কলকাতা, 2 অক্টোবর: উৎসবের আমেজ শুরু না হতে হতেই বিষাদের সুর কলকাতার বাঁশদ্রোণীতে । বুধবার সকালে কোচিং সেন্টারে যাওয়ার পথে জেসিবির ধাক্কায় মৃত্যু এক পড়ুয়ার । মৃত কিশোরের নাম সৌম্য শীল । গঙ্গাপুরী শিক্ষা সদন স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া সে । দীনেশ নগরের 113 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই ছাত্রের মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে ক'দিন ধরে রাস্তায় সারাইয়ের কাজ চলছিল ৷ দ্রুতগতিতে যাওয়ার ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জেসিবি ধাক্কা মারে ওই ছাত্রকে । রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি । এরপরই এলাকায় শোরগোল পড়ে যায় । ঘাতক জেসিবি ভাঙচুর করেন স্থানীয়রা ।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পুলিশ । যদিও স্থানীয়দের একাংশ পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন । বাঁশদ্রোণী থানা ও পাটুলি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিককে ঘিরে নানা প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন বিক্ষোভকারীরা । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত 15 বছর ধরে বেহাল দশা রাস্তার । কখনও অর্ধেক কাজ হয় । সব টাকা নিয়ে চম্পট দেয় ঠিকাদাররা । কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা । স্থানীয়দের অভিযোগ, কাউন্সিলর অনিতা কর মজুমদারকে বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি ।
যদিও কলকাতা পুরনিগমের 113 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিতা কর মজুমদার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনাটিকে 'দুর্ভাগ্যজনক' বলে মন্তব্য করেছেন । তবে এর জন্য পুরনিগম দায়ী নয় বলে তাঁর দাবি । কারণ, রাস্তা মেরামতির কাজ করছিল ঠিকাদার সংস্থা । তারাই এই ঘটনায় কাঠগড়ায় তুলেছেন কাউন্সিলর । দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার দীর্ঘসময় পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ ৷ যার ফলে এলাকাবাসীদের ক্ষোভ আরও চরমে ওঠে ।
স্থানীয়দের দাবি, বহুদিন ধরে এলাকার রাস্তা খারাপ রয়েছে । মেরামতির কাজে চলছে দীর্ঘদিন ধরে । এর মাঝে বৃষ্টি ও জলজমার কারণে খানাখন্দ ভরে গিয়েছে । হেঁটে চলাফেরা করে দায় হয়ে পড়েছে । ফলে এরকম একটা জায়গায় কাজ করতে আরও সতর্কতার প্রয়োজন ছিল ৷ কিন্তু তা নেওয়া হয়নি । সেই কারণেই এই দুর্ঘটনা । ফলে সকাল থেকে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা এখনও অব্যাহত ৷ পরিস্থিতির মোকাবিলায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে এলাকায় । কিন্তু স্থানীয়রা নিজেদের দাবিতে অনড় । স্থানীয় কাউন্সিলর এবং স্থানীয় বিধায়ক ঘটনাস্থলে না আসা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলতে থাকবে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন ।