কলকাতা, 20 এপ্রিল: ঝাড়গ্রামে একসময় ছিল সিপিএমের দুর্গ । মাওবাদীদের দৌরাত্ম্য যখন জঙ্গলমহলে প্রবল, সেই সময় সেখানে এক সময় সিপিএম কর্মীদের একের পর এক ক্ষতবিক্ষত দেহ মিলেছে । এর পর ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল । লাল দুর্গ হয়েছে সবুজ । কিন্তু মাওবাদীদের সময়ের মতো তৃণমূল জমানাতেও সিপিএম কর্মীদের ঘরছাড়া হতে হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে বারবার । এদিকে গত লোকসভায় এই আসনে পদ্ম ফোটে ৷ এই প্রেক্ষাপটে লাল ঝান্ডা ভরসা রেখেছে প্যাড ওম্যান আদিবাসী কন্যা সোনামণি টুডুর উপর ।
তিনি কি পারবেন ? ইটিভি ভারতের সামনে আত্মবিশ্বাসী শোনা গেল এবার লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম আসনে সিপিএম প্রার্থী সোনামণি টুডুর গলায় ৷ তিনি বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম জুড়ে মাওবাদীদের প্রভাব ছিল । একসময় সিপিএম নেতা কর্মীদের বেছে বেছে খুন করেছে । প্রচারে বেরিয়ে সেই সন্ত্রাসের কথা আমজনতার মুখে শুনেছি । এখন দিদি আর মোদির অত্যাচারে অতিষ্ট মানুষ । মুখ খুলছেন । তাঁরা আবার লাল ঝান্ডাকেই ফেরাতে চাইছে ।’’
তিনি দাবি করলেও সবুজ থেকে শেষবার ঝাড়গ্রাম গেরুয়া হয়েছে । উড়েছে পদ্ম শিবিরের গেরুয়া পতাকা । উত্তরে সোনামণি টুডু বলেন, ‘‘এটা সত্যি যে আমাদের ভোট কমেছে । অন্যদিকে বিজেপি অর্থ বলে লড়াই করছে । সংবিধান মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোট করলে মোদি 400 পার নয়, 40 পার করবে না দেশে । আমজনতা সঠিক ভাবে বিনাবাধায় তাঁর ভোট দিতে পারুক । পুলিশ-প্রশাসন নজর রাখুক ।’’
মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভোট চাইছেন তিনি ৷ তবে মানুষের কী কী সমস্যা তাঁর চোখে পড়ছে ? তিনি বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম লোকসভায় মানুষের সমস্যা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার । সবার আগে মানুষের দু’বেলা দু’মুঠো ভাত দরকার । এখানে প্রান্তিক মানুষের দরিদ্র মানুষের হাতে কাজ নেই । 2021 থেকে 100 দিনের প্রকল্পের কাজও বন্ধ । জঙ্গলমহলে মানুষ কৃষির উপর বেশি ভরসা করেন । চাষ যাঁরা করেন এখন সার, বীজ, কীটনাশকের দাম যা, সেটায় খুব লাভ হয় না । ফসলের ন্যূনতম দাম সরকারের তরফে দেওয়া উচিত ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘শিক্ষার হল খারাপ । তবু বাবা মায়েরা ছেলে মেয়েকে কষ্ট করে পড়ান । বিদ্যালয়ের অবস্থা খারাপ, বাড়ির শিক্ষকের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে । যারা এখানে কষ্ট করে পড়ছে তাদের চাকরি জুটছে না । এটার জন্য আমার লড়াই । একটা চাকরি পাক, পেট চালাতে পারুক । এসসি, এসটির আবাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । এটার বিরুদ্ধে লড়াই ।’’
কোন কোন দাবিকে সামনে রেখে ভোট প্রচার করছেন সোনামণি ? তিনি বলেন, ‘‘আমি চাই সকলের হতে কাজ হোক । 100 দিনের কাজ 200 দিন হোক । নূন্যতম মজুরি পাক মানুষ । নিয়োগ হচ্ছে না শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ ঠিক করে হোক । কাজের জন্য বাইরে যেতে না হয় । শিক্ষা, কাজ থেকে পেটের ভাত সকলের অধিকার । মহিলাদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমার লড়াই । সন্দেশখালি একটা উদাহরণ ৷ রাজ্যের আরও বহু জায়গায় মহিলারা অত্যাচারিত হচ্ছেন । অনেক জায়গায় অভিযোগ পর্যন্ত দায়ের হচ্ছে না ।’’
আরও পড়ুন: