জলপাইগুড়ি, 5 নভেম্বর: চা-শ্রমিকরা যাঁকে আশির্বাদ করবেন, বাজি তাঁর ৷ 13 নভেম্বরের উপনির্বাচনের আগে মাদারিহাট বিধানসভার হাওয়ায় এমনই গুঞ্জন ৷ চা-বাগান ও তার শ্রমিকরাই বড় ফ্যাক্টর এই উপনির্বাচনে ৷ আর সেটা বুঝেই চা-বাগানে প্রচারে জোর দিচ্ছে শাসক তৃণমূল এবং বিরোধী বিজেপি ৷
মাদারিহাট বিধানসভা মোট চা-বাগানের সংখ্যা 24টি ৷ যার মধ্যে মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকে 19টি চা-বাগান ও জলপাইগুড়ি জেলায় 5টি চা-বাগান মাদারিহাট বিধানসভার অন্তর্ভুক্ত ৷ উল্লেখ্য, মাদারিহাট বিধানসভা আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লক ও জলপাইগুড়ি জেলার সাকোয়াঝোড়া 1 ও বিন্নাগুড়ি গ্রামপঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত ৷
তাই চা-বাগান ও আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার উপনির্বাচনে নজর থাকছে চা-শ্রমিকদের দিকে ৷ তাঁরা যাঁকে আশির্বাদ করবেন, তিনিই জয়ী হবেন এমনটাই ধরা হচ্ছে ৷ ইতিমধ্যে, বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী জয়প্রকাশ টপ্পো চা-শ্রমিকদের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট হয়েছেন ৷ সকাল হতেই জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিক বড়াইককে সঙ্গে করে চা-বলয়ে প্রচারে নামছেন তৃণমূল প্রার্থী ৷ সেখানে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ৷ ঠিক একইভাবে বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহার, জেলা সভাপতি তথা লোকসভার সাংসদ মনোজ টিগ্গাকে নিয়ে চা-শ্রমিকদের সঙ্গে জনসংযোগ শুরু করেছেন ৷
মাদারিহাট বিধানসভা উপনির্বাচনের টক্করটা সেয়ানে-সেয়ানে, তা বলাই যায় ৷ 2016 ও 2021 বিধানসভা নির্বাচনে মাদারিহাট কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির মনোজ টিগ্গা ৷ 2024 সালে লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার থেকে জিতে মনোজ টিগ্গা সাংসদ হওয়ায়, মাদারিহাট বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন ৷
মাদারিহাট বিধানসভায় মোট বুথের সংখ্যা 226টি ৷ এই বিধানসভা উপনির্বাচনে বর্তমানে মোট ভোটার আছে 2 লক্ষ 20 হাজার 342 জন ৷ যার মধ্যে পুরুষ ভোটার 1 লক্ষ 8 হাজার 367 জন এবং মহিলা ভোটার 1 লক্ষ 11 হাজার 970 জন ৷ আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন 5 জন ৷
তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বড়াইক বলেন, "তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান নিয়েই আমরা সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছি ৷ এবার আমরা বিপুল ভোটে জয়ী হব ৷ চা-শ্রমিকদের জন্য সরকার যা-যা করেছে, আমরা তা তুলে ধরছি ৷ চা-সুন্দরী থেকে চা-শ্রমিকদের জন্য, যেসব প্রকল্প সরকার নিয়েছে, তা প্রচারে তুলে ধরা হচ্ছে ৷
আর, বিজেপির জেলা সভাপতি তথা আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গা বলেন, "2016 সাল থেকে মানুষ বিজেপিকে আশির্বাদ করে আসছেন ৷ এবারও তাই করবেন ৷ আমরা মানুষের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব ৷ সেই বিশ্বাস থেকেই তাঁরা আমাদের আবারও আশির্বাদ করবেন ৷"
আর রাজ্য সরকারের কাজ নিয়ে সাংসদের বক্তব্য, "মাদারিহাটের জন্য রাজ্য সরকার কী করেছে, সবাই দেখেছে ৷ বীরপাড়ার সবচেয়ে বড় সমস্যা রেললাইনের উপর ফ্লাইওভার না-থাকায় যানজট ৷ যে সমস্যার সমাধানে আমরা উদ্যোগী হয়েছি ৷ রাজ্যের শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি ৷ সবমিলিয়ে 2016 সাল থেকে মাদারিহাটের ভোটাররা বিজেপিকে আশির্বাদ করে আসছেন ৷ এবারও করবেন বলে আমরা আশাবাদী ৷"