কলকাতা, 23 জুন: শহরে দুর্যোগ এলেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় গাছ ৷ রাজপথে বড় বড় গাছ উপরে পড়ে থাকতে দেখা যায় । এমনকী ঝড় বৃষ্টি হোক বা দমকা হাওয়াতেও গাছ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটছে ৷ এর ফলে ধীরে ধীরে শহরে কমছে সবুজ । বৃদ্ধি পাচ্ছে দূষণ ৷ তাই সবুজ ফেরাতে ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবার বিকল্প বনসৃজনের পথে হাঁটছে কলকাতা পৌরনিগম । শহর জুড়ে আর কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া বা তুলো গাছ নয়, এবার বসছে যেমন- রাজস্থানী নিম, দেবদারু, আম, কাঁঠাল থেকে জারুল গাছ ।
নানা রোগ নিরসনে নিম পাতার উপকারিতা আমাদের সকলের জানা । তবে নিম গাছ অন্যান্য গাছের তুলনায় পরিবেশের ক্ষেত্রে একটু বেশি উপকারী । সেই নিমের চারা এবার রাজস্থান থেকে কলকাতায় এসেছে । শহরের বিভিন্ন রাস্তার ধার ও শহুরে বনায়ন চত্ত্বরে ঠাঁই পেয়েছে সেই রাজস্থানী নিম গাছ । উদ্ভিদবিদদের কথায়, 1980 দিকে বামফ্রন্ট বোর্ড কলকাতার সবুজায়ন করেছিল । তখন রাস্তার ধরে লাগানো হয়েছিল কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, শিমুল, পলাশ ও কদমের মতো গাছ । কিন্তু পরবর্তী সময় দেখা গিয়েছে কলকাতার মাটির চরিত্রের সঙ্গে এই সমস্ত গাছ মানানসই নয় । এই গাছগুলো খুবই লম্বা, শিকড় মাটির গভীরে বেশি প্রবেশ করে না । ফলে ঝড় হলে পাটকাঠির মতো ভেঙে যায় গাছের ডাল ৷ উপড়ে পড়ে গাছ ।
উদ্ভিদবিদরা আরও জানাচ্ছেন, আমফানে প্রায় 15-20 হাজার গাছ উপড়ে পড়ে গিয়েছিল শহর কলকাতায় । তবে সামান্য ঝড়েও সম্প্রতি 120 গাছ একদিনে উপড়ে পড়েছে । একদিকে যখন বায়ু দূষণ নিয়ে নাজেহাল মানুষ তখন এইভাবে সবুজ কমে যাওয়া রীতিমতো চিন্তা বাড়িয়ে ছিল পৌরনিগম কর্তৃপক্ষের । এরপরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মাটির গভীরে শিকড় পৌঁছয় ও বেশি উচ্চতা নয় এমন গাছ পোতা হবে শহরে । এই গাছগুলির মধ্যেই নিম, দেবদারু, আম, জাম, কাঁঠাল ও জারুল রয়েছে । তবে নিমে গাছের বাড়তি পাওনা হল, অতিমাত্রায় ধূলিকণা ও কার্বন শোষণ করে ঠান্ডা রাখে আশপাশ । তাই সব থেকে বেশি এই গাছই পোতা হচ্ছে কলকাতায় ।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "একটি বৈঠকে রাজস্থানে গিয়েছিলাম । সেখানে এই নিমগাছ নজরে আসে । কথা বলে জানা যায় যে এই গাছের উচ্চতা বেশি হয় না ৷ তবে শিকড় গভীরে যায় । ওই গাছ রাজস্থান থেকে আনার নির্দেশ দিই উদ্যান বিভাগকে ।"