বংশীহারি, 24 জানুয়ারি: সরকারি কলেজে ছাত্রীদের অশ্লীল মেসেজ করে উত্যক্ত ও কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি আইটিআই কলেজের ছাত্রীরা এই অভিযোগ করেছেন ৷ অভিযোগের তির ওই কলেজের ফিটার ট্রেডের স্থায়ী শিক্ষক জালালউদ্দিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে । ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে বংশীহারি ও বুনিয়াদপুরে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে সরকারি ওই আইটিআই কলেজ তৈরি হয় । ইলেকট্রিক্যাল, ফিটার, ওয়েল্ডার , প্লাম্বার, কোপা (কম্পিউটার) ট্রেডে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনা করেন এই কলেজে ।
ছাত্রীদের দাবি, শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে । যেখানে পড়াশুনা সম্পর্কিত বিষয়ে আলোচনা হয় । অভিযোগ, ওই শিক্ষক গ্রুপ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে রাতে ছাত্রীদের অনলাইন দেখলেই হোয়াটস অ্যাপে চ্যাট অথবা কখনও ফোন করে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করতেন এবং কু প্রস্তাব দিতেন । অভিযুক্ত শিক্ষককে এসব করতে বারণ করায় কর্ণপাত করেননি তিনি । ঘটনাটি কলেজের প্রিন্সিপালকে জানালে তিনিও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনোরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি । দেখছি দেখব বলে তিনি কাটিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ ।
ছাত্রীদের আর অভিযোগ, 22 জানুয়ারি কলেজের সকল ছাত্রছাত্রী মিলে বিষয়টি নিয়ে প্রিন্সিপালকে লিখিতভাবে জানানো হয় ৷ এরপরই ঘটনাটি জানতে পারায় ওই অভিযুক্ত শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের ডেকে পাঠায় । ছাত্রছাত্রীদের হুমকি দিয়ে জানান, এই বিষয়ে তাঁরা যদি মুখ বন্ধ না করেন, তাহলে পরীক্ষায় তাদের ফেল করিয়ে দেওয়া হবে । এমনকি খুনের হুমকি পর্যন্ত দেন অভিযুক্ত শিক্ষক বলে অভিযোগ ।
প্রিন্সিপালকে লিখিত অভিযোগ করেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে শুক্রবার কলেজের সমস্ত ছাত্রছাত্রী এক জোট হয়ে কলেজের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন । সুবিচার চেয়ে শুক্রবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ফিটার ট্রেডের শিক্ষকের বিরুদ্ধে কলেজেরই এক ছাত্রী ।
অন্যান্য ছাত্রীদের আরও অভিযোগ, ওই শিক্ষক তাঁদের বলেন যে আধার কার্ডে বয়সের ভুল সংশোধনের জন্য নাকি কলকাতায় যেতে হবে এবং সেই সঙ্গে তিনচার দিন শিক্ষকের সঙ্গে রাত কাটাতে হবে ৷ এই ঘটনায় অবিলম্বে ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবি তুলেছে ওই কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা ।
কলেজের প্রিন্সিপাল সোমনাথ পাত্র বলেন, "অভিযোগ পেয়ে আপাতত ওই শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে । ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি । যেহেতু আজকে ওই শিক্ষক কলেজে এসেছেন, সেই জন্য ছাত্রছাত্রীরা আমাকে ভুল বুঝেছে ৷ এটা হওয়াটা স্বাভাবিক ।"
যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক জালালউদ্দিন আহম্মেদের দাবি, "মিথ্যে অভিযোগ । আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে । আমি সবাইকে ছাত্রছাত্রীর মতোই দেখি । আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ৷ কলেজের ভর্তির বিষয়ে কোনও যদি ছবি লাগে, সেজন্যই আমি তাদের ফোন করে ছবির কথা বলি । এছাড়া আর কিছু না ।"