দুর্গাপুর, 16 অক্টোবর: বোমাবাজি ও গুলিতে উত্তপ্ত অন্ডাল বিমানবন্দর লাগোয়া ফরিদপুর থানা এলাকার আরতি গ্রাম ৷ সোমবার রাতের ঘটনায় শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে ৷ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের স্থানীয় নেতা শেখ নফিজুল ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে বিরোধী গোষ্ঠীর চার নেতার বাড়িতে বোমাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে ৷ পাশাপাশি, গুলি চলার অভিযোগও উঠেছে ৷
স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ৷ মূলত, গ্রামে তোলাবাজি ও সিন্ডিকেট রাজ বন্ধ করে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা ৷ ফের সিন্ডিকেট ও তোলাবাজি শুরু করতেই গ্রামবাসীদের ভয় দেখানো হচ্ছে ৷ এমনকি পাশে থাকা বিমানবন্দরের একটি জমি নিয়েও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল বলে অভিযোগ ৷ স্থানীয় সূত্রের খবর, বিমানবন্দরের জমি নিয়ে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব লেগে ছিল ৷ সোমবার রাতে সেটাই চরমে ওঠে ৷ আর তাকে কেন্দ্র করেই দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বোমাবাজি, এমনকি গুলিও চলে ৷ একটি কার্তুজের খোল উদ্ধার করেছে পুলিশ ৷
তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কর্মী শেখ মফিজুলের অভিযোগ, "এলাকার তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা শেখ নফিজুলের নেতৃত্বে গোটা এলাকায় সন্ত্রাস চলছে ৷ পাশেই বিমানবন্দরের জমি নিয়েও তোলাবাজি আর নানা অপরাধমূলক কাজ হয় ৷ প্রতিবাদ করলে এলাকাবাসীদের মারধর করা হয়েছে ৷ সোমবার রাতেও এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করতে নফিজুল ও তাঁর গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন হামলা চালায় ৷ তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা শেখ আফজল, শেখ মোবারকের বাড়িতে বোমা মারা হয়েছে ৷ ভাঙচুর করা হয় বাইক ও গাড়িতেও ৷ কয়েকজন মহিলা-সহ তৃণমূলের কর্মীরা আহত হয়েছেন ৷"
আরতি এলাকার তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি সৈয়দ আশিক আলি দাবি করেছেন, হামলাকারীদের তৃণমূলের সঙ্গে কোনও যোগ নেই ৷ তিনি বলেন, "আমি শুনেছি মঙ্গলবার রাতে গ্রামে বোমাবাজি হয়েছে ৷ যারা বোমাবাজি করছে, তারা দুষ্কৃতী ৷ তৃণমূলের সঙ্গে এদের যোগ নেই ৷ আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৷ পুলিশ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে ৷"
ইটিভি ভারতকে ফোনে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানান, "ঘটনার খবর শুনেছি ৷ ওই এলাকায় দীর্ঘদিন জমি কেনাবেচা নিয়ে একটা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে ৷ আমি পুলিশকে বারবার জমি নিয়ে প্রজেক্ট তৈরির ব্যবসা বন্ধ করার কথা জানিয়েছি ৷ আমি বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পুলিশের সঙ্গে কথা বলছি ৷"
আরতি গ্রামের পরিস্থিতি এই মুহূর্তে থমথমে রয়েছে ৷ এলাকায় পুলিশ পিকেটিং বসানো হয়েছে ৷ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, "গতকাল রাতেই এই ঘটনায় 7 জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ ঘটনা তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ কী নিয়ে এদের সংঘর্ষ, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷"