মালদা, 11 মে: স্বামীকে ব্রাউন সুগারের নেশা করতে বাধা দিয়েছিলেন ৷ এটাই কাল হয় মহিলার ৷ আর সেই অপরাধে স্ত্রী'র মুখে বিষ ঢেলে খুন করল স্বামী ৷ এই ঘটনায় অভিযুক্তকে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে তার পরিবারের বিরুদ্ধেও ৷ ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের শক্তল গ্রামে ৷ ঘটনার প্রেক্ষিতে জামাই-সহ মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার বাবা ৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ ৷ তবে এখনও পর্যন্ত কেউই গ্রেফতার হয়নি বলেই খবর ৷ জানা গিয়েছে মৃতার নাম আদরী খাতুন ৷ ঘটনার মূল অভিযুক্ত, পলাতক মহিলার স্বামীর নাম শাহেনশা আলি ৷
প্রায় সাত বছর আগে আদরী খাতুনের সঙ্গে শাহেনশা আলির বিয়ে হয় ৷ শাহেনশা পরিযায়ী শ্রমিক ৷ ভিনরাজ্যে গাড়ি চালায় সে ৷ শাহেনশা-আদরীর দুটি সন্তানও রয়েছে ৷ বাইরে থাকাকালীন আদরীর সঙ্গে স্বামীর কোনও ঝামেলা হতো না বলেই খবর ৷ কিন্তু শাহেনশা ব্রাউন সুগারের নেশা করত বলে জানা গিয়েছে ৷ তাই বাড়ি ফিরেও এই নেশার জন্য অশান্তি শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর ৷ কয়েক মাস ধরে শাহেনশা বাড়িতেই রয়েছে ৷ বাড়িতে তাকে নেশা করতে বাধা বারবার বাধা দিচ্ছিলেন আদরী ৷ এর জন্য শাহেনশা তাঁকে প্রায়শই মারধর করত বলেও অভিযোগ ৷ এ নিয়ে গ্রামে একাধিকবার শালিশি সভাও বসে ৷ কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি বলেই দাবি মৃতার পরিবারের ৷
অভিযোগ, গত রবিবার সকালে ব্রাউন সুগারের নেশা করছিল শাহেনশা ৷ ফের তাকে বাধা দেন আদরী ৷ সেই সময় শাহেনশা স্ত্রীকে কিছু বলেনি ৷ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পরে তাঁকে মারধর করে শাহেনশার বাবা সফিউল হক এবং মা সেবেরা বিবিও ৷ মারধরের পর আদরীর মুখে কীটনাশক ঢেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ৷ স্থানীয় লোকজনই আশঙ্কাজনক অবস্থায় আদরীকে স্থানীয় হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখান থেকে তাঁকে প্রথমে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, পরে মালদা মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ মালদা মেডিক্যালের উপর ভরসা না করে মেয়েকে মালদা শহরের একটি নামি নার্সিং হোমে ভর্তি করে আদরীর বাড়ির লোকেরা ৷ শুক্রবার সেখানেই মৃত্যু হয় আদরীর ৷ গতকাল রাতে তাঁর মৃতদেহ ফিরে আসে বাপের বাড়িতে ৷
আদরীর বাবা বলেন, “কলাইয়ের খেতে নিয়ে গিয়ে ওরা আমার মেয়েকে মারধর করেছে ৷ সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েও মেরেছে ৷ কী কারণে, জানি না ৷ হাসপাতালে মেয়ে আমাকে জানায়, ওরা তিনজন তাকে বিষ খাইয়ে দিয়েছে ৷ ওদের তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ আমি ওদের ফাঁসি চাই ৷” হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনের বিরুদ্ধেই নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক ৷ তাদের খোঁজে পুলিশি তল্লাশি চলছে ৷ তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই জানা যাবে ৷
আরও পড়ুন
প্রেমিকাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করল প্রেমিক, ফিরে এল সুতপা-হত্যার স্মৃতি