জলপাইগুড়ি, 26 অগস্ট: পড়ুয়া চিকিৎসকের মৃত্যুর পর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে কী করছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের সদস্যরা ? দুর্ঘটনার জায়গায় কী কাজ তাদের ? কেন তাঁদের এতটা অতিসক্রিয় দেখা গিয়েছিল ? রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ আরজি করের প্রাক্তনীরা। পাশাপাশি কাউন্সিলের সদস্যদের অতিসক্রিয়তার বিষয়ে তদন্তও দাবি করলেন তাঁরা ।
কেন মেডিক্যাল কাউন্সিলের আধিকারিক ও সদস্যরা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ঘটনার দিন গেলেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এটা প্রশাসনিক বিষয়। যেখানে একটা অপরাধ ঘটেছে সেখানে তারা চলে গেলেন কীভাবে, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন ৷ তথ্য প্রমাণ লোপাটের যে অভিযোগ উঠছে তাও মান্যতা পেয়ে যাচ্ছে বলেই মনে করেন আরজি করের প্রাক্তণীদের ৷ ইতিমধ্যেই আরজি করের ঘটনায় ক্রাইম স্পটের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। কাউন্সিলের এক পদাধিকারী সংবাদমাধ্যমকে ঘটনার পর স্পটে যাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। আর তাতেই মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাদের কাজের পরিধি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী তথা জলপাইগুড়ির প্রবীণ চিকিৎসক পান্থ দাশগুপ্ত অভিযোগ করে বলেন, "আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজের চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনার পর এমন বহু লোক সেখানে চলে গেলেন। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গিয়েছেন ঠিক আছে। কিন্তু তারপর থেকে আরও অনেকে গেলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁরা নিজেদের ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্য়াল কাউন্সিলের সদস্য বলে পরিচয় দিলেন। কিন্তু এখানে যেনে রাখা দরকার, রাজ্য মেডিক্য়াল কাউন্সিল একটা বিধিবদ্ধ সংস্থা। তাদের কাজের একটা নির্দিষ্ট পরিধি আছে। তার বাইরে কেউ যেতে পারে না। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যা ঘটছে তা দেখতে পারে স্বরাষ্ট্র দফতর, স্বাস্থ্য প্রশাসন। এটা প্রশাসনিক বিষয়। যেখানে একটা ক্রাইম সিন আছে সেখানে তাঁরা কীভাবে চলে গেলেন ! তথ্য প্রমাণ লোপাটের যে অভিযোগ উঠছে তাই মান্যতা পেয়ে যাচ্ছে।"
একই সঙ্গে, তিনি আরও বলেন, "সারাদিন ধরে তাঁরা ওখানে ছিলেন। প্রথমে বলা হল, তরুণী আত্মহত্যা করেছেন। তারপর তড়িঘড়ি ময়নাতদন্তের টিম গঠন হল। গা জোয়ারি করে শ্মশানের নিয়ে যাওয়া হল । দেহ দাহ করা হল। এই বিষয়ে আমরা অনেক কিছুই সন্দেহ করছি। কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। মেডিক্যাল কাউন্সিলের নামে যে অতি সক্রিয়তা দেখানো হয়েছে তারও তদন্ত করা উচিত। নর্থবেঙ্গল লবির আশীর্বাদ নিয়েই আরজিকর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ যাবতীয় কাজকর্ম করেছেন বলে আমি মনে করি।"
আরজি করের প্রাক্তনী তথা জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক সুদীপন মিত্রর অভিযোগ, "মেডিক্যাল কাউন্সিল মানুষের ভালো দেখবে । ডাক্তারদের ভালো দেখবে। আমরা সবাই এদের ভূমিকাকে ভালো বলেই ভাবি। কিন্তু বাস্তব ঘটনাটা ঠিক উলটো। আসলে মেডিক্যাল কাউন্সিলের গঠনটাই হয়েছে একটা দুর্নীতি ও জালিয়াতির মধ্যে দিয়ে। মেডিক্যাল কাউন্সিল একটা জালিয়াতির আখরায় পরিণত হয়েছে। এরা মানুষ এবং চিকিৎসকের ভালো দেখবে না। উলটে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে।"