মালদা, 18 মার্চ: লোকসভা নির্বাচনের ডঙ্কা বেজে গিয়েছে ৷ ইতিমধ্যে তৃণমূল তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে ৷ আংশিক তালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপিও ৷ দু'দলের প্রার্থীরা প্রচার ময়দানে নেমে পড়েছেন ৷ শুরু হয়ে গিয়েছে বাক্যবাণেরও লড়াই ৷ এরই মধ্যে রবিবার দলীয় কর্মীসভা করেন তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষনেতা ফিরহাদ হাকিম ৷ কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে বারবার তাঁর গলায় উঠে এসেছে জেলার প্রবাদপ্রতিম রাজনৈতিক নেতা বরকত গণি খান চৌধুরীর নাম ৷
বরকত বরবর্তী জমানায় তৃণমূলই যে প্রয়াত নেতার আদর্শ বহন করে চলছে, সেটাও বারবার উল্লেখ করেছেন তিনি ৷ এককথায় ববি বুঝিয়ে দিয়েছেন, এবার বরকত সাহেবের নাম ব্যবহার করেই জেলার দুই প্রার্থী ভোটের ময়দানে নামবেন ৷ সোমবার তাঁর সেই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া শোনা গিয়েছে প্রয়াত নেতার উত্তরসূরি, গণি খানের ভ্রাতুষ্পুত্র ঈশা খান চৌধুরীর মন্তব্যে ৷ রবিবার মালদা কলেজ অডিটোরিয়ামে কর্মিসভা শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ববি বলেন, "এবার আমরা মানুষকে বলছি, সম্পূর্ণভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিশ্বাস করুন ৷ মালদাবাসীকেও সেকথাই বলছি ৷ বরকতদার কংগ্রেস এখন আর সেই কংগ্রেস নেই ৷ এখন তাঁরা বামফ্রন্টের সঙ্গী হয়েছে ৷"
তিনি আরও বলেন, "বরকতদার স্বপ্ন ছিল, সিপিএমকে বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলা ৷ সেই স্বপ্নপূরণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাই যে কংগ্রেস সিপিএমের হাত ধরে রয়েছে, শুধু নামসর্বস্ব হয়ে রয়েছে, সেটা আর কংগ্রেস নয় ৷ আসল কংগ্রেস হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো শক্তি এখন বাম কিংবা কংগ্রেসের নেই ৷ তাই এবার কেউ যেন কংগ্রেস বা অন্যদের ভোট দিয়ে বিজেপিকে সাহায্য না করেন ৷" সোমবার কোতওয়ালি ভবনে বসে এরই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা বরকত সাহেবের ভ্রাতুষ্পুত্র ঈশা খান চৌধুরী ৷
ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, "আমার জ্যেঠু সারাজীবন একটিই দল করেছেন ৷ তা হল কংগ্রেস ৷ বেঁচে থাকাকালীন তিনি অনেক দল থেকেই যোগদানের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন ৷ কিন্তু কখনও অন্য কোনও দলে যাননি ৷ তিনি মানুষের সেবাকেই সবার আগে রেখেছিলেন ৷ এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাঁর নাম ব্যবহার করার জন্যই মালদায় আসছে ৷ বরকত সাহেবের নাম ব্যবহার করা এক জিনিস, আর তাঁর মতো কাজ করা আলাদা জিনিস ৷ বরকত সাহেব নিঃস্বার্থভাবে মালদার মানুষের সেবা করেছেন ৷ তিনি সবার সঙ্গে একভাবে মিশতেন ৷ কিন্তু কখনও কোথাও থেকে অবৈধভাবে টাকা আদায় করেননি ৷
তাঁর আরও সংযোজন, "তিনি বাংলার লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়েকে চাকরি দিয়েছেন ৷ এখন এই রাজ্যে টাকা ছাড়া কোনও কাজের কথা ভাবা যায়! তিনি এখনও মালদার মানুষের মনে রয়েছেন ৷ তাই ভোটের মুখে তাঁর নাম ব্যবহার করতেই অন্য দলগুলি সচেষ্ট ৷ কাজের কাজ কেউ করে না ৷ আমরা এখনও তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলেছি ৷ তাই আমরা কেউ অন্য দলে যাইনি ৷ আমাদের দলের প্রায় সবাই অন্য দলে যোগদানের অফার পেয়েছেন ৷ কেউ যাননি ৷ আমরা গরিব মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে পারি না ৷"
আরও পড়ুন: