আসানসোল ও পুরুলিয়া, 20 সেপ্টেম্বর: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ভিন রাজ্যের পণ্যবাহী লরি এ রাজ্যে ঢুকতে পারছে না। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো ভিন রাজ্য থেকে আসা লরিগুলিকে 19 নম্বর জাতীয় সড়কের চেকপোস্টে আটকে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এই অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। শয়ে শয়ে লরি দাঁড়িয়ে আছে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায়। সীমানা সিল করে দেওয়ায় পুরুলিয়ার ঝাড়খণ্ড সীমানায় দাঁড়িয়ে রয়েছে শ'য়ে শ'য়ে ট্রাক ৷
এই ঘটনার প্রতিবাদে ঝাড়খণ্ডের কমিউনিস্ট পার্টি (এমসিসি) সে রাজ্যে অবরোধ শুরু করেছে। যার ফলে এই রাজ্য থেকে যে লরিগুলি ঝাড়খণ্ডের দিকে যাচ্ছিল সেগুলিকেও আটকে দেওয়া হয়েছে। আটকে পড়েছে যাত্রীবাহী বাস ও অন্য গাড়িও। চূড়ান্ত নাকাল হচ্ছেন চালক ও যাত্রীরা ৷ রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা-ঘাটের অবস্থা খারাপ, এমন কারণ দর্শিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ভিন রাজ্য থেকে আসা পণ্যবাহী লরিগুলিকে বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানায় আটকে রাখতে বলা হয়েছে।
তিনদিন ধরে এই লরিগুলিকে নাকি রাজ্যে ঢোকার ক্ষেত্রে দেওয়া হবে না কোনও প্রবেশ অধিকার। এর মধ্যে বহু লরিতে রয়েছে আপেল । কোনও লরিতে রয়েছে ন্যাসপাতি । কেউ কেউ বা আবার কাঁচা সবজি নিয়ে আসছেন অন্য রাজ্য থেকে। এক চালক জানান, 12 লক্ষ টাকার আপেল তাঁরা নিয়ে আসছেন নাসিক থেকে। কিন্তু সীমানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফলে আপেল পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নষ্ট হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে কাঁচা সবজি-সহ আর অন্যান্য জিনিসপত্র। এমনকী সীমানায় দাঁড়িয়ে রয়েছে এয়ারফোর্সের হেলিকপ্টারের যন্ত্রপাতিবোঝাই গাড়ি।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঝাড়খণ্ডের কমিউনিস্ট পার্টি এমসিসি সেরাজ্যের বর্ডারেও অবরোধ ডেকেছে ৷ যার ফলে এরাজ্য থেকে কোনও লরি বা যাত্রী, কোনও বাস-গাড়ি কিছুই ওই রাজ্যে প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে আরও অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায়। এ রাজ্য থেকেও যাওয়া কাঁচা সবজি, পান এমনকী অনেক কিছুই আটকে পড়েছে সীমানায়। ফলে সে সবকিছুতেও পচন ধরে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত কোনও রফাসূত্র বেরিয়ে আসেনি। সীমানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ ও ট্রাফিক গার্ডদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উপর মহলের নির্দেশ অনুযায়ী তারা এই নিয়ম মানছে। যতক্ষণ পর্যন্ত অন্য কোনও নির্দেশ না-আসে ততক্ষণ পর্যন্ত ভিন রাজ্যের পণ্যবাহী লরির ক্ষেত্রে সীমানা খোলা হবে না।
এদিকে, পুরুলিয়া জেলার ঝাড়খণ্ড সীমানার কাছের এলাকায় দাঁড়িয়ে রয়েছে শ'য়ে শ'য়ে ট্রাক। ওই ট্রাক চালকদের ক্ষোভ, হঠাৎ করেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এই বন্ধের বিষয়ে আগাম কিছু জানতেন না। রাকেশ কুমার নামে এক ট্রাকচালক বলেন , "ঝাড়খণ্ডে কোনও ড্যাম থেকে জল ছাড়ার জন্য নাকি বাংলার গ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে । সেই কারণে আমাদের আটকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা বৃহস্পতিবার থেকে দাঁড়িয়ে আছি। খাবার, পানীয় জল কিছুই পাচ্ছি না। আমাদের কী দোষ?"