পুরুলিয়া, 9 ফেব্রুয়ারি: স্ত্রীকে খুনের দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড । স্ত্রী খুনের মামলায় আট বছর পর সাজা ঘোষণা পুরুলিয়া জেলা আদালতে ৷ বৃহস্পতিবার আদালত সাজা ঘোষণা করেছে । ওই ব্যক্তির নাম মহম্মদ এহসান ৷ পুরুলিয়ার মফঃস্বল থানার জলেশ্বর গ্রামের ঘটনা ।
জানা গিয়েছে, 2014 সালের ডিসেম্বর মাসে জলেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ এহসানের বিয়ে হয়েছিল রাজিয়া বেগমের ৷ পুরুলিয়ার আদ্রা থানার লোয়ার বেনিয়াশোল গ্রামের বাসিন্দা রাজিয়া বেগম ৷ অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে অতিরিক্ত পণের দাবীতে রাজিয়া খাতুনের উপর অত্যাচার করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন । এক বছর পর 2015 সালের 29মার্চ রাজিয়া খাতুনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় । 31 মার্চ পুরুলিয়ার মফস্বল থানায় শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন রাজিয়ার মা ফরিয়াল বেগম ।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজিয়ার স্বামী মহম্মদ এহসান, ভাশুর বাবলু এবং এক নন্দাইকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । প্রমাণের অভাবে বাবলু এবং এক নন্দাইকে ছেড়ে দেয় ৷ 2016 সালের 21জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ ।সেখানেই স্বামী মহম্মদ এহসানের নাম উল্লেখ করা হয় ৷ অবশেষে সেই মামলায় প্রায় 8 বছর পর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত মহম্মদ এহসানকে বধূ নির্যাতন ও খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে। আজ বিচারক অভিযুক্তের সাজা ঘোষণা করেন । মহম্মদ এহসানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও 25 হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেছে ৷ অনাদায়ে আরও ছ’মাস সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক ।
এই প্রসঙ্গেই পুরুলিয়া জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী ভৃগুরাম মাহাতো বলেন, "2015 সালের ঘটনা। স্ত্রী খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া স্বামীর সাজা ঘোষণা করলেন জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা কোর্টের বিচারক । স্বামীর বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র, প্রমাণ লোপাট-সহ একাধিক ধারায় মামলা ছিল । উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা ঘোষণা করেছেন বিচারক ।"
অন্যদিকে ভবিষ্যতে কোনও গৃহবধূ বা মেয়েদের উপর এভাবে যাতে অত্যাচার না হয়, তার জন্য আরও কঠিন সাজার দাবি চেয়েছিলেন মৃত রাজিয়ার পরিবার । তবে অবশেষে দীর্ঘ আট বছরের অপেক্ষার পর রাজিয়ার খুনির সাজা ঘোষণা হওয়ায় রাজিয়া খাতুনের বাপের বাড়ির লোকজন অনেকটাই স্বস্তিতে।
আরও পড়ুন: