কলকাতা, 28 এপ্রিল: কলকাতায় সবুজ ফিকে হয়েছে অনেক আগেই। তবু তিলোত্তমাকে হরিৎ রাখতে প্রাথমিক উদ্যোগ হিসেবে আরবান ফরেস্ট্রি বানানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। জনবহুল শহরে জায়গার অভাবে সেই উদ্যোগের বাস্তবায়ন হয়ে ওঠেনি। সুতরাং, শহরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি কিংবা বায়ুদূষণ তো কমেইনি, বরং বেড়েছে। এমতাবস্থায় শহরের দক্ষিণ অংশের ফুসফুস হিসেবে পরিচিত রবীন্দ্র সরোবরের কয়েক বিঘা ফাঁকা জমি এবার বিনোদন ক্লাবকে ভাড়ায় দিচ্ছে ক্যালকাটা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি বা সিএমডিএ। যা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কর্মী থেকে প্রাতঃভ্রমণকারীরা। তাদের দাবি ওই জমিতে বিনোদন ক্লাব নয় হোক আরবান ফরেস্ট্রি।
সরোবরের ফাঁকা জমিতে আরবান ফরেস্ট্রি হলে বাঁচবে কলকাতার একাংশ, উপকৃত হবেন নাগরিকরা। এই প্রসঙ্গে পরিবেশ বিজ্ঞানী সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ কিংবা লেকের প্রাতঃভ্রমণকারী সুমিত্রা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, রবীন্দ্র সরোবর জাতীয় লেক। কারও ব্যাক্তিগত সম্পত্তি নয় ৷ তাঁদের দাবি, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে সম্প্রতি প্রায় পাঁচ বিঘা জমি হস্তান্তর করা হয়েছে ক্যালকাটা এন্টারটেইনমেন্ট ক্লাব ফাউন্ডেশনকে। অথচ সেই জমিতে নগর বনায়ন পরিকল্পনা করা যেত। আরবান ফরেস্ট্রি হলে লেকের মাত্রাছাড়া বায়ুদূষণ কমিয়ে অক্সিজেন মাত্রা ঠিক রাখা যেত। শব্দদূষণও নিয়ন্ত্রণে থাকত। এছাড়াও জীব বৈচিত্র্য সুরক্ষিত থাকত বলে দাবি তাঁদের। কিন্তু তা হল না।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, "বিনোদন ক্লাবের সেলিব্রেশন ক্রিকেটের নামে সরোবরে হইচই বেশি হবে, লোকের ভিড় বাড়বে, গাড়ির পার্কিং বাড়বে। তারকাদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পরে সীমানা লাগোয়া পাঁচিল দেওয়া হবে। অবাক হব না যদি ভেতরে পানশালার আয়োজন হয়। কারণ এই সরোবরের পাশেই বসবাসকারীরা দেখেছি ক্রীড়া উন্নয়নের নামে কীভাবে সরোবর বিনোদন ক্লাবে রূপান্তরিত হয়। পানশালা অনুমতি পায় এবং খেলার চেয়ে বিনোদনটাই বেশি হয়।"
উল্লেখ্য, আরবান ফরেস্ট্রির জন্য প্রয়োজন ইকোসেনসেটিভ জোন! যেখানে রিচ বায়োডাইভার্সিটি এবং সবুজ বড় বিষয়। অথচ রবীন্দ্র সরোবরের মতো জাতীয় সরোবরে বায়ু, শব্দ, আলো এবং জল দূষণ এখন মাত্রাছাড়া। নির্ধারিত সীমার থেকে যা অনেক উপরে। পরিবেশ কর্মীদের আশঙ্কা এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের জেরে আর কত দূষণের মাত্রা বাড়বে, সেটাই এখন ভাবাচ্ছে পরিবেশপ্রেমীদের।
আরও পড়ুন: