ETV Bharat / state

কমিশন কিভাবে বেছে নিচ্ছে আপনার বুথে ইভিএম, ভোট দেওয়ার আগে জেনে নিন - Lok Sabha Election 2024 - LOK SABHA ELECTION 2024

EVM: ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত ৷ কিভাবে কাজ করে ইভিএম ? কিভাবে বেছে নেওয়া হয় ইভিএম ? বিস্তারিত জানতে পড়ুন...

EVM
EVM
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 9, 2024, 8:11 PM IST

কলকাতা, 9 এপ্রিল: আধুরি হাসরতো কা ইলজাম হরবার হম পর লাগানা ঠিক নেহি / ওয়াফা খুদসে নেহি হোতি,
খতা ইভিএম কি কহেতে হো / ওর বাদ মে জব পরিণাম আতা হে উসপে কায়েম ভি নেহি রহতে ।

এবারের লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করার সময় সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ইভিএম-এর গুণাগুণ ব্যাখ্যা করার সময় নিজের লেখা ইভিএম সম্বন্ধে এই শায়েরিটি শোনান । কিছুটা মজার ছলে হলেও তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে নির্বাচনে ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটের গুরুত্ব অনস্বীকার্য । এই দু’টি জিনিস না থাকলে ভোট দেওয়ারই কোনও কার্যকারিতা থাকে না । তাই ইভিএমকে সবরকম ভাবে সুরক্ষিত ও নির্ভুল রাখতে বদ্ধপরিকর ভারতের নির্বাচন কমিশন ।

নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে 1977 সালে প্রথমবার নির্বাচনে ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইভিএম বা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন এবং ভিভিপ্য়াট ব্যবহারের কথা চিন্তা করা হয় । এরপর 1979 সালে হায়দরাবাদ ইলেকট্রনিক কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (ইসিআইএল) ইভিএমের প্রথম প্রোটোটাইপ তৈরি করে । দেশে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে 19 মে 1982 সালে কেরালার পারুর বিধানসভা আসনের 50টি বুথে ইভিএমেক মাধ্যমে ভোট পরিচালনা করা হয় ।

এরপর 1998-এর বিধানসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও দিল্লিতে ইভিএম ব্যবহার করা হয় । এরপর ধাপে ধাপে নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইভিএমের ব্যবহার চালু করা হয় । 2004 সালের দেশের 543টি লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনের ক্ষেত্রেই ইভিএম ব্যবহার করা হয় । এরপর ধাপে ধাপে আরও উন্নত থেকে উন্নততর করা হয়েছে ইভিএম ।

ইভিএম কিভাবে কাজ করে: ইভিএমের দু’টি অংশ থাকে - কন্ট্রোল ইউনিট (সিইউ) এবং ব্যালট ইউনিট (বিইউ)। একদিকে থাকে সিইউ আর একদিকে থাকে বিইউ৷ এর মাঝখানে থাকে ভিভিপ্যাট । কন্ট্রোল ইউনিটটি থাকে প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে । যখন একজন ভোটার তাঁর ভোট দেন অর্থাৎ ব্যালট ইউনিটে পছন্দের প্রার্থীর পাশে বোতামটি টেপেন, তখন সেখানে একটি লাল আলো জ্বলে ওঠে ।

এরপর পাশে রাখা ভিভিপ্যাটে সাত সেকেন্ড সময় নিয়ে যে প্রার্থীকে ভোট দেওয়া হয়েছে, তাঁর নাম ও চিহ্ন-সহ একটি কাগজ উঠে আসে । সেখানে যিনি ভোট দিয়েছেন, তিনি দেখে নিতে পারবেন যে তাঁর ভোট সঠিক স্থানে পড়েছে কি না । এরপর সেই কাগজটি একটি স্বয়ংক্রিয় কাটারের মাধ্যমে নিজের থেকেই কেটে নিচে রাখা একটি ড্রপ বক্সের মধ্যে পড়ে যায় । এই পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হলে প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে থাকা কন্ট্রোল ইউনিটে একটি বিপ শব্দ হয়ে । এর থেকে বোঝা যায় যে ভোটিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ।

যখন ভোট থাকে না, তখন কী হয়: যখন ইভিএম ব্যবহার হয় না বা যখন নির্বাচন থাকে না, তখন ইভিএম ও ভিভিপ্যাট ওয়্য়ার হাউজে জমা থাকে । নির্বাচন এলে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হওয়ার পর জাতীয় ও রাজ্যের সবকটি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বের করা হয় ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট । ঠিক একই ভাবে স্ট্রং রুমের থেকেও বের করা হয় ইভিএম। পুরো প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করা হয় ।

ফার্স্ট লেভেল চেকিং: নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড এবং ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড ইঞ্জিনিয়র ও জেলা নির্বাচন আধিকারিকের সামনে প্রথমবার ইভিএমগুলির পরীক্ষা করা হয় ৷ এটাকেই ফাস্ট লেভেল চেকিং বলা হয় । ফার্স্ট লেভেল চেকিং হওয়ার দু’দিন আগে জাতীয় ও রাজ্যের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি কিংবা প্রার্থীদের চিঠি দিয়ে ডিইও অফিসে এসে ফার্স্ট লেভেল চেকিংয়ের সময় উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় ।

ফার্স্ট লেভেল চেকিং-এর পরে যে ইভিএমগুলি সক্রিয় থাকে, তার মধ্যে 10 শতাংশ সচেতনতামূলক অভিযান ও প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয় । এই প্রশিক্ষণের সময় প্রতিটি জাতীয় ও রাজ্যের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকেন ।

এরপর আসে ব়্যান্ডামাইজেশনের পালা । অর্থাৎ কোনও নির্দিষ্ট কেন্দ্রে বা পোলিং স্টেশনে ইভিএম পাঠানোর আগে এই প্রক্রিয়াটি করা হয় । একজন জেলা নির্বাচন আধিকারিকের আওতায় যতগুলি ইভিএম থাকে, সবকটির সিরিয়াল নম্বর লিখে রাখা হয় । এরপর একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্র বা পোলিং স্টেশনের জন্য কম্পিউটারে যে যে সিরিয়াল নম্বরের ইভিএম দেখাবে, সেই পোলিং স্টেশনে সেই সিরিয়াল নম্বর দেওয়া ইভিএম পাঠানো হবে । স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ফার্স্ট লেভেল ব়্যান্ডামাইজেশন হয় । এরপর প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেলে দ্বিতীয়স্তরের ব়্যান্ডামাইজেশন করা হয় ।

এরপর আসে কমিশনিং-এর পালা অর্থাৎ ছেপে আসা ব্যালট পেপার মেশিনের মধ্যে ঢুকিয়ে মেশিনটিকে আটকানোর পদ্ধতিকেই কমিশনিং বলা হয় । প্রার্থীদের সামনে এই প্রক্রিয়াটি করা হয় । এই প্রক্রিয়াটি তিন থেকে পাঁচ দিন ধরে চলে ৷ এরপর ইভিএম ও ভিভিপ্যাট ডিস্ট্রিবিউশন অ্যান্ড রিসিভিং সেন্টার পাঠাবার পালা । এখানেও প্রার্থীদের উপস্থিতিতেই ইভিএম ও ভিভিপ্যাট পোলিং স্টেশনে পাঠানো হয় ।

এরপর ভোটের দিন ভোট শুরু হওয়ার আগে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের স্বীকৃত পোলিং এজেন্টের সামনে মকপোল করা হয় । 100টি মেশিনকে নির্বাচনের জন্য একেবারে প্রস্তুত করে পাঠানো হয় এবং আরও 20টি মেশিন সেক্টরে জমা থাকে, যদি একশটি মেশিনের মধ্যে একটি মেশিন বিকল হয়ে যায়, সেই ক্ষেত্রে 20টির থেকে আবার একটি মেশিন সংশ্লিষ্ট বুথে পাঠানো হয় । যদি কোনও মেশিন ঠিকঠাক কাজ না করে, সেই ক্ষেত্রে ইসিআইএল-এর ইঞ্জিনিয়ার আগে সেটিকে পরীক্ষা করে দেখেন । বিবেচনা করার পরেই সেই ইভিএমটি-কে বিকল সার্টিফিকেট দেওয়া হয় ।

ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় কিছু সংখ্যক ইভিএম খারাপ বলে শোরগোল বাঁধে । তবে সেই অভিযোগকে নস্যাৎ করেছে নির্বাচন কমিশন । কারণ, প্রতি পাঁচ বছর অন্তর মেশিনগুলির প্রয়োজন পরে । মেশিনগুলিকে ওয়ার হাউজ থেকে বের করার পর থেকে ধাপে ধাপ তার পরীক্ষা এবং মক পোলিং হয় । তাই কোনও ধাপে যদি কিছু সংখক ইভিএম খারাপ বেরোয়, সেই ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে সেগুলির পরিবর্তে অন্য ইভিএম দিয়ে দেওয়া হয় ।

এমনকি নির্বাচন চলাকালীনও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে ৷ তবে সেই ক্ষেত্রে আদৌ ইভিএম মেশান খারাপ হয়েছে, নাকি অন্য কোনও অংশের বা তারের সমস্যার জন্য ইভিএম ঠিকঠাক কাজ করছে না, সেটা খতিয়ে দেখে তারপরেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয় ।

আরও পড়ুন:

  1. শতায়ু ভোটারদের দিকে বিশেষ নজর নির্বাচন কমিশনের
  2. দূরদর্শন-রেডিয়োতে নির্বাচনী প্রচারে রাজনৈতিক দলগুলির জন্য সময় বরাদ্দ কমিশনের
  3. ভুল তথ্য ছড়ানো রুখতে 'মিথ বনাম রিয়ালিটি রেজিস্টার' চালু নির্বাচন কমিশনের

কলকাতা, 9 এপ্রিল: আধুরি হাসরতো কা ইলজাম হরবার হম পর লাগানা ঠিক নেহি / ওয়াফা খুদসে নেহি হোতি,
খতা ইভিএম কি কহেতে হো / ওর বাদ মে জব পরিণাম আতা হে উসপে কায়েম ভি নেহি রহতে ।

এবারের লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করার সময় সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ইভিএম-এর গুণাগুণ ব্যাখ্যা করার সময় নিজের লেখা ইভিএম সম্বন্ধে এই শায়েরিটি শোনান । কিছুটা মজার ছলে হলেও তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে নির্বাচনে ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটের গুরুত্ব অনস্বীকার্য । এই দু’টি জিনিস না থাকলে ভোট দেওয়ারই কোনও কার্যকারিতা থাকে না । তাই ইভিএমকে সবরকম ভাবে সুরক্ষিত ও নির্ভুল রাখতে বদ্ধপরিকর ভারতের নির্বাচন কমিশন ।

নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে 1977 সালে প্রথমবার নির্বাচনে ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইভিএম বা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন এবং ভিভিপ্য়াট ব্যবহারের কথা চিন্তা করা হয় । এরপর 1979 সালে হায়দরাবাদ ইলেকট্রনিক কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (ইসিআইএল) ইভিএমের প্রথম প্রোটোটাইপ তৈরি করে । দেশে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে 19 মে 1982 সালে কেরালার পারুর বিধানসভা আসনের 50টি বুথে ইভিএমেক মাধ্যমে ভোট পরিচালনা করা হয় ।

এরপর 1998-এর বিধানসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও দিল্লিতে ইভিএম ব্যবহার করা হয় । এরপর ধাপে ধাপে নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইভিএমের ব্যবহার চালু করা হয় । 2004 সালের দেশের 543টি লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনের ক্ষেত্রেই ইভিএম ব্যবহার করা হয় । এরপর ধাপে ধাপে আরও উন্নত থেকে উন্নততর করা হয়েছে ইভিএম ।

ইভিএম কিভাবে কাজ করে: ইভিএমের দু’টি অংশ থাকে - কন্ট্রোল ইউনিট (সিইউ) এবং ব্যালট ইউনিট (বিইউ)। একদিকে থাকে সিইউ আর একদিকে থাকে বিইউ৷ এর মাঝখানে থাকে ভিভিপ্যাট । কন্ট্রোল ইউনিটটি থাকে প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে । যখন একজন ভোটার তাঁর ভোট দেন অর্থাৎ ব্যালট ইউনিটে পছন্দের প্রার্থীর পাশে বোতামটি টেপেন, তখন সেখানে একটি লাল আলো জ্বলে ওঠে ।

এরপর পাশে রাখা ভিভিপ্যাটে সাত সেকেন্ড সময় নিয়ে যে প্রার্থীকে ভোট দেওয়া হয়েছে, তাঁর নাম ও চিহ্ন-সহ একটি কাগজ উঠে আসে । সেখানে যিনি ভোট দিয়েছেন, তিনি দেখে নিতে পারবেন যে তাঁর ভোট সঠিক স্থানে পড়েছে কি না । এরপর সেই কাগজটি একটি স্বয়ংক্রিয় কাটারের মাধ্যমে নিজের থেকেই কেটে নিচে রাখা একটি ড্রপ বক্সের মধ্যে পড়ে যায় । এই পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হলে প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে থাকা কন্ট্রোল ইউনিটে একটি বিপ শব্দ হয়ে । এর থেকে বোঝা যায় যে ভোটিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ।

যখন ভোট থাকে না, তখন কী হয়: যখন ইভিএম ব্যবহার হয় না বা যখন নির্বাচন থাকে না, তখন ইভিএম ও ভিভিপ্যাট ওয়্য়ার হাউজে জমা থাকে । নির্বাচন এলে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হওয়ার পর জাতীয় ও রাজ্যের সবকটি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বের করা হয় ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট । ঠিক একই ভাবে স্ট্রং রুমের থেকেও বের করা হয় ইভিএম। পুরো প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করা হয় ।

ফার্স্ট লেভেল চেকিং: নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড এবং ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড ইঞ্জিনিয়র ও জেলা নির্বাচন আধিকারিকের সামনে প্রথমবার ইভিএমগুলির পরীক্ষা করা হয় ৷ এটাকেই ফাস্ট লেভেল চেকিং বলা হয় । ফার্স্ট লেভেল চেকিং হওয়ার দু’দিন আগে জাতীয় ও রাজ্যের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি কিংবা প্রার্থীদের চিঠি দিয়ে ডিইও অফিসে এসে ফার্স্ট লেভেল চেকিংয়ের সময় উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় ।

ফার্স্ট লেভেল চেকিং-এর পরে যে ইভিএমগুলি সক্রিয় থাকে, তার মধ্যে 10 শতাংশ সচেতনতামূলক অভিযান ও প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয় । এই প্রশিক্ষণের সময় প্রতিটি জাতীয় ও রাজ্যের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকেন ।

এরপর আসে ব়্যান্ডামাইজেশনের পালা । অর্থাৎ কোনও নির্দিষ্ট কেন্দ্রে বা পোলিং স্টেশনে ইভিএম পাঠানোর আগে এই প্রক্রিয়াটি করা হয় । একজন জেলা নির্বাচন আধিকারিকের আওতায় যতগুলি ইভিএম থাকে, সবকটির সিরিয়াল নম্বর লিখে রাখা হয় । এরপর একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্র বা পোলিং স্টেশনের জন্য কম্পিউটারে যে যে সিরিয়াল নম্বরের ইভিএম দেখাবে, সেই পোলিং স্টেশনে সেই সিরিয়াল নম্বর দেওয়া ইভিএম পাঠানো হবে । স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ফার্স্ট লেভেল ব়্যান্ডামাইজেশন হয় । এরপর প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেলে দ্বিতীয়স্তরের ব়্যান্ডামাইজেশন করা হয় ।

এরপর আসে কমিশনিং-এর পালা অর্থাৎ ছেপে আসা ব্যালট পেপার মেশিনের মধ্যে ঢুকিয়ে মেশিনটিকে আটকানোর পদ্ধতিকেই কমিশনিং বলা হয় । প্রার্থীদের সামনে এই প্রক্রিয়াটি করা হয় । এই প্রক্রিয়াটি তিন থেকে পাঁচ দিন ধরে চলে ৷ এরপর ইভিএম ও ভিভিপ্যাট ডিস্ট্রিবিউশন অ্যান্ড রিসিভিং সেন্টার পাঠাবার পালা । এখানেও প্রার্থীদের উপস্থিতিতেই ইভিএম ও ভিভিপ্যাট পোলিং স্টেশনে পাঠানো হয় ।

এরপর ভোটের দিন ভোট শুরু হওয়ার আগে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের স্বীকৃত পোলিং এজেন্টের সামনে মকপোল করা হয় । 100টি মেশিনকে নির্বাচনের জন্য একেবারে প্রস্তুত করে পাঠানো হয় এবং আরও 20টি মেশিন সেক্টরে জমা থাকে, যদি একশটি মেশিনের মধ্যে একটি মেশিন বিকল হয়ে যায়, সেই ক্ষেত্রে 20টির থেকে আবার একটি মেশিন সংশ্লিষ্ট বুথে পাঠানো হয় । যদি কোনও মেশিন ঠিকঠাক কাজ না করে, সেই ক্ষেত্রে ইসিআইএল-এর ইঞ্জিনিয়ার আগে সেটিকে পরীক্ষা করে দেখেন । বিবেচনা করার পরেই সেই ইভিএমটি-কে বিকল সার্টিফিকেট দেওয়া হয় ।

ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় কিছু সংখ্যক ইভিএম খারাপ বলে শোরগোল বাঁধে । তবে সেই অভিযোগকে নস্যাৎ করেছে নির্বাচন কমিশন । কারণ, প্রতি পাঁচ বছর অন্তর মেশিনগুলির প্রয়োজন পরে । মেশিনগুলিকে ওয়ার হাউজ থেকে বের করার পর থেকে ধাপে ধাপ তার পরীক্ষা এবং মক পোলিং হয় । তাই কোনও ধাপে যদি কিছু সংখক ইভিএম খারাপ বেরোয়, সেই ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে সেগুলির পরিবর্তে অন্য ইভিএম দিয়ে দেওয়া হয় ।

এমনকি নির্বাচন চলাকালীনও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে ৷ তবে সেই ক্ষেত্রে আদৌ ইভিএম মেশান খারাপ হয়েছে, নাকি অন্য কোনও অংশের বা তারের সমস্যার জন্য ইভিএম ঠিকঠাক কাজ করছে না, সেটা খতিয়ে দেখে তারপরেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয় ।

আরও পড়ুন:

  1. শতায়ু ভোটারদের দিকে বিশেষ নজর নির্বাচন কমিশনের
  2. দূরদর্শন-রেডিয়োতে নির্বাচনী প্রচারে রাজনৈতিক দলগুলির জন্য সময় বরাদ্দ কমিশনের
  3. ভুল তথ্য ছড়ানো রুখতে 'মিথ বনাম রিয়ালিটি রেজিস্টার' চালু নির্বাচন কমিশনের
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.