বর্ধমান, 5 জুলাই: "গ্রামে কারও সঙ্গে আমার দাদার শত্রুতা ছিল না।" ফলে কেউ ঠিক কী কারণে জানলা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিল সেই উত্তর খুঁজছেন বোলপুরের অগ্নিকাণ্ডে ঝলসে যাওয়া আব্দুল আলিমের ভাই শেখ উজির।
বোলপুর থানার রায়পুর-সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রজতপুর গ্রামে একই পরিবারের তিনজন অগ্নিদগ্ধ হন ৷ তাঁদের মধ্যে রূপা বিবি (30) ও তাঁর ছেলে আয়ান শেখের (4) মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আব্দুল আলিমকে বোলপুর থেকে নিয়ে এসে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ পরে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে পরিবারের অনুমান, কেউ বা কারা শত্রুতা করে রাতের অন্ধকারে মশালে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে তা জানলা দিয়ে ঘরের ভিতরে ফেলে দেয়।
সেই সময় আব্দুল তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে ঘরেই ঘুমোচ্ছিলেন। ফলে তাঁরা অগ্নিদগ্ধ হন ৷ আব্দুলের ভাই শেখ উজির বলেন, "রাত তখন প্রায় 2.10 থেকে 2.15 হবে ৷ মা ঘুম থেকে ডেকে জানান দাদাদের বাড়িতে শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে গিয়েছে। বাড়িতে গিয়ে দেখি আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। শর্টসার্কিট কেন বলা হচ্ছে তা কিছুই বুঝতে পারছি না। কারণ ওই বাড়িতে ইলেকট্রিক সুইচবোর্ড শুরু করে ফ্যান কিংবা এসি সবই ঠিকঠাক আছে। উপরের জানালাও খোলা ছিল।"
তিনি আরও বলেন, "সেই জানলার পাশে তেলের গন্ধ বের হচ্ছিল। গিয়ে দেখি, কাপড় জড়ানো অবস্থায় মশাল জাতীয় কিছু পড়েছিল ৷ আর সেটাও পুড়ে গিয়ছে। তখন সন্দেহ হয় কেউ হয়তো শত্রুতা করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ওর সঙ্গে তো কারও কোনও শত্রুতা ছিল না। গ্রামে সকলের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক। ঘরে আমার দাদা ও বউদি ও বছর তিনেকের ভাইপো ছিল। তিনজনেই পুড়ে ঝলসে গিয়েছে। এর মধ্যে আমার বউদি রূপা বিবি ও ভাইপো আয়ান মারা গিয়েছে। দাদার অবস্থাও ভালো নয়।"
আব্দুলের মামা শেখ নাজির বলেন, "আমি ফোনে খবর পেলাম বাড়িতে আগুন লেগেছে। ঘরে ঢুকে দেখি একটা মশাল ঘরে পড়ে রয়েছে। মনে হয় কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। গ্রামের সকলের সঙ্গেই আব্দুলের ভালো সম্পর্ক ছিল। তবে ব্যবসা সংক্রান্ত কিছু ঘটতে পারে। মনে হচ্ছে জানালা দিয়ে কেউ মশালে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে ঘরে ছুড়ে দেয়। আমরা চাই ঘটনার তদন্ত হোক।"