ETV Bharat / state

জুন-অগ্নিমিত্রাকে পিছনে ফেলে মেদিনীপুরে কি সিপিআইয়ের বিপ্লব হবে? - Biplab Mitra

Biplab Mitra: মেদিনীপুর লোকসভা আসন একসময় সিপিআই-এর শক্তঘাঁটি ছিল ৷ কিন্তু গত দু’টি লোকসভা নির্বাচনে ওই আসনে জিততে পারেনি সিপিআই ৷ গতবার প্রার্থী হয়ে সিপিআই-এর বিপ্লব ভট্ট পেয়েছিলেন 65 হাজার ভোট ৷ এবারও তিনি প্রার্থী ৷ ভোটের ময়দানে এবারের লড়াই থেকে বিরোধী তৃণমূল ও বিজেপি সম্পর্কে সব প্রশ্নের উত্তর ইটিভি ভারত-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন বিপ্লব ভট্ট ৷

Biplab Mitra
Biplab Mitra
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 1, 2024, 5:44 PM IST

জুন-অগ্নিমিত্রাকে পিছনে ফেলে মেদিনীপুরে কি সিপিআইয়ের বিপ্লব হবে?

মেদিনীপুর, 1 মে: আগামী 25 মে ষষ্ঠ দফায় ভোট নেওয়া হবে মেদিনীপুর লোকসভা আসনে ৷ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ওই আসনে মূল লড়াই তৃণমূল কংগ্রেসের জুন মালিয়া ও বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের মধ্যে ৷ রাজ্যের দুই মহিলা বিধায়কের সাংসদ হওয়ার এই লড়াইকে ছাপিয়ে মেদিনীপুরে কি ‘বিপ্লব’ হবে ? সেখানকার সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব ভট্ট কি পারবেন মেদিনীপুরে বামেদের বিজয় নিশান ওড়াতে ?

ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তাঁর গলার আশার সুরই শোনা গেল ৷ তাই খড়গপুরের আদি বাসিন্দা বিপ্লব ভট্ট জুন বা অগ্নিমিত্রা কাউকে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন ৷ জানাচ্ছেন, তাঁর লড়াই দু’জনের সঙ্গেই ৷ কারণ, বামেরাই একমাত্র মানুষের হয়ে লড়াই করে ৷ গতবার তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধেই লড়তে হয়েছিল তাঁকে তৃণমূলের মানস ভুঁইয়া ও বিজেপির দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সেই লড়াইয়ে পেয়েছিলেন মাত্র 65 হাজার ভোট ৷ এবার কি পারবেন ?

Biplab Mitra
মেদিনীপুরে প্রচারে সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব মিত্র৷

নিজের জয়ের আশার কথা শোনানোর পাশাপাশি তিনি গতবার হারের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন ৷ বিপ্লব ভট্টর কথায়, ‘‘গতবারে একটা পরিস্থিতি ছিল যে এই চোর তৃণমূলকে রুখতে বিজেপিকে মানুষ বেছে নিয়েছিলেন । পরবর্তীকালে মানুষ বুঝতে পারেন তৃণমূল চোর হলে বিজেপি ডাকাত । যারা হাম দো আর হামারা দো-র কাজ করছে আম্বানী-আদানির হয়ে ।ফলে এবারের লড়াই আমজনতা ভার্সেস মোদি৷ মানুষ প্রস্তুত আছেন ।’’

Biplab Mitra
মেদিনীপুরে প্রচারে সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব মিত্র৷

বিজেপির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভও উগড়ে দিয়েছেন তিনি ৷ দাবি করেছেন, সারা দেশে বিজেপি এবার দেড়শোরও বেশি আসনে জিততে পারবে না ৷ বিজেপির বিরুদ্ধে তিনি ধর্ম নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন ৷ তৃণমূল কংগ্রেস-সহ অন্য অনেক দলও একই কাজ করছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন ৷ তাই তিনি চান ধর্ম নিয়ে কথা না বলে মানুষের জন্য কাজ করতে ৷ ভোটে জিতে মানুষের কথা সংসদে তুলে ধরতে ৷

Biplab Mitra
মেদিনীপুরে প্রচারে সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব মিত্র৷

সেই কারণে বিপ্লব ভট্ট ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে ভোটে জেতার পর তাঁর কাজ কী কী হবে ৷ এই নিয়ে ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, ‘‘বিগত দিনে বামপন্থীদের ফেলে আসা কাজগুলো বাস্তবে রূপায়িত করব । এছাড়াও তিন ফসলি জমিতে চাষের জন্য জলের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে নষ্ট হয়ে যাওয়ার টিউবয়েলগুলো চালু করব এবং কৃষিকে ভিত্তি করে শিল্প করে কর্মসংস্থান করব । বেকারদের জন্য কাজের সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা করব ।’’

Biplab Mitra
মেদিনীপুরে প্রচারে সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব মিত্র৷

1980 সাল থেকে 2014 মেদিনীপুরে সিপিআই-এর সাংসদ ছিল ৷ 2014 সালে মেদিনীপুরের তিনবারের সাংসদ সিপিআই-এর প্রবোধ পাণ্ডাকে হারিয়ে লোকসভার সদস্য হন তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ধ্যা রায় ৷ 2019 সালে ওই আসনে জেতেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ ৷ তিনি এবার আর মেদিনীপুরে প্রার্থী হননি ৷ তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনে ৷ তবে দিলীপের দাবি যে তিনি মেদিনীপুরের জন্য সাংসদ তহবিলের সব অর্থই খরচ করেছেন ৷

এই নিয়ে বিপ্লব ভট্টর বক্তব্য, "সাংসদ পাঁচ বছর ধরে কাজ করেন ৷ আর তাঁর হিসেব চায় জনগণ ৷ কিন্তু আমরা দিলীপ ঘোষ এবং তার আগে প্রাক্তন সাংসদ সন্ধ্যা রায়কে দেখেছি । তাঁরা হিসেব চাওয়ার আগেই মেদিনীপুর ছেড়ে চলে গিয়েছেন । এই সাংসদরা এমপি ল্যাডের টাকা ছাড়া কোনও কিছুই খরচ করেননি । আমাদের প্রাক্তন সাংসদ প্রবোধ পাণ্ডা তাঁর উদ্যোগে মেদিনীপুরে উড়ালপুল নিয়ে এসেছিলেন । খড়গপুরের খরিদাতে ব্রিজ পাশ করিয়ে এনেছিলেন লালু প্রসাদ যাদব রেলমন্ত্রী থাকাকালীন । মানুষ সেলিব্রেটিদের জেতালেই তাঁরা সংসদে গিয়ে মানুষের হয়ে লড়াই করেন না ৷ বরং আমরা মেদিনীপুরের মানুষ যাঁরা জিতলে সংসদে গিয়ে আমার মেদিনীপুরের মানুষের জন্য লড়াই করব ।’’

তাঁর কথায় মানুষ বিশ্বাস করবেন না, সেটা তো ভোটের ফলে প্রমাণ পাওয়া যাবে ৷ কিন্তু দল বা ফ্রন্টের অন্দরে তিনি প্রার্থী হিসেবে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পেরেছেন ? কারণ, তাঁর প্রচারে সেভাবে বড় নেতাদের দেখা যাচ্ছে না ৷ যদিও এই দ্বন্দ্বের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন বিপ্লব ভট্ট ৷ তাঁর পালটা দাবি, ফ্রন্টের সবদলই তাঁর সমর্থনে রয়েছেন ৷ কংগ্রেসও শীঘ্রই প্রচারে নামবে ৷ জাতীয়স্তরে নেতারাও মেদিনীপুরে তাঁর সমর্থনে প্রচারে আসবেন ৷

তাই শেষ পর্যন্ত প্রচারে কতটা ছাপ ফেলতে পারছেন, মানুষ তাঁকে কতটা গ্রহণ করলেন, সেটাই এখন দেখার !

আরও পড়ুন:

  1. অর্জুন-পার্থদের সঙ্গে লড়াই, ভালো ফলের আশায় সিপিএমের দেবদূত
  2. প্রার্থী না হওয়া থেকে জোট প্রসঙ্গ, ইটিভি ভারতে অকপট ভাইজান
  3. কৃষি বলয়-চা বলয়-পৌরসভা এলাকার জন্য লোকসভায় আওয়াজ তুলব: ইটিভি ভারতে অকপট নির্মল

জুন-অগ্নিমিত্রাকে পিছনে ফেলে মেদিনীপুরে কি সিপিআইয়ের বিপ্লব হবে?

মেদিনীপুর, 1 মে: আগামী 25 মে ষষ্ঠ দফায় ভোট নেওয়া হবে মেদিনীপুর লোকসভা আসনে ৷ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ওই আসনে মূল লড়াই তৃণমূল কংগ্রেসের জুন মালিয়া ও বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের মধ্যে ৷ রাজ্যের দুই মহিলা বিধায়কের সাংসদ হওয়ার এই লড়াইকে ছাপিয়ে মেদিনীপুরে কি ‘বিপ্লব’ হবে ? সেখানকার সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব ভট্ট কি পারবেন মেদিনীপুরে বামেদের বিজয় নিশান ওড়াতে ?

ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তাঁর গলার আশার সুরই শোনা গেল ৷ তাই খড়গপুরের আদি বাসিন্দা বিপ্লব ভট্ট জুন বা অগ্নিমিত্রা কাউকে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন ৷ জানাচ্ছেন, তাঁর লড়াই দু’জনের সঙ্গেই ৷ কারণ, বামেরাই একমাত্র মানুষের হয়ে লড়াই করে ৷ গতবার তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধেই লড়তে হয়েছিল তাঁকে তৃণমূলের মানস ভুঁইয়া ও বিজেপির দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সেই লড়াইয়ে পেয়েছিলেন মাত্র 65 হাজার ভোট ৷ এবার কি পারবেন ?

Biplab Mitra
মেদিনীপুরে প্রচারে সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব মিত্র৷

নিজের জয়ের আশার কথা শোনানোর পাশাপাশি তিনি গতবার হারের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন ৷ বিপ্লব ভট্টর কথায়, ‘‘গতবারে একটা পরিস্থিতি ছিল যে এই চোর তৃণমূলকে রুখতে বিজেপিকে মানুষ বেছে নিয়েছিলেন । পরবর্তীকালে মানুষ বুঝতে পারেন তৃণমূল চোর হলে বিজেপি ডাকাত । যারা হাম দো আর হামারা দো-র কাজ করছে আম্বানী-আদানির হয়ে ।ফলে এবারের লড়াই আমজনতা ভার্সেস মোদি৷ মানুষ প্রস্তুত আছেন ।’’

Biplab Mitra
মেদিনীপুরে প্রচারে সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব মিত্র৷

বিজেপির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভও উগড়ে দিয়েছেন তিনি ৷ দাবি করেছেন, সারা দেশে বিজেপি এবার দেড়শোরও বেশি আসনে জিততে পারবে না ৷ বিজেপির বিরুদ্ধে তিনি ধর্ম নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন ৷ তৃণমূল কংগ্রেস-সহ অন্য অনেক দলও একই কাজ করছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন ৷ তাই তিনি চান ধর্ম নিয়ে কথা না বলে মানুষের জন্য কাজ করতে ৷ ভোটে জিতে মানুষের কথা সংসদে তুলে ধরতে ৷

Biplab Mitra
মেদিনীপুরে প্রচারে সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব মিত্র৷

সেই কারণে বিপ্লব ভট্ট ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে ভোটে জেতার পর তাঁর কাজ কী কী হবে ৷ এই নিয়ে ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, ‘‘বিগত দিনে বামপন্থীদের ফেলে আসা কাজগুলো বাস্তবে রূপায়িত করব । এছাড়াও তিন ফসলি জমিতে চাষের জন্য জলের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে নষ্ট হয়ে যাওয়ার টিউবয়েলগুলো চালু করব এবং কৃষিকে ভিত্তি করে শিল্প করে কর্মসংস্থান করব । বেকারদের জন্য কাজের সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা করব ।’’

Biplab Mitra
মেদিনীপুরে প্রচারে সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব মিত্র৷

1980 সাল থেকে 2014 মেদিনীপুরে সিপিআই-এর সাংসদ ছিল ৷ 2014 সালে মেদিনীপুরের তিনবারের সাংসদ সিপিআই-এর প্রবোধ পাণ্ডাকে হারিয়ে লোকসভার সদস্য হন তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ধ্যা রায় ৷ 2019 সালে ওই আসনে জেতেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ ৷ তিনি এবার আর মেদিনীপুরে প্রার্থী হননি ৷ তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনে ৷ তবে দিলীপের দাবি যে তিনি মেদিনীপুরের জন্য সাংসদ তহবিলের সব অর্থই খরচ করেছেন ৷

এই নিয়ে বিপ্লব ভট্টর বক্তব্য, "সাংসদ পাঁচ বছর ধরে কাজ করেন ৷ আর তাঁর হিসেব চায় জনগণ ৷ কিন্তু আমরা দিলীপ ঘোষ এবং তার আগে প্রাক্তন সাংসদ সন্ধ্যা রায়কে দেখেছি । তাঁরা হিসেব চাওয়ার আগেই মেদিনীপুর ছেড়ে চলে গিয়েছেন । এই সাংসদরা এমপি ল্যাডের টাকা ছাড়া কোনও কিছুই খরচ করেননি । আমাদের প্রাক্তন সাংসদ প্রবোধ পাণ্ডা তাঁর উদ্যোগে মেদিনীপুরে উড়ালপুল নিয়ে এসেছিলেন । খড়গপুরের খরিদাতে ব্রিজ পাশ করিয়ে এনেছিলেন লালু প্রসাদ যাদব রেলমন্ত্রী থাকাকালীন । মানুষ সেলিব্রেটিদের জেতালেই তাঁরা সংসদে গিয়ে মানুষের হয়ে লড়াই করেন না ৷ বরং আমরা মেদিনীপুরের মানুষ যাঁরা জিতলে সংসদে গিয়ে আমার মেদিনীপুরের মানুষের জন্য লড়াই করব ।’’

তাঁর কথায় মানুষ বিশ্বাস করবেন না, সেটা তো ভোটের ফলে প্রমাণ পাওয়া যাবে ৷ কিন্তু দল বা ফ্রন্টের অন্দরে তিনি প্রার্থী হিসেবে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পেরেছেন ? কারণ, তাঁর প্রচারে সেভাবে বড় নেতাদের দেখা যাচ্ছে না ৷ যদিও এই দ্বন্দ্বের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন বিপ্লব ভট্ট ৷ তাঁর পালটা দাবি, ফ্রন্টের সবদলই তাঁর সমর্থনে রয়েছেন ৷ কংগ্রেসও শীঘ্রই প্রচারে নামবে ৷ জাতীয়স্তরে নেতারাও মেদিনীপুরে তাঁর সমর্থনে প্রচারে আসবেন ৷

তাই শেষ পর্যন্ত প্রচারে কতটা ছাপ ফেলতে পারছেন, মানুষ তাঁকে কতটা গ্রহণ করলেন, সেটাই এখন দেখার !

আরও পড়ুন:

  1. অর্জুন-পার্থদের সঙ্গে লড়াই, ভালো ফলের আশায় সিপিএমের দেবদূত
  2. প্রার্থী না হওয়া থেকে জোট প্রসঙ্গ, ইটিভি ভারতে অকপট ভাইজান
  3. কৃষি বলয়-চা বলয়-পৌরসভা এলাকার জন্য লোকসভায় আওয়াজ তুলব: ইটিভি ভারতে অকপট নির্মল
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.