দার্জিলিং, 29 জুলাই: আজ বিশ্ব বাঘ দিবস। বিশেষ এই দিনে রয়্যাল বেঙ্গল পরিবারের সদস্যদের কথা উঠলে সবার আগে যা মাথায় আসে তা হল বেঙ্গল সাফারি পার্ক। রাজ্যে তো বটেই, দেশের মধ্যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণ ও প্রজননে নজির তৈরি করেছে এই সাফারি পার্ক । বাঘদের নিজের পরিবারের সদস্যদের মতো যারা ভালোবেসে তিলে তিলে বড় করে তুলেছেন, আজ তাঁদের নিয়ে ইটিভি ভারতের এই বিশেষ প্রতিবেদন। আজকের বিশেষ দিনে সাফারি পার্কের কর্তার বার্তা-
হলুদ-বরণ কালো ডোরা জঙ্গলের এই শান-
মাংশাসী প্রাণী আমি, শক্তিতে বলবান,
তীক্ষ্ণ দাঁত, ধারালো নখ, ভয়ানক থাবার জোর ৷
জাতীয় পশু বলে সবাই এই পরিচয় মোর ৷
জঙ্গলটা হচ্ছে ধংব্বস, সবাই যে আজ বিপন্ন-
আকুতি করি সবার তরে, দাও ফিরে সে অরণ্য়-
বাঘ বাঁচুক, পৃথিবী বাঁচুক, আমরা সবাই মিলে বাঁচি ৷
বেঙ্গল সাফারির বাঘযাত্রা-2014 সালে মহানন্দা অভয়ারণ্যে 296 হেক্টর বনাঞ্চলে ওই সাফারি পার্ক তৈরি করা হয়। স্নেহাশিস ও শিলা নামে বাঘ দম্পতি দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল টাইগার সাফারির। ধাপে ধাপে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষর যত্ন ও সেবায় সেই বাঘের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় 24-টি'তে। তবে 21টি বাঘের মধ্যে পাঁচটি বাঘকে রাজ্য ও দেশের অন্যান্য চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে। এখন পার্কে বাঘের সংখ্যা 16টি। বাঘ প্রজননে বেঙ্গল সাফারি পার্কের সফলতার হার প্রায় 90 শতাংশ।
- কীভাবে হয় বাঘেদের দেখাশোনা ? বেঙ্গল সাফারি পার্কের 16টি বাঘের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন সাতজন জু-কিপার। 24 ঘণ্টা যাঁরা ওই প্রাণীদেরকে যারা ভালো রাখেন। যাঁদের কাছে ওই হিংস্র প্রাণীগুলোও তাদের সন্তান তূল্য। কারও পছন্দের সাদা বাঘ কিকা, কারও আবার শিলা, কারও আবার রয়্যাল শাবক টি-3 । এমনই বিবেক, দীপুদের সারাটা দিন কাটে ওই বাঘদের নিয়ে।
জু-কিপার দিপু ওরাওঁ বলেন, "আমি 2019 সাল থেকে বাঘের জু-কিপারের দায়িত্বে রয়েছি। আমার পছন্দের বাঘ কিকা ও সাদা বাঘ। তাছাড়াও সবাইকে ভালোবাসি। তাদের খাওয়াদাওয়া, ওষুধ সবটাই আমরা নিজের হাতে করি। এখন আমাদের পরিবারের মতো হয়ে গিয়েছে ওরা। আর বেড়াতে আসা পর্যটকরা যখন বাঘদের দেখে তখন তাঁদের চোখে একটা আলাদাই মজা দেখে আমরাও খুব খুশি অনুভব করি।"
আরেক জু-কিপার বিবেক রায় বলেন, "আমার প্রিয় বাঘ সবচেয়ে পুরনো শিলা। খুব শান্ত প্রকৃতির বাঘ। ডাকলে একবারে কথা শোনে। বলতে গেলে ওরা সবাই আমাদের পরিবারের সদস্যদের মতো হয়ে গিয়েছে। বেঙ্গল সাফারি পার্কের উন্নতি দেখে খুব গর্ব হয়।"
পার্কের অ্যানিম্যাল ইনচার্জ জনার্দন চৌধুরী বলেন, "এই পার্কের প্রতিটা কর্মী যেভাবে বাঘদের দেখাশোনা করে তা সত্যি উল্লেখযোগ্য।"
পার্কের ডিরেক্টর বিজয় কুমারের কথায়, "আমাদের পার্কে বাঘের সংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আমরা খুব গর্বিত। আগামীতে বাঘ থাকুক, জঙ্গল বাঁচুক এটাই চাই।"