ্য, গত 14 অগস্ট রাতে কয়েক হাজার দুষ্কৃতী আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালায় ৷ এর ফলে বহু দামি জিনিসপত্র ও জীবনদায়ী ওষুধ নষ্ট হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে জরুরি বিভাগ এখনও রোগী পরিষেবার জন্য তৈরি করা সম্ভব হয়নি ৷
পরিষেবা শুরু হলেও, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ ৷ তিনি বলেন, "আমাদের এখানে আন্দোলন চলবে ৷ এর পাশাপাশি আমরা আজ থেকে জরুরি পরিষেবা চালু করেছি ৷ অনেকেই উই ওয়ান্ট জাস্টিস ব্যাজ লাগিয়ে চিকিৎসা করছেন ৷ তবে, আমাদের দাবিগুলি নিয়ে আমরা ভিতর থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাব ৷" অন্যদিকে, স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চলাকালীন রাস্তায় বিভিন্ন স্লোগান লেখা হয়েছিল আন্দোলনকারীদের তরফে ৷ আজ দেখা গেল, সেই স্লোগানগুলি আলকাতরা দিয়ে মুছে দেওয়া হয়েছে ৷
এ নিয়ে জুনিয়র ডাক্তার কিঞ্জল নন্দ বলেন, "আমাদের অবস্থান উঠেছে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকে ৷ তবে, আন্দোলন আমরা এখনও তুলিনি ৷ আর স্লোগান, দেওয়াল লিখন আলকাতরা হোক বা বৃষ্টির জলে ধুয়ে দিলেও, মানুষের মনে যে আন্দোলনের ছাপ পড়েছে ৷ সেই আন্দোলনকে কোনও আলকাতরা দিয়ে মোছা সম্ভব নয় ৷"
অন্যদিকে, আজ হঠাৎই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান মঞ্চ খুলতে শুরু করে ডেকরেটরের লোকজন ৷ যা নিয়ে হইচই পড়ে যায় হাসপাতাল চত্বরে ৷ ডেকরেটর মালিক আনন্দমোহন রায় দাবি করেন, আরজি করের কোনও এক 'ডাক্তার ম্যাডাম' তাঁকে ফোন করে মঞ্চ খুলে দিতে বলেছেন ৷ সেই মতো তিনি লোকজন এনে অবস্থান মঞ্চ খোলার কাজ শুরু করেন ৷ তবে, অন্যান্য জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁকে বাধা দিলে, ডেকরেটর মালিক বচসায় জড়ান ৷
তাঁর স্পষ্ট দাবি ছিল, "যে ম্যাডাম ফোনে বুকিং করেছিলেন, তিনিই ফোন করে মঞ্চ খুলে নিতে বলেছেন ৷ তাই আমি মঞ্চ খুলে নিচ্ছি ৷ এখানে আর কারও কথা আমি শুনতে পারব না ৷" তবে, কে সেই ম্যাডাম, তাঁর নাম বলতে পারেননি ডেকরেটর মালিক ৷ এরই মধ্যে অবস্থান মঞ্চের সামনে চলে আসেন আরজি কর-কাণ্ডে প্রতিবাদের অন্যতম মুখ জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো ৷ তিনি ডেকরেটর মালিকের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করেন ৷ জানানো হয়েছে, ডেকরেটর মালিককে মঞ্চ ছোট করতে বলা হয়েছিল ৷ তিনি বুঝতে ভুল করায়, একটা ভুলবোঝাবুঝি হয়েছে ৷ তবে, অবস্থান মঞ্চ খোলা হবে না-বলে জানিয়েছেন অনিকেত মাহাতো ৷
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও এ দিন জরুরি পরিষেবা শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, "সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা চিন্তা করে আমরা কাজ শুরু করেছি ৷ তবে, আমাদের দাবিতে আন্দোলন জারি থাকবে ৷ আমাদের দাবিপূরণ না-হলে আবারও বৃহত্তর পর্যায়ে আন্দোলন শুরু হবে ৷"