কলকাতা, 30 মে: লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে বারবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুণাল ঘোষের সম্পর্ক সংবাদের শিরোনাম উঠে এসেছে। বারংবার বিতর্কে জায়গা করে নেওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদও হারাতে হয়েছে কুণাল ঘোষকে। এই আবহেই বুধবার পদযাত্রা শেষে প্রকাশ্যে কুণাল ঘোষকে ডেকে আলাদা করে কথা বললেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আর সেখানে হাজির ছিলেন উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও ৷ সুদীপের সামনেই কুণালকে ডেকে খোদ দলনেত্রীর কথা বলা যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, তাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ ৷
শনিবার শেষ দফায় ভোট রয়েছে কলকাতার দুই কেন্দ্রে ৷ তার আগে বুধবার শ্যামবাজার থেকে বিবেকানন্দের বাড়ি পর্যন্ত মিছিল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেই মিছিল শেষেই হঠাৎ করে তিনি ডেকে নেন কুণাল ঘোষকে। যখন এই ঘটনা ঘটছে সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কুণাল রাস্তার উলটো দিকে দাঁড়িয়েছিলেন। দলনেত্রী তাঁর খোঁজ করছে জানতে পেরে তড়িঘড়ি সেখানে হাজির হন কুণাল। এরপরই দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুণাল ঘোষকে কিছু কথা বলছেন। দলনেত্রী কী বলেছেন তা নিয়ে অবশ্য সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বা কুণাল ঘোষের কেউই মুখ খোলেননি। তবে তৃণমূল সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, উত্তর কলকাতার লড়াইয়ে দু'জনকে মিলে কীভাবে আসন জেতা যায় তার পরিকল্পনা করতে বলেছেন নেত্রী ৷ আর নির্বাচনের ঠিক আগের মুহূর্তে দলনেত্রী স্বয়ং যে পদক্ষেপ নিলেন তা যদি বাস্তবিক হয়, তবে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে তৃণমূল।
লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন কুণাল ঘোষ ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে একটা শীতলতা যে তৈরি হয়েছিল এমনটা মনে করেন রাজনৈতিক মহলের অনেকেই। নির্বাচনের আগে দলনেত্রীর উভয়পক্ষকে পাশে নিয়ে সেই দূরত্ব কাটানোর চেষ্টা করেছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
দলের তরফ থেকে যখন কুণালের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ কেড়ে নেওয়া হলো তখন তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন, দরকার নেই তাঁর পদ। তাঁর নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূলের সৈনিক। এই অবস্থায় তিনি দলের হয়েই কাজ করবেন বলেও জানিয়েছিলেন কুণাল। এরপর পদ ছাড়াই দলের হয়ে যথারীতি কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এদিন দলনেত্রী ডেকে তাঁকে এই বার্তা দেওয়া অবশ্যই এক্ষেত্রে একটা বড় প্রাপ্তি বলেই মনে করছে তৃণমূল। এখন দেখার দলনেত্রীর সুদীপ এবং কুণালের সঙ্গে এই সামান্য সময়ের বৈঠক ভোট বাক্সে তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনও বাড়তি সুবিধা করে দেয় কি না !