বাঁকুড়া, 3 অগস্ট: ভারী বৃষ্টিতে বেহাল অবস্থা বাঁকুড়ার কোতলপুর ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রামের ৷ যার মধ্যে সবচেয়ে আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি ব্রহ্মডাঙা গ্রামের ৷ সারা বছর শুকনো থাকা খাল বর্ষায় খরস্রোতা হয়ে ওঠে ৷ আর গত তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে কোতলপুর ব্লক দিয়ে বয়ে যাওয়া ওই খাল উপচে দু’পারের গ্রামগুলিতে জল ঢুকেছে ৷
জানা গিয়েছে, খালটির উপর দিয়ে একটি সেতু গিয়েছে ৷ খালের দু’পাড়ের মধ্যে সংযোগকারী একমাত্র এই সেতুটি বর্তমানে জলের তলায় ৷ আর তার উপর দিয়ে তীব্র গতিতে খালের জল বয়ে যাচ্ছে ৷ এই পরিস্থিতিতে সেতু দিয়ে প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করছে সাধারণ মানুষ ৷ গ্রামে অনেক বাড়িতেই জল ঢুকে গিয়েছে ৷ তবে, যা সবচেয়ে চিন্তার তা হল, বহু ফসলী এবং তিন ফসলী একাধিক জমিতে জল ঢুকেছে ৷ এর ফলে চাষের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীদের ও স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৷ প্রয়োজন পড়লে ত্রাণ শিবিরও খোলা হবে ৷
যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে গতকালের পর থেকে কোনও খোঁজখবর নেওয়া হয়নি ৷ তবে, কোতলপুর ব্লকের বিডিও দেবরাজ ঘোষ শুক্রবার ব্রহ্মডাঙা গ্রাম ঘুরে গিয়েছেন ৷ তবে, তারপর থেকে প্রশাসনের তরফে কেউ কোনও খোঁজ নেয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে ৷ গ্রামে অন্তঃসত্ত্বারা যেমন রয়েছেন ৷ তেমনই অনেক মুমূর্ষু রোগীও আছেন ৷ ফলে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে, গ্রামে অ্যাম্বুলেন্স বা চিকিৎসকরা ঢুকতে পারবেন না ৷ এমনকী রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না ৷
প্রশাসনের তরফে ব্রহ্মডাঙা ও তার আশেপাশের গ্রামগুলির বেহাল পরিস্থিতির কথা স্বীকার করা হয়েছে ৷ কোতলপুরের বিডিও জানিয়েছেন, প্রতি বছরই বর্ষার সময় এই গ্রামগুলিতে জল ঢুকে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় ৷ এবারেও তেমনই পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে ৷ তবে, প্রশাসন 24 ঘণ্টা খালের জলস্তর ও গ্রামগুলির পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছে ৷ প্রয়োজন পড়লে ব্রহ্মডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ত্রাণ শিবির খোলা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি ৷ সেই ব্যবস্থা ইতিমধ্যে করা হয়ে গিয়েছে ৷ গ্রামে জল বাড়লে উদ্ধারকাজের জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৷