কলকাতা, 10 অক্টোবর: জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশনের 100 ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে । ক্রমেই অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে । তাঁদের সবারই ওজন কমেছে ৷ তাঁদের শারীরিক পরীক্ষার পর এমনটাই জানালেন চিকিৎসকরা । অনিকেত মাহাতোর শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকরা ৷
প্রতিদিন চিকিৎসকদের প্রতিনিধিরা এসে অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থা দেখে যান । নিয়ম মেনে রক্তচাপ, শরীরের শর্করার মাত্রা-সহ সব পরীক্ষা করা হয় । সেই পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, অনশনের জেরে ক্রমেই বিপদ বাড়ছে জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর । যা রীতিমতো ভয় ধরিয়ে দিয়েছে সকল চিকিৎসকের মনে ।
আরজি কর হাসপাতালে আনাস্থেশিয়া বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক সৈকত নিয়োগী জানান, "অনিকেতের মূত্রে কিটোন বডি পাওয়া গিয়েছে । সাধারণত এটা খুবই চিন্তার বিষয় । কারণ কিটোন বডি তখনই পাওয়া যায়, যখন শরীরে গ্লুকোজ এবং গ্লাইকোজেন শেষ হয়ে যায় । এর মানে হল, ওঁর শরীরে লিভার ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না । এই কিটোন বডি শরীরে জমা হতে থাকলে, যে কোনও সময় রোগী কোমায় চলে যেতে পারেন । কারণ কিটোন বডি মূলত একটা অ্যাসিড । শরীরে এক ফোঁটাও এই কিটোন বডি থাকা উচিত নয় ।"
সপ্তমীর সকালের মেডিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী তিনের বেশি কিটোন বডি পাওয়া গিয়েছে অনিকেতের মূত্রে । মূলত না-খেয়ে থাকলে এবং অস্বাভাবিকভাবে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে এই কিটোন বডি শরীরে জমা হয় ।
তবে শুধু অনিকেত মাহাতোই নন, শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে বাকি 6জন অনশনকারী জুনিয়র চিকিৎসকেরও । এসএসকেএম হাসপাতালে প্রাক্তন অধ্যাপক চিকিৎসক অসীম মাইতি বলেন, "স্নিগ্ধা ও সায়ন্তনীর অবস্থাও ধীরে ধীরে খারাপ হচ্ছে । ওঁদের শরীরে রক্তচাপ বর্তমানে শিশুর সমান । এছাড়াও শরীরে সিবিজি অর্থাৎ ক্যাপিলারি ব্লাড গ্লুকোজের মাত্রা কমছে । সিবিজি 60-এর নীচে নেমে গেলে শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায় । এর প্রভাব পড়ে সরাসরি কিডনিতে । তারপর ধীরে ধীরে মাল্টি অর্গান ফেলিয়র হতে পারে ।"
উল্লেখ্য, তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও মৃত্যুর ন্যায়বিচার-সহ তাঁদের 10 দফা দাবি নিয়ে 'রাজ্য সরকার সদর্থক পদক্ষেপ না-করায়' গত শনিবার রাত সাড়ে আটটা থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ তাঁদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে রাজ্যের বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকরা গণইস্তফা দিয়েছেন ৷