কলকাতা, 6 মার্চ: দেশের মধ্যে প্রথমবার মাটির তলা দিয়ে মেট্রো ছুটিয়ে 41 বছর আগে ইতিহাস গড়েছিল কলকাতা । আজ আবারও সেই কলকাতাই দেশে প্রথমবার হুগলি নদীর নিচ দিয়ে মেট্রো চালিয়ে ইতিহাস রচনা করল । যা নিঃসন্দেহে পরিবহনের ক্ষেত্রে এক বিপ্লব । বিশ্বমানের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই মেট্রো । এর পাশাপাশি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সিগন্যালিং ব্যবস্থা থেকে শুরু করে রেকের ভেতরে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য, সবকিছুই বিশ্বের আর যেকোনও প্রথম সারির দেশের পরিষেবা ও প্রযুক্তিকে টেক্কা দিতে পারে । ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর যেই অংশটি হুগলি নদীর নিচ দিয়ে গিয়েছে সেই অংশটি আর কয়েকদিনের মধ্যে সাধারণ মানুষের জন্য চালু হয়ে যাবে ।
বুধবার উদ্বোধনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল এমআর 614 রেক । আজ হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় 65 থেকে 70 কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানো হয় । আজ নদীর নিচ দিয়ে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীকে সফর করিয়ে আপ্লুত মোটরম্যান দীপক কুমার । তাঁর কথায়, "অনেকদিন হল কলকাতা মেট্রোয় মোটরম্যান হিসেবে কর্মরত ৷ প্রধানমন্ত্রীকে চাপিয়ে মেট্রো চালানোয় স্নায়ুর উপর একটা বাড়তি চাপ তো ছিলই ৷ অন্যদিকে এত বড় দায়িত্ব । তবে সব মিলিয়ে আজকের এই অভিজ্ঞতা একেবারেই অন্যরকম ৷ নর্থ-সাউথ মেট্রোর থেকে একেবারে অন্য অভিজ্ঞতা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডরে ট্রেন চালানো ৷"
এই বিষয়ে কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম (সিবিটিসি) বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু জানা জানান, ট্রেন চালাবার বিষয়টি নর্থ-সাউথ করিডরের ক্ষেত্রে অনেকটা ব্যক্তি বা মোটরম্যান নির্ভর । অন্যদিকে এই রুট একেবারেই কম্পিউটারাইজড বা কম্যান্ড-ভিত্তিক । এখানে শুধুমাত্র ট্রেন চালু করা এবং বন্ধ করার বিষয়টি মোটরম্যানের উপরেই নির্ভর করে । পাশাপাশি যেদিন কখনও যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য আচমকাই কম্যান্ড বন্ধ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ট্রেনের পুরো ব্যবস্থা 'সেফ মোডে' চলে গিয়ে বন্ধ হয়ে যাবে । আর যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই সমস্যার সমাধান হবে, ততক্ষণ বন্ধ থাকবে গাড়ি ।
যদিও এখনও জানা যায়নি কবে থেকে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হবে আজ উদ্বোধন হওয়া শহরের তিনটি রুট । ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রধান ইনভেস্টর জিকার জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ সাইতো মিৎসুনোরি জানান যে, একাধিকবার ম্যাপ পরিবর্তন হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই অনেটাই বেড়েছে অর্থ । তবে এই ধরনের একটি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে জিকাও গর্বিত । এই প্রকল্প যে জাপান ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তুলবে তা বলাই বাহুল্য ।
আরও পড়ুন :