কলকাতা, 1 জুলাই: রাজ্য এবং রাজ্যপাল সংঘাত নতুন মাত্রা পেল। রাজভবন সূত্রের খবর, এবার তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য পুলিশ এবং রাজ্য প্রশাসনের এক হামলার বিরুদ্ধে দিল্লির কর্মী বর্গমন্ত্রকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানালন তিনি। এই মুহূর্তে রাজ্যে উপনির্বাচনের পর দুই নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথ নিয়ে বিধানসভা এবং রাজভবনের মধ্যে কাজিয়া তুঙ্গে। এই ঘটনাকে সামনে রেখে প্রায় প্রত্যেকদিন নিয়ম করে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন শাসকদলের বিধায়ক মন্ত্রী থেকে শুরু করে অধ্যক্ষ স্বয়ং।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তাঁরা বিধানসভার রীতিনীতি ও নিয়মকে না-মানার অভিযোগ তুলছেন। এসবের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, পুরো বিষয়কে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। হকার উচ্ছেদ নিয়ে নবান্নের সভাঘরের বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কেরদের শপথ না-হওয়া নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। সেখানেই তিনি দাবি করেছিলেন, মহিলারা রাজভবনে যেতে ভয় পাচ্ছেন। এমন অভিযোগ তাঁর কাছে এসেছে। তারপরেই পুরো বিষয়ে নড়েচড়ে বসে রাজভবন।
দিল্লিতে বসেই একদিকে যেমন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজভবন ৷ একইসঙ্গে কলকাতা পুলিশের পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বিরুদ্ধে এবার পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে দিল্লির কর্মীবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতরে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এক অস্থায়ী রাজভবনের মহিলা কর্মীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠায় তা নিয়ে তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ। যদিও রাজভবনের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক রক্ষাকবচ রয়েছে।
এই অবস্থায় যতদূর জানা যাচ্ছে, তিনি চিঠি দিয়ে দুই পুলিশ আধিকারিকের অপসারণ চেয়েছেন। সংবিধানের 361 নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাজ্যপালকে কিছু রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি তদন্ত করা যায় না। কিন্তু এরপরেও রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশ। তিনি অর্থাৎ রাজ্যপাল মনে করছেন তাঁর বিরুদ্ধে এই তথ্যানুসন্ধান সংবিধান লঙ্ঘন করে। এবার সেই কারণে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কে দায়িত্ব থেকে সরানোর সুপারিশ করেছেন তিনি।
তিনি মনে করছেন, এই আইপিএসরা দায়িত্বে থেকে আইপিএস এবং আইএস রুল অবমাননা করেছেন। আর সেই জায়গা থেকে এই চিঠি বলে জানা যাচ্ছে। যদিও এই ঘটনায় সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, "ওনার বিরুদ্ধে রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন। ওই মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত করছে পুলিশ। যখন এধরনের একটা অভিযোগ ওঠে রাজ্যপালের নিজেরই উচিত নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে তদন্তের সুযোগ করে দেওয়া। তা না-করে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার আর্জি জানিয়ে আসলে এই তদন্তকে যে কোনও মূল্যে থামাতে চাইছেন নাকি লুকোতে চাইছেন ৷"