আসানসোল, 17 জানুয়ারি: ক্রমেই বনপ্রাণ পাচারের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠছে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় থাকা আসানসোলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল । গতবছর শীতের মরশুমেই আসানসোলে উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর পরিমাণে প্যাঙ্গোলিনের আঁশ । এবার প্যাঙ্গোলিনের আঁশের সঙ্গেই উদ্ধার হল দুর্মূল্য সম্বর হরিণের সিংয়ের টুকরো । 11টি হরিণের সিংয়ের টুকরো ও প্যাঙ্গোলিনের 7টি আঁশ উদ্ধার হয়েছে । পাচারের আগেই কুলটির চলবলপুর থেকে উদ্ধার হয় সেগুলি । গ্রেফতার করা হয়েছে দুজনকে ।
বনদফতরের আসানসোল রেঞ্জ অফিসের রেঞ্জার তমালিকা চন্দ্র জানান, "আমরা গোপন সূত্রে খবর পাই যে, ঝাড়খণ্ডের দুই বাসিন্দা কুলটির চলবলপুরে একটি ম্যারেজ হলে কিছু বন্যপ্রাণের অংশ পাচারের উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছেন । আমরা সেখানে হানা দিই । পাচার রোধ করা গিয়েছে । দু'জনকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে । উদ্ধার হয়েছে 11টি সম্বর হরিণের সিংয়ের টুকরো ও 7টি প্যাঙ্গোলিনের আঁশ ।"
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দু'জনের নাম গনেশ প্রসাদ ও সুকুমার বাউরি । দু'জনেই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা । আসানসোল রেঞ্জ অফিসের রেঞ্জার তমালিকা চন্দ্র জানান, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে ঝাড়খণ্ড থেকেই এই বন্যপ্রাণের অংশ পাচারের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল । কুলটি থানার চলবলপুরের একটি ম্যারেজ হলে এ রাজ্যের কোনও ক্রেতাকে বিক্রয় করে দেওয়া হত । কিন্তু তার আগেই দু'জনকে ধরা হয় । উদ্ধার হয় ওই বন্যপ্রাণের অংশগুলো । রেঞ্জার তমালিকা চন্দ্রের কথায়, "বন্যপ্রাণের অংশ চিরকালই দুর্মূল্য । তাই এগুলির দাম নির্ধারণ ওইভাবে করা যায় না ।"
বিশিষ্ট ওয়াইল্ড লাইফ ফোটোগ্রাফার ও বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উইংসের সভাপতি সপ্তর্ষী মুখোপাধ্যায় ইটিভি ভারতকে ফোনে জানান, "মূলত হরিণের সিং দিয়ে বিভিন্ন দুমূর্ল্য শো পিস তৈরি হয়, চিরুনি-সহ আরও নানা দামি সৌখিন জিনিস তৈরি হয় । এছাড়াও চিনে ওষুধ তৈরির জন্য এই জিনিসের চাহিদা বিরাট । প্যাঙ্গোলিনের আঁশ দিয়ে দামী প্রসাধন তৈরি হয় । ভারতের প্রসাধন বাজারে এটি অত্যন্ত দামি জিনিস ।"
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই পাচারকারীরা আন্তঃরাজ্য বন্যপ্রাণ পাচারকারী ৷ ধৃতদের শুক্রবার আসানসোল আদালতে তোলা হয় । তাঁদের হেফাজতে নিয়ে এই চক্রের আরও তথ্য পেতে চাইছে বনদফতর ।