কলকাতা, 10 সেপ্টেম্বর: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদীরা সকলেই যে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এ কথা মানতে রাজি নন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। ইতিমধ্যেই আরজি করের ঘটনাকে সামনে রেখে নিজের সাংসদ পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রাক্তন আমলা। বিস্ফোরক চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁর পদত্যাগের ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে তিনি এবার উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়ের কাছে সময় চাইলেন। সেইসঙ্গে তিনি বললেন, "সঠিক সময় মুখ্যমন্ত্রী পদক্ষেপ করলে আজ পরিস্থিতি তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত না।"
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে দিল্লিতে নেই উপরাষ্ট্রপতি। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্তফা দেওয়া হয়নি প্রসার ভারতীর এই প্রাক্তন সিইও-র। তবে তিনি ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন, আগামিকাল, বুধবার দিল্লি গিয়ে পদত্যাগ করতে আবেদন করে আসবেন। এরপর উপরাষ্ট্রপতি যেদিন সময় দেবেন সেদিনই গিয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দেবেন। মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর চিঠি দিয়ে পদত্যাগের ইচ্ছেপ্রকাশ করার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকে তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছিল। প্রাক্তন আমলাকে অনুরোধ করা হয়েছিল এই মুহূর্তে তিনি যেন পদত্যাগ না-করেন। কিন্তু তাতেও রাজি হননি জহর ।
তিনি জানিয়েছেন, এই অবস্থায় নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরছেন না। একইসঙ্গে তিনি এটাও বলছেন, আরজিকর নিয়ে একাংশ রাজনীতি করছে এটা সত্যি। কিন্তু যাঁরা আরজি কর ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছেন তাঁরা সবাই রাজনীতির অংশ বা রাজনীতি করছেন এমনটা মানতে তিনি রাজি নন। তাঁর কথায়, প্রতিবাদকারীদের বৃহদাংশের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। তাঁরা স্বেচ্ছায় এই প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করছেন । তাঁরা 'রাজনীতি করছেন' বলে দাগিয়ে দেওয়াটা ঠিক নয় ৷
জহর সরকারের আরও দাবি, "আরজি করের ঘটনায় দলনেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে সক্রিয়তা তিনি আশা করেছিলেন তা দেখতে পাননি। এমনকী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে যে ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে তাকেও তিনি সমর্থন করেন না। আর এই অবস্থায় এসব মেনে নিয়ে তার পক্ষে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে যাওয়া সম্ভব না। আর সে কারণেই সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রেখে উপরাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগের জন্য আবেদন করছেন। যেভাবে বিভিন্ন পেশার মানুষ থেকে শুরু করে রিকশাওয়ালারাও প্রতিবাদে নেমেছেন এটা কোনওদিন রাজনৈতিক আন্দোলন হতে পারে না। এদিন তিনি এও বলেছেন, সঠিক সময় মুখ্যমন্ত্রী পদক্ষেপ করলে আজ পরিস্থিতি তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত না ৷