কলকাতা, 20 অগস্ট: আরজি কর কাণ্ডের রেশ ছড়িয়ে পড়ল বাংলার শারদোৎসবেও ৷ কয়েকদিন ধরেই নেট দুনিয়ায় দুর্গাপুজো এবং আরজি করে চিকিৎসক পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুকে একই সুতোয় বাঁধার চেষ্টা করা হচ্ছিল ৷ মঙ্গলবার এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পুজো কমিটিগুলির যৌথ মঞ্চ, ফোরাম ফর দুর্গোৎসব ৷
ঠিক এমনটাই হয়েছিল করোনাকালে ৷ তখনও দুর্গাপুজো নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল পুজো কমিটিগুলি ৷ তখনও নেট মাধ্যমে পুজো করা কিংবা না করা নিয়ে প্রচুর লেখা চালাচালি হয়েছে ৷ একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আরজি করের ঘটনাতেও ৷ নেট মাধ্যমে কারও দাবি, পুজো বন্ধ করা হোক ৷ কেউ বলছেন, পুজো ছোট করা হোক ৷ আবার অনেকের আর্জি, পুজো করলেও সরকারি অনুদান ফিরিয়ে দেওয়া হোক ৷
এসব নিয়েই এ দিন ফোরাম ফর দুর্গোৎসব রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে সবার উদ্দেশ্যে আবেদন জানিয়েছে, আরজি করে যে ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক, চরম নিন্দনীয়৷ দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছে ফোরামও ৷ কিন্তু এই ঘটনার সঙ্গে বাঙালির আবেগ দুর্গোৎসবকে যেন জড়িয়ে দেওয়া না হয় ৷ এ দিন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু দাবি করেছেন, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে কোনও দুর্গাপুজো কমিটি সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছে বলে কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই ৷
করোনাকালে থমকে থাকা অর্থনীতিতেও নেট মাধ্যমে দুর্গাপুজো নিয়ে নানা দাবি উঠেছিল ৷ ভাইরাসের চলন-গমন ঠেকাতে পুজো ছোট করা, বন্ধ করা কিংবা নমোনমো করে পুজোর আয়োজন করার বার্তাও দিয়েছিলেন অনেকে ৷ অনেকে আবার দাবি করেছিলেন, কোনও ক্লাব বা পুজো কমিটিকে অনুদান না দিয়ে করোনা রোগীর চিকিৎসা, হাসপাতাল কিংবা ওষুধের পিছনে খরচ করা হোক ৷ সেবারও সোশ্যাল মিডিয়ার বার্তা উদ্বেগ ছড়িয়েছিল বিভিন্ন পুজো কমিটির অন্দরে ৷
আরজি করে চিকিৎসক পড়ুয়ার অকালমৃত্যুতেও নেট দুনিয়ায় দুর্গাপুজো নিয়ে অসংখ্য বার্তা৷ অনেকেই পুজোর সরকারি অনুদান প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন ৷ অনেক পুজো কমিটি নাকি এর মধ্যেই সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছে ৷ তেমনও পোস্ট জ্বলজ্বল করছে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে ৷
এসব নিয়ে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু বলেন, “সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছে, এমন কোনও পুজো কমিটির কথা আমার জানা নেই ৷ আমাদের কাছে তেমন কোনও তথ্যও নেই ৷ যে পুজো কমিটি অনুদান প্রত্যাহার করেছে বলে শোনা যাচ্ছে, সেটা একটা হাউসিং-এর পুজো ৷ জেনে রাখা ভালো, কোনও হাউসিং পুজো কমিটি সরকারি অনুদান পায় না ৷ একমাত্র বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলিকে সেই অনুদান দেয় রাজ্য সরকার ৷ স্বাস্থ্য সাথী, কন্যাশ্রী-সহ নানা ধরনের সরকারি সহায়ক প্রকল্পেও তো সরকারের তরফে কার্যত অনুদান দেওয়া হয় ৷ সেসব কি মানুষ এখন আর নিচ্ছে না ? কেউ কি এসব সহায়ক প্রকল্পের সুবিধে নেবেন না বলে জানিয়েছেন ?”
উদ্বেগ প্রকাশ করে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব কমিটি যে বিবৃতি সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছেন সেই বিবৃতিকে অনেক থিম শিল্পী ঘুরপথে কটাক্ষ করেছেন । এই প্রসঙ্গে শাশ্বত বসু বলেন, ‘‘আপনারা প্রতিবাদ করুন । আপনারা আমরা মিলিয়েই দুর্গাপুজোটা করি । যাঁরা বলতে চাইছেন, তাঁরা পুজোর বিরুদ্ধে ৷ তাঁরা কী বলেছেন আমি ঠিক জানি না । শুধু তাঁদের প্রতি আমার বার্তা যে ক্লাবের পুজো আপনি করছেন, সেই পুজো কি আপনি করবেন না ? যদি পুজো করেন, তাহলে কি রিমুনারেশন নেবেন না ?’’